পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bra) দিবরাত্রির কাব্য “এই জন্য মা এত ঝগড়া করে। বলে বাড়ী বসে ধ্যান করা কেন, বনে গেলেই হয় । বাবা সত্যি সত্যি দিনের পর দিন যেন কি রকম হয়ে যাচ্ছেন। এত কম কথা বলেন যে মনে হয় বোবাই বুঝি হবেন ।” হেরম্ব একথা জানে। অনাথ চিরদিন স্বল্পভাৰী । সেরকম স্বল্পভাষী “নয়, বেশী কথা কইলে দুর্বলতা ধরা পড়ে যাবে বলে যারা চুপ করে থাকে । নিজেকে প্ৰকাশ করতে অনাথের ভাল লাগে না । তার কম। কথা বলার কারণ তাই। মন্দিরের মধ্যে পঞ্চ-প্ৰদীপ নেড়ে টুং টাং ঘণ্টা বাজিয়ে মালতী এদিকে আরতি আমণ্ড করে দিয়েছিল। হেরম্ব বলল, “প্ৰণামী দেবার उख्र कद्दे ख्षांन्न्त ?” “তারা সকালে আসে । দু’মাইল হেঁটে রাত করে কে এতদূরে আসবে । বিকালে আমাদের একটি পয়সা রোজগার নেই। আজ আপনি আছেন। আপনি যদি কিছু দেন।” “তুমি আমার কাছে টাকা আদায়ের চেষ্টা করছি ?” “আমি আদায় করব কেন ? পুণ্য অর্জনের জন্য আপনি নিজেই দেবেন। আমি শুধু আপনাকে উপায়টা বাৎলে দিলাম।” আনন্দ হাসল। মালতীর ঘণ্টা এই সময় নীরব হওয়ায় আবার হেরম্বের দিকে ঝুকে বলল, “তাই বলে মা প্ৰণাম করতে ডাকলে প্ৰণামী দিয়ে। বসবেন না যেন সত্যি সত্যি ! মা তাহলে ভয়ানক রেগে যাবে।” “মাকে তুমি খুব ভয় কর নাকি আনন্দ ?” ‘না, মাকে ভয় করি না । মা’র রাগকে ভয় করি।”