পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ܟܬ সর্বদাই ‘নিকটে এই অর্থে ব্যবহৃত হইয়া থাকে। এখানেও ঐ অর্থে শব্দটি অসঙ্গত হইতেছে না। (১১) “কােছল' ( পৃঃ ১১৩, পঙক্তি ১১ ) শব্দটির অর্থ সুরেন্দ্রবাবু লিখিয়াছেন ‘একটি বড় মৃৎ-পাত্র’ এবং আমার মনে হয় এই ঠিক। আমি মনে করিয়াছিলাম উহার অর্থ “গামছা”।। আমার পূর্বতন সহকারী শ্ৰীযুক্ত সুরেশচন্দ্র ধরের কথা অনুসারে আমার উক্ত ধারণা হইয়াছিল। সুরেশীবাবু পূর্ব-মৈমনসিংহের অধিবাসী, ও পালাগানটি ঐ প্রদেশ হইতেই পাওয়া গিয়াছে । (১২) উষ্টা’ ( পৃঃ ১২৮, পঙক্তি ১২) কথাটির অর্থ, সুরেন্দ্রবাবুর মতে “লাথি” ; আমি বলিয়াছিলাম উহার অর্থ “চড়” । ইহাও আমি সুরেশবাবুর কথামত বলিয়াছিলাম এবং আমার মনে হয় আমার ভুল হয় নাই, কারণ এখানে ‘উষ্টা” কথাটির দ্বারা ‘লাথি” বুঝাইলে কোন অর্থ হয় না। (১৩) সুরেন্দ্ৰবাবু ‘কারুয়া” ( পৃঃ ১৯৭৯, পঙক্তি ১০ ) শব্দটির অর্থ বালিয়াছেন “খেরো” । কিন্তু স্পষ্টই দেখা যায় যে ঐ অর্থ এখানে গ্ৰাহ হইতে পারে না । (১৪) “রায়ত বিলাত’ ( পৃঃ ১৫৮, পঙক্তি ২০ ) শব্দটির অর্থ তিনি বলেন “অধীন হওয়া” ; কিন্তু আমার জানা সেরূপ কোন নজীর পাই নাই যাহাতে ঐ অর্থ মানিয়া লইতে পারি। দোকানদারদের হিসাবের খাতায় ‘বিলাত বাকী’ কথাটির বহুল প্ৰচলন দেখিতে পাওয়া যায়। ঐ কথায় তাহারা ‘বাহিরের লোকেদের বাকী দেন৷” বুঝিয়া থাকে। আমার মনে হয় ‘বিলাত’ শব্দ, যাহাতে আজকাল ‘ইংলণ্ড’কে বুঝায়, তাহারও মূল এই * বাহিরের লোক’ । (১৫) “চুপা’ ( পৃঃ ১৬০, পঙক্তি ১৬) কথাটিতে আমি একটি জিজ্ঞাসার চিহ্ন দিয়া রাখিয়াছিলাম, কারণ উহার অর্থ তখন জানিতে পারি নাই। সুরেন্দ্র বাবু লিখিতেছেন, এক প্রকার স্বর্ণ বা রৌপ্যনিৰ্ম্মিত ফুলের ন্যায় গঠন ও ছিদ্রবিশিষ্ট অলঙ্কারকে “চুপা’ বলে। তিনি আরও লিখিতেছেন যে কথাটির এখন আর প্রচলন নাই। র্তাহার দেওয়া অর্থটি কি অনুমান-প্রসূত, না। উহার কোন নজীর আছে ?