পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Σ Σ. Σ দিবরাত্রির কাব্য তাকে যে ভেঙ্গে ফেলতে চাচ্ছে, হেরম্ব তাও কি জানে ? হয়ত আজি, থেকেই তার চিরকালের জন্য দুঃখের দিন সুরু হল, এ আশঙ্কা ষে তার মনে জ্বালার মত জেগে আছে, হেরম্ব কি তা কল্পনা ও করতে পারে ? নিঃশব্দ নিৰ্ম্মম হাসির সঙ্গে উদাসীন চোখে খোলা জানাল দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থেকে হেরম্ব জবাব দিচ্ছে : দুঃখকে ভয় করে না ! দুঃখ মানুষের দুর্লভতম সম্পদ ! তাছাড়া, আমি আছি। আমি ! কথার অভাবে তাদের দীর্ঘতম নীরবতার শেষে আনন্দ বললে, “চলুন নাচ দেখবেন ।” আনন্দের নাচ যে বাকী আছে সে কথা হেরম্বের মনে ছিল না । “চল । বেশ পরিবর্তন করবে না ?” “করব । আপনি বাইরে গিয়ে বসুন ।” হেরম্ব ঘর থেকে বেরিয়ে গেল । অনাথের ঘরের সামনে দিয়ে যাবার সময় ভেজানো জানালার ধাক দিয়ে সে দেখতে পেল এককোণে মেরুদণ্ড টান করে নিম্পন্দ হয়ে সে বসে আছে । জীবনে বাহুল্যের প্রয়োজন আছে। কত বিচিত্র উপায়ে মানুষ এ প্রয়োজন মেটায় ! বাড়ীর বাইরে গিয়ে মন্দিরের সামনে ফাঁকা জায়গায় হেরম্ব দাঁড়াল। ইতিমধ্যে এখানে অনেক পরিবর্তন সংঘটিত হয়ে গেছে। তা যদি না হয়ে থাকে, তবে হেরম্বের চোখেরই পরিবাৰ্ত্তন হয়েছে নিশ্চয় । মন্দির ও বাড়ীর শ্যাওলার আবরণ এক প্রস্থ ছায়ার আস্তরণের মত দেখাচ্ছে {