পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী সুভাষচন্দ্র
১০৫

সমবেত হন। ভারতীয় বাহিনী হইতেও প্রতিনিধি আসেন। ইঁহারা সকলেই যুদ্ধবন্দী ছিলেন। এই সম্মেলনে আজাদ-হিন্দ আন্দোলনের মূলনীতি নির্দ্ধারিত হয়—

 (১) ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য পূর্ব্ব-এসিয়ার প্রবাসী ভারতীয়গণকে লইয়া একটি আজাদ-হিন্দ সঙ্ঘ গঠন করিতে হইবে।

 (২) অজাদ-হিন্দ সঙ্ঘের আদর্শ, কার্য্যক্রম ও সকল প্রকার পরিকল্পনা ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের আদর্শ, কার্য্যক্রম ও উহার পরিকল্পনা অনুযায়ী অনুসৃত হইবে। ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্ব মানিয়া চলিতে হইবে; কংগ্রেসের আন্দোলনের সহিত যোগসূত্র সাধন করিতে হইবে।

 (৩) পূর্ব্ব এসিয়ার ভারতীয় বাহিনী হইতে এবং ভারতীয় বেসামরিক জনসাধারণের মধ্য হইতে সৈন্য সংগ্রহ করিয়া একটি আজাদ-হিন্দ ফৌজ গঠন করিতে হইবে।

 (৪) ভারতবর্ষের প্রতি এবং নবগঠিত আজাদ-হিন্দ সঙ্ঘের প্রতি জাপানীদের নীতি কি, তাহা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করার জন্য জাপানী কর্ত্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানাইতে হইবে।

 এইরূপে ব্যাঙ্কক-সম্মেলন হইতে গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে আজাদ-হিন্দ সঙ্ঘ গঠিত হইল। ইহার সভাপতি হইলেন শ্রীরাসবিহারী বসু। সিঙ্গাপুরে উক্ত সঙ্ঘের প্রধান কর্ম্মস্থল হইল এবং পূর্ব্ব-এশিয়ার প্রত্যেক দেশে ইহার শাখাসঙ্ঘ স্থাপিত হইল। এই সময় গান্ধীজির নেতৃত্বে কংগ্রেস ১৯৪২ সালে ৮ই আগষ্ট ‘ভারত ত্যাগ কর’ প্রস্তাব গ্রহণ করিলেন। সমগ্র ভারতবর্ষ দুইটি মন্ত্রে দীক্ষিত হইল— “করেঙ্গে ঔর মরেঙ্গে।”