পাতা:দীনবন্ধু গ্রন্থাবলী.djvu/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নীল-দপণ \ు: বিঘা নীলের দাদন লইতে চাহিয়াছিলাম। বড়বাবু বলিলেন “পিতা, অামারদিগের অন্য আয় আছে, এক বৎসর কিম্বা দুই বৎসরের নীলের লোকসানে কেবল ক্রিয়াকলাপি বন্দ হবে, একেবারে অন্নাভাব হবে না, কিন্তু যাহারদের লাঙ্গলের উপর সম্পূর্ণ নির্ভর তাহারদের উপায় কি ? আমরা এই হারে নীল করিলে সকলেরি তাই করিতে হইবে।” বড়বাবু এ কথা বিজ্ঞের মত বলিলেন, আমি কাযে কাযেই বলিলাম তবে সাহেবের হাতে পায় ধরে ৫০ বিঘায় রাজি করগে । সাহেব হ, না, কিছুই কলেন না, গোপনে২ আমাকে এই বৃদ্ধ দশায় জেলে দেবার যোগাড় করিলেন । আমি জানি, সাহেবদিগের রাজি রাখিতে পারিলেই মঙ্গল । সাহেবদের দেশ, হাকিম ভাইব্রাদার, সাহেবদের অমতে চলিতে আছে ? অামাকে খালাস দেন, আমি প্রতিজ্ঞা করিতেছি যদিও হাল গোরু অভাবে নীল করিতে না পারি, বৎসর২ সাহেবকে এক শত টাকা নীলের বদলে দিব । আমি কি রায়তদের শেখাইবার মানুষ ? আমার সঙ্গে কি তাহাদের দেখা হয় ? প্র মোক্তার । ধৰ্ম্মাবতার যে ৪ জন রাইয়ত সাক্ষ্য দিয়াছে তাহার একজন টিকিরি, তার কোন পুরুষে লাঙ্গল নাই, তার জমি নাই, জমা নাই, গোরু নাই, গোয়ালঘর নাই, সারেজমিনে তদারক হইলে প্রকাশ হইবে । কানাই তরফদার, ভিন্ন গ্রামের রাইয়ত, তাহার সহিত আমার মক্কেলের কখন দেখা নাই, সে ব্যক্তি সেনাক্ত করিতে অশক্ত । এই২ কারণে আমি তাহারদের পুনৰ্ব্বার কোর্টে আননের প্রার্থনা করি—ব্যবস্থাকর্তারা লিখিয়াছেন, নিম্পত্তির অগ্রে আসামীকে সকল প্রকার উপায়ের পস্থা দেওয়া কৰ্ত্তব্য, ধৰ্ম্মাবতার আমার এই প্রার্থনা মঞ্জুর করিলে আমার মনে আক্ষেপ থাকে না ।