পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঝাঁশির রাণী।
৩৩

তাহার মধ্যে একটা গল্প এইঃ-এক দিবস এক সদাগর, ভাল-দেখিতে ও চটুল এইরূপ দুইটী ঘোড়া সঙ্গে করিয়া রাজবাড়ীতে বিক্রয়ের উদ্দেশে আইসে। রাণী সেই দুই অশ্বে আরোহণ করিয়া, তাহাদিগকে চক্রপথে দৌড় করাইতে লাগিলেন এবং এইরূপ পরীক্ষা করিয়া, একের মূল্য হাজার ও দ্বিতীয়টার মূল্য পঞ্চাশ টাকা স্থির করিলেন। ইহা শুনিয়া সকলে অত্যন্ত বিস্মিত হইল। দুই ঘোড়াই দেখিতে সতেজ ও সুন্দর তবে, উভয়ের মধ্যে মূল্যের এত প্রভেদ হইল কেন, কেহই বুঝিতে পারিতেছিল না। তখন, রাণীঠাকুরাণী বুঝাইয়া বলিলেন, এই উভয়ের মধ্যে একটী ঘোড়া সুন্দর ও আর একটা ঘোড়া সদ্গুণবিশিষ্ট ও চটুল হইলেও উহার ছাতি ফাটা, সেই জন্য একেবারে কাজের বাহির।”

 রাণীঠাকুরাণীর দাতৃত্ব ও ঔদার্য্যগুণ অপরিসীম ছিল। তিনি কোন দরিদ্র কিম্বা ভিক্ষুককে কখনই বিমুখ করিতেন না। এক দিবস একজন কাশীনিবাসী বিদ্বান্ ৰাহ্মণ রাজবাটীর নিত্যদানের সময় উপস্থিত হন। রাণীর কোন সভাসদ রাণীর নিকট এই ব্রাহ্মণের কুলশীল ও বিদ্যা সম্বন্ধে স্তুতিবাদ করিয়া বলিলেন, এই ব্রাহ্মণের স্ত্রীবিয়োগ হইয়াছে—পুনর্ব্বার দারপরিগ্রহ করিবার ইহার ইচ্ছা হইয়াছে। কিন্তু ইহা অতি ব্যয়সাধ্য বলিয়া উনি মনে মনে কষ্ট পাইতেছেন। এই কথা শুনিয়া রাণী প্রশ্ন করিলেন, টাকা দিলে কন্যাদান করিতে কেহ প্রস্তুত আছে কি? তাহাতে, ভট জী নম্রতা সহকারে বলিলেন “আমাদিগের স্বশ্রেণীর দেশস্থ ব্রাহ্মণ কাশীতে একজন আছেন। তাহার কন্যার বয়ঃক্রম প্রায় ১২ বৎসর। হইবে—দেখিতেও সুরূপা, রাশি প্রভৃতিরও মিল আছে। কিন্তু এই কন্যার দরুণ তাহাকে চারি শত টাকা দিতে হইবে—আমি দরিদ্র ব্রাহ্মণ অত টাকা কোথা হইতে দিব? এতদ্ব্যতীত, বিবাহব্যয়ের দরুণ একশত টাকা তত লাগিবেই” এই কথা শুনিবামাত্র রাণীঠাকুরাণী পাঁচ শত টাকা আনিয়া তাহার বস্ত্রাঞ্চলে ঢালিয়া দিলেন ও বলিলেন, “যখন বিবাহ