পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নরমুণ্ড হাতে লইয়া বাহির হইল। তাহার সঙ্গে এক বৃদ্ধও গহবর হইতে বাহির হইলেন। ডাকিনীদ্বয়ের মুখ-নির্গত অগ্নিস্ফুলিঙ্গের আলােকে আমি দেখিলাম যে, ইনি সেই বৃদ্ধ, পৃথিবীতে ভূমিকম্প করা যাহার উপজীবিকা। তাঁহাকে দেখিয়া আমার বড় ভয় হইল। কিন্তু নারিকেলমুখী বৃক্ষতলে দাঁড়াইয়া আছে, পলায়ন করিবার কোন উপায় ছিল না। সেজন্য গাছের উপর আমি চুপ করিয়া বসিয়া রহিলাম। বৃদ্ধের সহিত, মুণ্ড হাতে লইয়া লাউমুখী গিরিগহবর হইতে বাহির হইয়া বলিল,— “কৈ নারিকেলমুখী! তোমার মুণ্ডকৈ? রাত্রি অধিক হইয়াছে। শীঘ এস, ভঁাটা খেলা আরম্ভ করি। কে হারে, কে জিতে, ভূমিকম্প ঠাকুরদাদা তাহার বিচার করিবেন।” “আমার মুণ্ড লইয়া আসি।” এই কথা বলিয়া নারিকেলমুখী বৃক্ষে আরোহণ করিতে লাগিল। আমার বড় ভয় হইল। যে স্থানে মুণ্ড লন্বিত ছিল, সে স্থান হইতে সরিয়া বৃক্ষের আর এক শাখায় গিয়া আমি লুক্কায়িত থাকিতে চেষ্টা করিলাম। নারিকেলমুখী গাছে উঠিয়া মুণ্ড অন্বেষণ করিতে লাগিল। কিন্তু যে স্থানে মুণ্ড বুলিতেছিল, সে স্থানে মুণ্ড নাই। “এ কি হইল! মুণ্ড কোথায় গেল!” এইরূপ বলিতে বলিতে ঘোরতর বিস্মিতা হইয়া সে গাছের এ-শাখা সে-শাখা হাতড়াইতে লাগিল। সামান্য সেই গাছে কতক্ষণ আর আমি লুক্কায়িত থাকিতে পারি? সহসা তাহার ব্যাখ্যারিনিন্দিত হস্ত আমার গায়ে ঠেকিয়া গেল। “এ কি!” এই কথা বলিয়া সে তৎক্ষণাৎ আমাকে ধরিয়া ফেলিল। তাহার পর বলপূৰ্ব্বক বৃক্ষ হইতে নামাইয়া সে আমাকে ভূমিকম্পের নিকট ল বৃদ্ধকে সম্বোধন করিয়া নারিকেলমুখী বলিল, দু পরিবৰ্ত্তে গাছে এই আস্ত মানুষটি ছিল। এই মানুষ স্বৈরধি ভূমিকম্প বৃদ্ধ আমাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, আমি উত্তর করিলাম,- “আমি আ পরিচিত নাহি। কলিকাতা গড়ের মাঠে যাহাকে আপনি একটাকার ভূমিকম্প বিক্রয় , আমি সেই ব্যক্তি ।” বৃদ্ধ বলিলেন,- “বটে! তুমি সেই ব্যক্তি! ইহার মুণ্ড লইয়া তুমি কি করিয়াছ?” মুণ্ড লইয়া যাহা করিয়াছিলাম, সত্য সত্য বৃদ্ধকে সেই বিবরণ আমি প্ৰদান করিলাম। বৃদ্ধ তাহা শুনিয়া বলিলেন,- “এ বড় বিষম কথা! নাতিনী দুইটি মুণ্ডে মুণ্ডে ঠোকাঠুকি করিয়া ভঁটা ক্রীড়া করে। তোমাদের মত ইহাদের পা নাই যে, ইহারা ফুটবল খেলিবে। কিন্তু এ বড় অন্যায় কথা যে, তোমরা তাহাদিগকে এ সামান্য ক্রীড়া হইতেও বঞ্চিত করবে। অন্য লোক হইলে, তাহার মুণ্ডটি ছিড়িয়া আমি নাতিনীকে ভঁটাি খেলিতে দিতাম। কিন্তু তুমি আমার খরিদ-দার। সেজন্য তোমার মুণ্ড আমি ছিড়িয়া লইতে পারি না। কিন্তু নারিকেলামুখীর মনোদুঃখ তোমায় নিবারণ করিতে হইবে। তাহাকে তোমায় বিবাহ করিতে হইবে। আজ রাত্রিতেই তাহার সহিত তোমার আমি বিবাহ দিব। লাউমুখী! বিবাহের আয়োজন কর। শঙ্খ আনয়ন কর, আমি নিজে শঙ্খ বাজাইব । লাউমুখী, তুমি উলু দাও।” লাউমুখী তৎক্ষণাৎ উলুধ্বনি করিল। উলু! উলু! উলু! তাহার উলুধ্বনিতে জগৎ ফাটিয়া যাইতে লাগিল । নারিকেলমুখীর দিকে আমি একবার চাহিয়া দেখিলাম। তাহার রূপ দেখিয়া আমার সৰ্ব্বশরীর শিহরিয়া উঠিল। এ কিস্তৃতকদাকার ডাকিনীকে কিরূপে আমি পত্নীরূপে বরণ করব! অতি মিনতিসহকারে আমি ভূমিকম্প মহােদয়কে বলিলাম,- “মহাশয়! আপনি যেরূপ VDVDo দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.com%ি"*******