পাতা:নন্দনে নরক - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ )\9న . মেটা সাহেব নীরস স্বরে বলিলেন “তুমি স্বহস্তে ক্ষমার উৎস রুদ্ধ করিয়াছ । আমার হৃদয়ে ক্ষমার স্থান নাই ; প্রতিহিংসার অনলে আমার হৃদয় দগ্ধ হইতেছে। কিন্তু তোমাকে আর অধিক তিরস্কার করিব না, আমি বুঝিয়াছি তিরস্কার সম্পূর্ণ নিষ্ফল। পূৰ্ব্বে আমার বিশ্বাস ছিল তোমার মনে যাহাই থাক, একদিন না একদিন তুমি আমাকে ভাল বাসিবে, আমার উচ্ছসিত অজস্র প্রেম তোমার হৃদয়কে কোমল করিতে পরিবে, কিন্তু তাহা আমার ভ্রম মাত্র ! তোমার হৃদয় পাষাণের ন্যায় কঠিন, প্রেমের সেখানে স্থান নাই।” আমিন হতাশভাবে বলিলেন, “তুমি বড় নিৰ্দ্দয় !" মেটা সাহেব বলিলেন, "আর তোমার হৃদয়ে অসীম দয়া ! স্ত্রী যাহার অবিশ্বাসিনী, তাহার জীবনে কোন সুখের আশা আছে ? স্ত্রীর সহিত তাহার অন্তরের মিলন কখনও কি সম্ভব ? অামার সহিত তোমার সম্বন্ধ ক্রমে দুরতর হইতে লাগিল ; ক্রমে তুমি আমার ছায়া পৰ্য্যস্ত ত্যাগ করিলে ! কিন্তু তোমার গতিবিধির প্রতি আমি দৃষ্টি রাখি নাই, কারণ, তোমার দেহটিকে মাত্র নজরবন্দী করিয়া কোন ও ফল লাভের আশা ছিলনা। কেবল সমাজের ভয়েই এপর্য্যস্ত আমি তোমার সহিত স্বামী-স্ত্রী ভাবে বাস করিয়া আসিতেছি ; পাছে বংশের কলঙ্ক প্রকাশিত হইয় পড়ে, এই ভয়ে আমি তোমাকে ত্যাগ করি নাই।” মৰ্ম্মপীড়িত আমিন বলিলেন, “তুমি যদি এত কথা জানিতে, তাহ হইলে পূৰ্ব্বে কেন আমাকে বল নাই ? কতকগুলি মিথ্যা কথা কুলোকের কাছে শুনিয়া, তাহাই সত্য বলিয়া বিশ্বাস করিয়া অন্যায় রাগ করিতেছে ; সত্য কথা শুনিবে ?”