পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৪৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ෆෆ · কলিকাতা সেকালের ও একালের । স্নাথ, বিদ্রোহভাবযুক্ত গ্রামসমূহে ফৌজ নিযুক্ত করা ও পলাতক প্রজাদের বাকী-খাজনা, অবশিষ্ট স্থায়ী প্রজাগণের নিকট আদায় করা প্রভৃতি প্রথা সেকালে প্রচলিত ছিল । প্রজাগণ জমা ব্যতীত অন্যান্ত উপায়েও জমীদারের নিকট জমী লাভ করিত। হিন্দু জমীদারের ব্রাহ্মণকে ব্রহ্মোত্তর দিতেন, দেবতা-বিগ্ৰহ প্রতিষ্ঠা করিয়া দেবোত্তর করিয়া দিতেন। মুসলমানগণকে ৪ তাহারা জমী দান করিতেন। আবার মুসলমানেরাও হিন্দুদের জমী দান করিতেন । এই সমস্ত কারণে, ৰঙ্গদেশে দেবোত্তর, এম্বোত্তর, পীরোত্তর প্রভৃতি জমীর সংখ্যা বেশী হইয়া উঠে । মোগলরাজত্বে সোণার ৰঙ্গদেশ “জিন্নেত-উল-বেলাৎ” বা স্বর্গভূমি বলিয়া উল্লিখিত হইত। প্রসিদ্ধ ফরাসি-পর্যটক বাৰ্ণিয়ার সাহেব সাহজাহান ও ঔরঙ্গজেবের আমলে এদেশে উপস্থিত ছিলেন। তিনি র্তাহার ভ্রমণ বৃত্তান্তের এক স্থানে লিথিয়াছেন—"মিশর দেশই চিরকাল অতি উর্বর ও শস্যশালিনী ৰদিয়া প্রসিদ্ধ—কিন্তু আমি দুইবার বাঙ্গলায় গিয়া যাহা দেখিয়া আসিয়াছি, তাহাতে ৰঙ্গদেশই উর্বরতা সম্বন্ধে শ্রেষ্ঠ দেশ। এখানে তণ্ডুল এত উৎপন্ন হয়, যে নিকটবর্তী প্রদেশের কথা ছাীিয়া দিয়াও অনেক দূরবর্তী স্থান সমুহের অধিবাসিগণ বাঙ্গালার অন্নে প্রতিপালিত হয়। সমস্ত ভারতবর্ষের নানা স্থানে এমন কি.আরব, মিসোপটেমিয়া প্রভৃতি দেশেও বাঙ্গালার শস্য প্রেরিত হয়। নানাবিধ সুমিষ্ট ফল ও মিষ্টান্নের জন্ত, বাঙ্গালা দেশ চিরপ্রসিদ্ধ। এখানকার লোকে অন্নভোজী ৰলিয়া, গমের চাষ খুব কম হয় । চাউল, স্কৃত ও নানা প্রকার তরকারী এখানে অতি অল্প মূল্যে বিক্রীত হইয়া থাকে। টাকায় কুড়িটার উপর উৎকৃষ্ট পক্ষী"পাওয়া যায়। ছাগ ও মেষ এদেশে প্রচুর। শূকর এতই প্রচুর, যে পর্তুগীজেরা এই মাংস খাইয়া প্রাণধারণ করে। এখানে নানা শ্রেণীর মৎস্য অপৰ্য্যাপ্ত পাওয়া যায়। এক কথায় লোকের জীবনধারণোপযোগী দ্রব্যে বঙ্গদেশ-পরিপূর্ণ। এই জন্তই পর্তুগীজের এদেশে স্থায়ীভাবে ৰাস করিয়াছে।" বাৰ্ণিয়ারের এই বর্ণনার পর, আমরা ঔরঙ্গজেবের অমলেও বঙ্গের উন্নত অৰস্থার কথা জানিতে পারি। সায়েন্স থার “ধানের-গোলা” প্রবাদ কথা লহে । তাহার আমলে টাকায় আট মণ-চাউল রিকাইত। সায়েস্ত থা চাকায় এই গোল নিৰ্ম্মাণ করিয়া তাঙ্গর তোরণের শিরোদেশে লিথিয়া দেন—“যে শাসনকৰ্ত্তার শাসনকালে এইরূপ সুলভ মূল্যে চাউল পাওয়া না