পাতা:ধর্ম্মজীবন (ষষ্ঠ খণ্ড) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

N ধৰ্ম্ম-জীবন । বা ব্বিশ পঁচিশটা হইতে পারে না। আমরা ব্যবহারিক জ্ঞানে জড় ও চেতনকে যেরূপে দেখিতেছি, তন্মধ্যে দেখিতে পাইতেছি যে, তাহারা পরস্পর সাপেক্ষ, জড় বলিলেই চেতন সেই সঙ্গে আছে ; চেতন বলিলেই জড় সেই সঙ্গে আছে। উভয়ে যখন পরস্পর সাপেক্ষ, তখন উভয়ের সত্তা নিরবলম্ব সত্তা নহে ; উভয়ের অন্তরালে, উভয়কে আলিঙ্গন করিয়া, উভয়কে সম্ভব করিয়া আর কোনও সত্তা রহিয়াছে। সেই পরমার্থ সত্তা এক, জড় ও চেতন তাহা হইতেই উদ্ভূত, তাহারই প্ৰকাশ। ব্যবহারিক জগতে, অর্থাৎ সৃষ্টিলীলার মধ্যে কিন্তু জড় ও চেতন পরস্পর সাপেক্ষ, পরস্পর বিসম্বাদী অথচ পরস্পর-পোষক হইয়া রহিয়াছে । আমাদের পদদ্বয় সেই সুদৃঢ় ভিতির উপরে স্থাপন করি। তিনি আমাদিগকে সত্তা না। দিলে আমরা কিরূপে সৎ হাইতাম, সুতরাং আমরা তঁহারই আশ্রিত ও অনুগত জীব । আর এক প্রকার ধৰ্ম্ম আছে, যাহাকে নৈতিক ধৰ্ম্ম বলা যাইতে পারে। মহাত্মা বুদ্ধ এই ধৰ্ম্মের পরাকাষ্ঠ প্ৰদৰ্শন করিয়াছিলেন । তিনি বলিলেন, ব্ৰহ্মস্বরূপ অজ্ঞেয়, তঁহার পশ্চাতে ছুটিও না, যাহা বিচারের দ্বারা মীমাংসা হইতে পারে না, তাহাতে শক্তি পৰ্য্যবসিত করিও না ; যে ধৰ্ম্মনিয়মের দ্বারা মানবজীবন শাসিত, যাহাকে প্ৰতিনিয়ত নিজ জীবনে প্ৰত্যক্ষ ভাবে লক্ষ্য করিতেছি, তদুপরি পদদ্বয়কে স্থাপন করি ; পাপকে পরিহার কর, কারণ শাস্তি অনিবাৰ্য্য ; পুণ্যকে আশ্ৰয় কর, কারণ পুণ্যের ফল অনুল্লঙ্ঘনীয়। এই মূল ভাব অবলম্বন করিয়া বৌদ্ধধৰ্ম্ম আত্ম-পরমাত্ম বিচার বর্জন করিয়া, চিত্তশুদ্ধি, অনাসক্তি, সৰ্ব্বভুতে মৈত্রী প্ৰভৃতি সাধন করিতে প্ৰবৃত্ত হইলেন এবং তাহাতেই প্ৰতিষ্ঠা লাভ করিলেন । ইহার ফল। এই হইল, যে বৌদ্ধধৰ্ম্ম ত্বরায় সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম নিয়ম পালনে পৰ্য্যবসিত হইল । পূৰ্বোক্ত বিসম্বাদী ধৰ্ম্মভাব সকলকে অন্ধের হস্তী দর্শনের সহিত তুলনা করি।-- বার কারণ এই যে, ইহাদের প্রত্যেকের মধ্যেই কিঞ্চিৎ পরিমাণে সত্য আছে। ঐতিহাসিক ধৰ্ম্মের মূল কথার মধ্যে কি সত্য নাই ? প্রাচীনকালে ঈশ্বর কি ঋষিগণের হৃদয়ে আপনাকে অভিব্যক্ত করেন নাই ? বেদ, বাইবেল, কোরাণ প্রভূতি শাস্ত্ৰসকলে ঈশ্বরাভিব্যক্ত সত্য সকল কি সঞ্চিত নাই ? আমরা জগতের ঋষিগণের উক্তি সকল কি অবহেলার চক্ষে দেখিতে পারি ? তাহ, কখনই