পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিবরাত্রির কাব্য Σ 8. রান্নাঘরে যেতে হল। মনে তার কঠিন আঘাত লেগেছে। সংসারে থাকতে হলে সংসারের কতকগুলি নিয়ম মেনে চলতে হয় এটা সুপ্রিয়া জানে এবং মানে । বিয়েই যখন তার করতে হল। তখন মোটা মাইনের হাকিম অথবা অধ্যাপক অথবা পাশারওয়ালা ডাক্তারের বদলে একজন ছোট দারোগার সঙ্গে তাকে গেথে দেওয়া হল কেন ভেবে তার কখনো * মাপশোষ হয় নি । বিয়ের ব্যাপারে বাধ্য হয়ে মানুষকে যে সব হিসাব fরতে হয় সেদিক থেকে ধরলে কোন ছেলেমেয়েই সংসারে ঠিকে না। এক বড় দারোগা যাচাই করতে এসে তাকে পছন্দ করে নি। তার নাইট। যে বোচা সে অপরাধও সেই বড় দারোগার নয়। একটি চােখ নাকের জন্য কষ্ট করে বড় দারোগ হয়ে তাকে বাতিল করে দেওয়াটা সুপ্রিয়া তার অন্যায় মনে করে না । তবু তার কিশোর বয়সের কল্পনাটি অসম্ভব কেন সুপ্রিয়া তার কোন সঙ্গত কারণ আবিষ্কার করতে পারে নি । তার হতাশ বেদনা আজও তাই ফেনিল হয়ে আছে । চেনা মানুষ, জানা মানুষ, একান্ত আপনার মানুষ । যে নিয়মে অচেনা অজানা ছোট দারোগা তার স্বামী হল, ওই মানুষটির বেলা সে নিয়ম খাটবে কেন ? ও খাটতে দেবে কেন ? একি বিস্ময়কর অকারণ অন্যায় মানুষের ! কেন, ভালবাসা বলে সংসারে কিছু নেই নাকি ? সংসারের নিয়মে এর হিসাবটা গুজবার ফাক নেই নাকি ? সুপ্রিয় ভাবে । এত ভাবে যে বছরে তার দু’তিনবার ফিট হয় । সুপ্রিয়াকে ডালভাত রাধতে হয় না, একজন পাড়ে সিপাহী বেগার দেয়। সুপ্রিয় রাধে মাছ তারকারী, রাধে ছানার ডালনা । গৃহকৰ্ম্মকে । সে সত্যসত্যই এত ভালবেসেছে যে, মাছের ঝোলের আলু কুটতে বসেই