পাতা:কাব্যের কথা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S DS কাব্যের কথা বাঙ্গালী সত্য মাতা হইয়াছে, সে এমন করিয়া ভাবেও না, মনেও করে না । তারপর কবি ঐ কবিতার শেষে বলিতেছেন,-- জানিনে কোন মায়ায় ফেঁদে বিশ্বের ধান রাখব বেঁধে আমার এ ক্ষীণ বাহু দুটির আড়ালে ! এই শেষ কয় ছত্রে একটা সত্য সত্যই মায়ের প্রাণের ভাবের কথা বটে, তাহা অস্বীকার করি না, বিশ্বের ধন বলিয়া সন্তানকে মনে করা খুব অসম্ভবও নয়, তবে কোন স্বাভাবিক মাতাই নিজের ছেলেকে “বিশ্বের ধন’ মনে করেন না । জগতের সেরা মাণিক মনে করিতে পারে, কিম্বা সন্তানের মুখে ভগবানের সৃষ্টিসম্পর্কের গুঢ় বাৎসল্য রস প্ৰাণে জানিতে পারে, কিন্তু তাহার প্রকাশ এরূপ নহে। ইহার আগাগোড়াই কবিতা নয়, রস নয়, বুদ্ধির দ্বারা, ছন্দের দ্বারা জোর করিয়া কবিতার প্ৰাণ সৃষ্টি করিয়া তোলা । ইহা বাঙ্গালার গান, রাগিণী, কবিতা নয় ; তাই আবার বলিতে হয় যে, বুদ্ধিমান অবিদ্যমান বস্তুতে বিদ্যমান বস্তুর উৎপত্তি নিরূপণ করিয়াছেন । এই ধরায় যে স্বর্গের কল্পনা ও আভাস পাই, পরিপূর্ণ আনন্দের উচ্ছল ধারায় নিজেরা আর্দ্র হইয়া যাই, এমন করিয়া সেই গলাইয়া মজাইতে পারে শুধু প্রেম। প্রেমই সেই সুরের ধ্যানে আমাদের এই সুখ-দুঃখ-সিঞ্চিত জীবনকে সত্য জীবন করিয়া তুলে। পৃথিবীতে আমরা সকলের চেয়ে সত্য বস্তু দেখি প্ৰেম, এই মানুষের ৰে প্ৰেম, এই মানুষের যে বাৎসল্য, এই মানুষের যে মাতৃত্ব, তাহার সঙ্গে জগন্মাতার ষে ভাব, সে সত্য অনুভূতি, রূপে, ভাষায়, সুরে রামপ্রসাদের গানে ফুটিয়াছে, তাহা এই আধুনিক শিশু কবিতার জন্মকথায় নাই, থাকিতেই পারে না। কেন না, মাতার প্রাণের পরিচয় ইহাতে নাই, আছে শুধু জ্ঞানের বোঝা