পাতা:জীবনী-কোষ - দ্বারকানাথ বসু.pdf/১৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরশুরাম কাৰ্ত্তবীৰ্য্যের হস্তে জমদগ্নির নিধনের সময় পরশুরাম পুষ্কর তীর্থে তপস্যায় রত ছিলেন । রোরুদ্যমান মাতা রেণুকার স্মরণে ইনি উপস্থিত হইয়া পিতৃবিয়োগে সন্তপ্ত হন । মাতাকে সহগমনে কৃতনিশ্চয় জানিয়া, ইনি শোকে একবারে অভিভূত হইয়া শপথ করেন যে একবিংশতিবার পৃথিবী নিঃক্ষত্রিয়া করিবেন । পিতা মাতার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সমাপন করিয়া, ইনি ব্রহ্মার নিকট উপস্থিত হন । র্তাহার আদেশে মহাদেবের সকাশে উপস্থিত হইয়া র্তাহাকে সন্তুষ্ট করেন। তাহার নিকট অস্ত্রশস্ত্রে সুশিক্ষিত হইয়া ইনি প্রত্যাগমন পূর্বক সসৈন্ত কাৰ্ত্তবীৰ্য্যকুে নিহত করেন। অতঃপর পরশুরাম একবিংশতিবার ধরা নিঃক্ষত্ৰিয়া করিতে প্রবৃত্ত হইলেন । ক্ষত্রিয় বীরদিগকে নিহত করিয়া, তাহদের স্ত্রী সকল গর্ভবতী থাকিলে, ইনি সন্তান প্রসব কাল পর্য্যন্ত অপেক্ষা করিতেন। পরে পুং সন্তান ভূমিষ্ঠ হইলে ইনি তাহ নিহত করিতেন । এইরূপে ইনি চন্দ্রসেন নামে নরপতিকে বধ করিয়া তাহার মহিষীর প্রসব কালের জন্ত অপেক্ষা করিতে লাগিলেন । মহিষী ইষ্টার ভয়ে দালভ্য মুনির শরণাপন্ন হইলেন । [ ১৫২ ] পরশুরাম মুনিবর রাজমহিষীকে আশ্রয় দিয়া পরশুরামকে এই বলিয়া নিরস্ত করিলেন যে রাণীগর্ভজাত পুত্রের ক্ষত্রিয়ের সংস্কার করিবেন না । এবং তাহাকে ক্ষত্রিয়ের শিক্ষিতব্য ধনুবিদ্যা শিক্ষা দিবেন না কথিত আছে যে চন্দ্রসেনের সেই পুত্র ত কায়স্থের উৎপত্তি হইয়াছে। পরশুরাম প্রতিজ্ঞা পালন করিয়া কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্ত মহাদেবের নিকট উপস্থিত হন । হরপাৰ্ব্বতী তখন অন্তঃপুরে ছিলেন। বহির্দেশে গণেশ ইহঁাকে সাদরে গ্রহণ করিয়া তথায় অপেক্ষা করিতে বলেন । ইনি তাহাতে সম্মত না হইয়া অন্তঃপুরে প্রবেশ করিতে চেষ্টা পান। ক্রমে দুইজনে বিবাদ উপস্থিত হইলে, পরশুরাম ক্রোধ সম্বরণ করিতে অক্ষম হইয়া গণেশের উপর স্বীয় অমোঘ কুঠার নিক্ষেপ করেন । কুঠারাঘাতে র্তাহার একটী দন্ত ছেদিত হইল । গণেশ মহাত্মতা গুণে ইহার দোষ ক্ষমা করিলেন । সসাগর পৃথিবী জয় করিয়া পরশুরাম যজ্ঞের অনুষ্ঠান করেন। মহা সমারোহ পূৰ্ব্বক সে যজ্ঞ নিম্পন্ন হয় | দক্ষিণস্বরূপ পরশুরাম গুরু কশ্যপকে সমগ্র পৃথিবী প্রদান পূৰ্ব্বক স্বয়ং মহেন্দ্ৰপৰ্ব্বতে তপশ্চরণার্থ গমন করেন ।