পাতা:জীবনের ঝরাপাতা.pdf/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কালকের অধিবেশনে তারা কেউ আর ভলণ্টিয়ারী করতে আসবে না। সেই সময় কেন জানিনে ভূপেন বসু আমায় ডেকে বললেন—“তুমি এদের একটু বুঝিয়ে বল।”

 আমার মাথায় আর কোন বুদ্ধি যুটল না—আমি তাদের ডেকে শুধু বললুম—“দেখ তোমরা সব ভলাণ্টিয়ারেরা কাল আরম্ভের গানটার কোরাসে যোগ দিও। পাণ্ডালের ভিতরে বাইরে যে দিকে যেখানে যে থাক দাঁড়িয়ে বা বসে সবাই এককণ্ঠে সমস্বরে কোরাস গেয়ে উঠবে। আগে সব গানটা শিখে নাও আজ এক্ষুনি আমার কাছে, তাহলে কাল গাইতে পারবে।” রাত ১০টা পর্যন্ত আমি তাদের গানটা গাইয়ে পাকা করিয়ে দিলুম। গানের রসে ভুলে তারা ঠাণ্ডা হয়ে গেল। তুফানের জলে তেল ঢালা হল। তার পরদিন আর কোন গোলমাল হল না। যথাসময়ে পাণ্ডালের প্রত্যেক দিক থেকে একটা মহারব গুঞ্জিয়ে উঠল—

গাও সকল কণ্ঠে সকল ভাষে
নমো হিন্দুস্থান!
হর হর হর—জয় হিন্দুস্থান!
সৎশ্রী অকাল হিন্দুস্থান!
আল্লা হো আকবর—হিন্দুস্থান!
নমো হিন্দুস্থান!

সকলের ভিতর একটা পুলক সঞ্চারণ করলে।

 সেদিনকার অভিজ্ঞতায় আমার মনে একটা কথার উদয় হল,—এই যে বছর বছর যেখানে কংগ্রেস হয় সেখানে সাময়িকভাবে একদল ভলাণ্টিয়ারদের কুচকাওয়াজ করিয়ে গড়ে তোলা হয়—তারপরে তারা ছোড়ভঙ্গ হয়ে যে যেখানে চলে যায়, আর শাসন নিয়মের ধার ধারে না, এ জিনিসগুলো তাদের মজ্জাগত হয় না—এতে অনেকটা অযথা শক্তিক্ষয় করা হয়। এর চেয়ে যদি স্থায়ী ভাবে একটা ‘ভলাণ্টিয়ার কোর’ গড়ে তাদের বারমাস হপ্তায় একদিন করে অন্তত drill ও discipline শিক্ষা দেওয়া হয় অনেক কাজ হয়। এবারকার কংগ্রেস ভলাণ্টিয়ারের কাপ্তেন যে ছিল সে আমাদের বেথুন কলেজের সংস্কৃত পণ্ডিত “চন্দ্রকান্ত মশায়ের দৌহিত্র—পরে মোহিনীবাবুর জামাতা হয়। আমি তাকে ডেকে সেই প্রস্তাব করলুম, সে রাজী হল। কংগ্রেসের অধিবেশন শেষ হলে যখন একদিন সমস্ত ভলাণ্টিয়ারদের নিমন্ত্রণ করে খাওয়ান

১৩৩