পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঝাঁশির রাণী।
8৩

ইংরাজের সৈন্যনাশ হইতে লাগিল এবং তাহাদিগের তোপও কিয়ৎ- কালের জন্য বন্ধ হইল। কিছু পরে, ইংরাজের আবার জয় হইতে লাগিল এবং বিরুদ্ধ পক্ষের তোপ বন্ধ হইয়া গেল; বিশেষতঃ সূর্যাস্তকালে কেল্লার দক্ষিণদিকের তোপ-চালক গোলন্দাজেরা আর তিষ্ঠিয়া থাকিতে পারিল না। ইংরাজের গোলাবর্ষণে, দক্ষিণদিকের তোপ-মঞ্চ ভাঙ্গিয়া যাওয়ায়, রাত্রিকালে সুদক্ষ রাজমিস্ত্রি মজুর আনানো হইল। তাহার অতীব কৌশল-সহকারে, কম্বলে গাত্র আচ্ছাদন করিয়া ধীরে ধীরে বুরুজের উপর উঠিল, এবং নিম্নভূমি হইতে, লোকের স্কন্ধে লোক উঠাইয়া, ইষ্টক প্রভৃতি উপকরণ, বুরুজের উপর আনিয়া তুলিল, এবং শুইয়া- শুইয়া তোপ-মঞ্চ বাঁধিতে লাগিল।

 এইরূপে ইংরাজের অলক্ষিতে, তোপ-মঞ্চ প্রস্তুত করিয়া ঝাশির সৈন্য আবার তোপ চালাইতে আরম্ভ করিল। সেই সময় ইংরাজদিগের একটু শৈথিল্য হওয়ায়, তাহাদের অনেক লোক মারা পড়িল এবং দুইটি তোপ বন্ধ হইয়া গেল। অষ্টম দিবসের প্রভাতে, ইংরাজ-ফৌজ “শঙ্কর” কেল্লার উপর আবার গোলাবর্ষণ করিতে লাগিল। ইংরাজদিগের নিকট দুর্গ অবরোধের উপযোগী অতি মূল্যবান দুরবীণ ছিল। ••• সেই দুরবীণের সাহায্যে কেল্লার অভ্যন্তরস্থ জলের চৌবাচ্চার উপর লক্ষ্য করিয়া তাহারা প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ করিতে লাগিল। জলের ভারীরা জল তুলিতে তাহদের মধ্যে ৫৭ জন নিহত হওয়ায়, বাঁক্ ফেলিয়া তাহারা পলায়ন করিল। ইহাতে, জলের অভাব হওয়ায়, স্নানাদির অত্যন্ত ব্যাঘাত ঘটিল। এই সময়ে, কেল্লার গোলন্দাজেরা ইংরাজ-গোলন্দাজের উপর গোলাবর্ষণ করিয়া তাহাদিগের তোপ বন্ধ করিয়াছিল। এখন আবার, চৌবাচ্চা হইতে জল তুলিবার সুবিধা হওয়ায়, স্নান ভোজনাদির সুব্যবস্থা হইল। আহারাদির কিছুকাল পরে, হঠাৎ একটা ভয়ঙ্কর শব্দ হইয়া যত্র-তত্র ধূম ও ধূলায় ভরিয়া গেল তাহাতে, দশদিক আচ্ছন্ন হইয়া আর কিছুই