পাতা:কাব্যের কথা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঙ্গলার গীতিকবিতা (łS হারাইয়া ফেলিল। বাঙ্গলা আপনাকে ভুলিয়া গেল। মুসলমান ধৰ্ম্ম হইতে আপনাকে রক্ষা করিবার জন্য বাঙ্গলা আপনার চারিধারে আচারব্যবহারের একটা গণ্ডী টানিয়া দিল-সেই তাহারি মধ্যে আপনাকে ঢাকিয়া রাখিল । কিন্তু সাহিত্যে ভাবে ও ভাষায় মুসলমানের হাত একেবারে এড়াইতে পারিল না । দেশ তখন নিজের উপর বিশ্বাস হারাইয়াছে। একদিকে শাক্তের পঞ্চ-মকার, আর অন্যদিকে বৈষ্ণবের শুখন মালার ঠাকুঠকি, আর চারিদিকে যত শৈবের দল ধৰ্ম্মের নামে ধৰ্ম্মকে একেবারে বিসর্জন দিতেছিল। একদিকে দেশের পতি মুসলমান, অন্যদিকে সমাজের পতি অসংখ্য ভূত প্ৰেত। এতদিন ধরিয়া যে শক্তি সঞ্চয় করিয়া বাঙ্গলা নিজেকে আদর্শের সমান করিয়া আনিয়াছিল, সে শক্তি কোথায় অন্তহিত হইল। অন্ধকারের ভিতর দিয়াই বাঙ্গলা চলিয়া আসিল । তাহার পর কত নিশি পোহাইয়াছে, কত পাখী গাইয়াছে, অরুণ কিরণে শু্যামল অঞ্চল উড়িয়ছে, কিন্তু যে মিলনের কথা বলিয়াছি, তাহা একেবারে ঢাকা পড়িয়া গেল । মুসলমান বাঙ্গলায় আসিবার পর বাঙ্গলা শ্ৰীহীন হইয়াছিল, একে দেশ দুর্বল, তাহার উপর মানসিংহ বাঙ্গলার রাজা। প্রাণের কবিতা তখন দেশ ছাড়িয়া পলাইয়া, গিয়াছিল । এমনি করিয়া সুখে দুঃখে আলো অন্ধকারের ভিতর দিয়া কৃষ্ণচন্দ্রের যুগ আসিল। রাজার পৃষ্ঠপোষিত সাহিত্য যাহা হইয়া থাকে, তৃহাই হইয়াছিল । ভারতচন্দ্রের উপর বৈষ্ণবের প্রভাব থাকিলেও তঁহার কবিতা মুসলমানী ফাসীর আরব ছবি ও ছায়ায় পরিপূর্ণ। তঁহার চরিত্র অঙ্কনে যথেষ্ট নিপুণতা থাকিলেও এ কথা বলিতেই হইবে যে, চণ্ডিদাস-যুগের বৃন্দা ও বড়ায়ের জায়গায় তিনি আনিলেন, মুসলমানী