পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 আনার উন্নিসা বিষণ্ণমুখে তাহার পিতার কক্ষে প্রবেশ করিয়া দেখিল, তাহার পিতা জামাল খাঁ তখন ব্যবসায় সম্বন্ধীয় কাগজ পত্র লইয়া খুবই অভিনিবিষ্ট চিত্ত।

 জামাল খাঁ, কন্যাকে মলিন মুখে তাঁহার কক্ষ মধ্যে প্রবেশ করিতে দেখিয়া, তাহাকে পাশে বসাইয়া বলিলেন,—“একি! তোমার মুখথানা অত শুক্‌নো কেন আনারউন্নিসা? কোন অসুখ করেছে কি তোমার?”

 আনার প্রথমে নিজের ভিতরের চঞ্চল অবস্থাটা গোপন করিবার জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করিল। কিন্তু তাহা বোধ হয় পারিল না। তাহার প্রাণের মধ্যে যে একটা প্রবল ঝট্‌কা উঠিতেছিল, তাহা পিতার সহিত সাক্ষাতে যেন একটু বেশী জোর সঞ্চয় করিল। আর এটুকুও সে ভাবিল, হয়ত সে ধরা পড়িয়াছে। তবুও তাহার সেই অবস্থাটা সাধ্যমত গোপন করিবার জন্য, সে তাহার পিতার হাতে সুজা বেগের সেই পত্রখানি দিল।

 জামাল খাঁ, মুহূর্ত্ত মধ্যে পত্রখানি পড়িয়া লইয়া, চিন্তিত মুখে বলিলেন—“আমিও এই মাত্র নবাব সুজাবেগের নিকট হইতে আর একখানা পত্র পাইয়া বুঝিতেছি, তোমাকে বিবাহ করিবার জন্য, সে খুবই বাগ্র। তোমায় লিখিয়াছে, যে তোমার সম্মতি পাইলে সে পরে আমার অভিমত প্রার্থনা করিবে। কিন্তু সে বিলম্বটুকুও বোধ হয় সহ্য করিতে না পারিয়া, সঙ্গে সঙ্গে আমাকেও এক পত্র লিখিয়াছে। এখন করা যায় কি আনার?

১৭