আনারউন্নিসা তাঁহার মুখের উপর ঝুঁকিয়া পড়িয়া বলিল,“তুমি নিজের কুঠিতে আছ।”
সুজাখাঁ। আনার উন্নিসাকে একবার ডাকিয়া দাও।
আনার। আমিই ত তোমার সঙ্গে কথা কহিতেছি। কি কষ্ট হইতেছে নবাব?
সুজাখাঁ। আনার! আমি বোধ হয় এ যাত্রা রক্ষা পাইব না।
আনার। ছিঃ! ও কথা বলিও না। তুমি এখন অনেক ভাল আছ। চেতনা ছিল না — চেতনা হইয়াছে। জ্বরও কমিয়া আসিতেছে।
সুজাখাঁ একটু মলিন হাস্য করিয়া, আনারের মুখের দিকে চাহিলেন। তার পর সহসা চীৎকার করিয়া বলিয়া উঠিলেন, “ওঃ—বড় যাতনা। আনার উন্নিসা! আমি চলিলাম। বিদায় দাও—আমার আনারউন্নিসা। তোমাকে লইয়া সোনার সংসার পাতিয়াছিলাম। শয়তানী বাহারবানু তাহাতে আগুণ ধরাইয়া দিল।”
সুজা এই টুকু বলিয়া বড়ই ক্লান্ত হইয়া পড়িলেন। আনার তখনই তাঁহাকে উত্তেজক পানীয় দিল। তিনি আবার প্রকৃতিস্থ হইলেন। ক্লান্তিবশে চোখ বুজিলেন।
কিয়ৎক্ষণ এই ভাবে থাকিবার পর, নবাব সুজাখাঁ চক্ষু চাহিয়া দেয়ালের দিকে ভীতিপূর্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া চীৎকার করিয়া বলিয়া উঠিলেন—“ঐ— ঐ—সে আসিতেছে!”