পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

কথা যে কি, তাহা কখনও জানিতে পারিয়াছি কি? রাশি রাশি অর্থব্যয় করিয়া, তোমাকে রাজরাণীর মত সুখে রাখিয়া যে আনন্দ পাইব বলিয়া, অলীক সুখস্বপ্নে বিভোর হইয়াছিলাম, তাহাও তুমি চূর্ণ বিচূর্ণ করিয়া দিয়াছ। ছলনার মন্ত্রজালে বেড়িয়া তুমি কত দিন আর আমাকে এ অবস্থায় রাখিবে? কে তুমি, যে তোমার অঙ্গস্পর্শ করিয়া আমাকে প্রতিজ্ঞা করিতে হইবে?”

 “যখন দেখিলাম, প্রচুর অর্থ দিয়াও তোমার মন পাইলাম না, এত আদর যত্নেও তোমার হৃদয়ের একটু সামান্য অংশও অধিকার করিতে পারিলাম না— যখন দেখিতেছি, সুখের বদলে দুঃখ, শান্তির বিনিময়ে অশান্তি, আনন্দের বিনিময়ে বিষাদই আমার দানের প্রতিদানরূপে তুমি আমায় আনিয়া দিতেছ, তখন আর কেন তোমার উপাসনা করি? কলুষিত নরকের পথে এতদিন ঘুরিয়া মরিয়াছি। এখন স্বর্গের দ্বার কোথায় তাহা আমাকে একবার খুঁজিয়া দেখিতে হইবে।”

 সুব্জাবেগকে এইভাবে চিন্তা করিতে দেখিয়া বাহারবানু বলিল— “ইতস্ততঃ করিতেছ কেন নবাব সাহেব! কি ভাবিতেছ তুমি? আমার এ সামান্য অনুরোধ রক্ষায় কেন এত সন্দেহ? কেন এত সংকোচ?”

 সুজাবেগ নিদ্রোত্থিতের ন্যায় চমকিত ভাবে বলিলেন, “না-না—কিসের সংকোচ? কিসের সন্দেহ? যদি কোথাও শান্তি পাই, তাহা তোমার নিকটে। যদি কোথাও আরাম পাই— তাহা তোমার সাহচর্য্যে! এ মরুময় জীবনের শান্তিদায়িনী

৩৬