পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৫৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(tՀ8 কলিকাতা সেকালের ও একালের । হইয়াছে। অনেক ঠাকুরমা-দিদিম, ছেলেদের ঘুম পাড়াইবার সময় এই ছড়াট সুর করিয়া আবৃত্তি করিয়া থাকেন। ছেলে ঘুমুলো, পাড়াজুড়,লো, বগী এল দেশে চড়া পার্থীতে ধান খেয়েছে, খাজনা দিব কিসে ? বর্গীয়-হাঙ্গামাটা যে কি, তাহার একটু সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া প্রয়োজন। বর্গীদের আক্রমণে, এই শান্তিভরা বঙ্গদেশে, বঙ্গের মুখময় পল্লীসমূহে, কি ভীষণ অনর্থ ও আতঙ্ক উপস্থিত হইয়াছিল, তাহারও একটু পরিচয় দেওয়া আবশ্যক । গিরিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে নবাব আলীবর্দী খাঁ সরফরাজ খাকে পরাজিত করিয়া, বাঙ্গলার সুবেদারী লাভ করিলেন বটে, কিন্তু তাহার অদৃষ্টে শান্তিলাভ ঘটিল না। যে রাজ্য তিনি অতি সহজে লাভ করিলেন, তাহা রক্ষা করিতে র্তাহাকে যথেষ্ট শোণিত-ক্ষয়, সেনা-নাশ ও দশ বৎসর-ব্যাপী যুদ্ধে ব্যাপৃত থাকিতে হইয়াছিল। ১৭৪২ খৃঃ অবো চেীথ আদায়ের জন্য, বগীগণ বঙ্গদেশে প্রবেশ করে। এই মহারাষ্ট্রীয়-বগীদের হস্তে, বঙ্গবাসীদিগের যথেষ্ট নির্যাতন ঘটিয়াছিল । বগীর, সুদীর্ঘকালু ধরিয়া নগর গ্রাম জালাইয়া, শস্তক্ষেত্র বিমৰ্দ্ধিত করিয়া, বাঙ্গালী প্রজার যথাসৰ্ব্বস্ব লুণ্ঠন করিয়া, তাহাদিগকে নানাপ্রকারে যন্ত্রণ দিয়া, বঙ্গদেশের একাংশ জনশূন্ত করিয়া তুলিল। আলীবর্দি খ। বঙ্গীয় প্রঞ্জাবৰ্গকে, এই লুণ্ঠনকারী দমু্যদের হস্ত হইতে রক্ষণ করিবার জন্ত জীবনব্যাপী চেষ্টা করিয়াও, বর্গীর উৎপাত নিবারণ করিতে পারেন নাই। বহুল নিষ্ফল চেষ্টার পর ১৭৫১ খৃঃ অন্ধে নবাব আলিবর্দী, বরলক্ষ টাকা ও উড়িষ্যা প্রদেশ ছাড়িয়া দিয়া, বঙ্গাদি দেশত্রয়কে বর্গীর অত্যাচার হইতে বিমুক্ত করেন। ১৭৫১ খ্ৰীষ্টাব্দের পর সমস্ত উপদ্রবের শান্তি হইলে—বঙ্গবাসীগণ আবার শাস্তির মুখ দেথিতে পার । স্কুলপাঠ্য পুস্তক হইতে আরম্ভ করিয়া, বাঙ্গলায় বড় বড় ইতিহাসে এই “বর্গীর-হাঙ্গামা” ব্যাপারের নানাপ্রকার বিবরণ প্রদত্ত হইয়াছে। সুতরাং সে সব কথা না বলিয়া, কলিকাতার সহিত এই বর্গীদের যতটুকু সম্বন্ধ, আমরা তাহাই বলিতেছি।. আজকালকার প্রচলিত ইতিহাস ব্যতীত, অন্ত একটী ক্ষুদ্রগাথায় এবং এক অজ্ঞাতনামা বাঙ্গালী কবির কাব্যের মধ্য দিয়া, • এই ব্যাপারের অনেক নুতন তথ্য অবগত হওয়া যায়। এই প্রাচীন লুপ্তপ্রায় পুথির নাম “মহারাষ্ট্র-পুরাণ।” ইহা শকাব্দ। ১৬৭৪ ও সন ১১৫৮ সালে