পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

yNov নানা - নদের আবাহনস্বরূপ একটিমাত্র শ্লোক উদ্ধৃত করে রাধাকুমুদবাবু প্রমাণ করতে চান যে, ঋষিদের মনে এই একদেশীয়তার ভাব সর্বপ্রথমে উদয় হয়েছিল। কিন্তু সেই বৈদিক মনোভাব যে ক্রমে বৃদ্ধি এবং বিস্তার লাভ করে শেষে লৌকিক মনোভাবে পরিণত হয়েছিল, তার কোন প্রমাণ নেই। আমার বিশ্বাস, বৈদিক ধৰ্ম্ম নয়, লৌকিক ধৰ্ম্মই ভারতবর্ষকে পুণ্যভূমি করে তুলেছে। ভারতবর্ষের আদিম অধিবাসীদের ধৰ্ম্ম হচ্ছে লৌকিক ধৰ্ম্ম ; বিদেশী বিজেতা-আৰ্য্যদের ধৰ্ম্ম হচ্ছে বৈদিক ধৰ্ম্ম । ভারতবর্ষের মাটি ও ভারতবর্ষের জলই হচ্ছে লৌকিক ধৰ্ম্মের প্রধান উপাদান। সে ধৰ্ম্ম আকাশ থেকে পড়েনি, মাটি থেকে উঠেছে। ভারতবর্ষের জনগণ চিরদিন কৃষিজীবী । যে ত্ৰিকোণ পৃথিবী তাদের চিরদিন অন্নদান করে, সেই হচ্ছে অন্নদা, এবং যে জল তাদের শস্যক্ষেত্রে রস-সঞ্চার করে, সেই হচ্ছে প্ৰাণদা। তাই ভারতবর্ষের অসংখ্য লৌকিক দেবতা সেই অন্নদার বিকাশ । সীতার মত এ সকল দেবতা হলমুখে ধারণী হতে উত্থিত হয়েছে। তাই এ দেশের প্রতিমা মাটির দেহ ধারণ করে এবং জলে তার বিসর্জন হয়। “তোমারি প্রতিমা গাড়ি মন্দিরে মন্দিরে।” একথা মোটেই বৈদিক মনোভাবের পরিচায়ক নয়। কেননা, পঞ্চনদবাসী আৰ্য্যেরা মন্দিরও গড়াতেন না, প্রতিমাও श्रृंख! कद्र(ठभ না। এই দেশভত্তি পৌরাণিক সাহিত্যে অতি পরিস্ফুট ठू উঠেছে। তার কারণ, বৈদিক যুগ ও পৌরাণিক যুগের (T ষে বৌদ্ধযুগ ছিল, সেই যুগেই এই স্বদেশ-জ্ঞান ও স্বদেশ-প্রীতি ভারতবর্ষময় ব্যাপ্ত হয়ে পড়েছিল। বৌদ্ধধৰ্ম্ম অবৈদিক ধৰ্ম্ম, এবং সার্বজনীন বলে তা সার্বভৌম ধৰ্ম্ম। অপর পক্ষে বৈদিক ধৰ্ম্ম আৰ্য্যদের গৃহধৰ্ম্ম, বড়জোর কুলধৰ্ম্ম। সমগ্ৰ দেশকে