পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Vo V পূর্ববঙ্গ গীতিকা দৃশ্য দেখিলেন তাহাতে তিনি ক্ৰোধােন্মত্ত হইলেন, কিন্তু অনেক খুজিয়াও রঙ্গের মস্তক পাইলেন না। তখন অসম্বতি-বস্ত্ৰ, শিরস্ত্রাণ-শূন্য মস্তকে রাজচন্দ্র নিকটবৰ্ত্তী বড় জমিদার ইঙ্গা চৌধুরীর বাড়ীতে উপস্থিত হইলেন এবং বলিলেন রাজেন্দ্রনারায়ণ র্তাহার সমস্ত পৈত্রিক সম্পত্তি অপহরণ করিয়া তঁহাকে তাড়াইয়া দিয়াছেন। মুসলমান জমিদার রাজচন্দ্ৰকে আশ্বাস দিলেন যে তিনি তঁহাকে সাহায্য করিবেন । এই ব্যাপারের একটা মীমাংসার জন্য রাজেন্দ্রনারায়ণ এবং ইঙ্গা চৌধুরীর মধ্যে কথাবাৰ্ত্তা চলিতে লাগিল। উহারা পরস্পরের সহিত সাক্ষাৎ করিলেন। ইতিমধ্যে এক গভীর রজনীতে চাদভাণ্ডারী ইঙ্গা চৌধুরীর বাড়ীর গড়খাই কৌশলক্রমে উত্তীর্ণ হইয়া বৃদ্ধ চৌধুরীকে ও র্তাহার বাড়ীর অনেককে বধ করিল। ইঙ্গা চৌধুরীর তিনটি পুত্ৰবধু কৃপাণ-হস্তে চাদভাণ্ডারীর সহিত যুদ্ধ করিয়াছিলেন। ইঙ্গা চৌধুরীর মাত্র একটি পুত্র এই হত্যাকাণ্ড হইতে রক্ষা পাইয়াছিলেন। তিনি তাহার মাতুলালয়ে পলাইয়া যাইয়া এই দুর্ঘটনার সংবাদ প্ৰদান করেন। মাতুল ও ভাগিনেয়ের মিলন অতি করুণরসাত্মক। ৮/মনােহর গাজী ( মাতুল ) সমস্ত অবগত হইয়া বহু সৈন্যসহ রাজেন্দ্রনারায়ণের বাড়ী আক্রমণ করেন। খুল্লতাত পলাইয়া যান এবং রাজচন্দ্র বাবুপুরের গদিতে প্রতিষ্ঠিত হন। শেষ দৃশ্যে রাজচন্দ্ৰ ভঁাহার খুল্লতাতের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর সাশ্রনেত্ৰে তাহার পদতলে পড়িয়া যে সকল করুণোক্তি করিয়াছিলেন তাহা সমস্ত বিরোধ এবং যুদ্ধ-বিদ্রোহাদির রেষারেষি অতিক্রম করিয়া খুল্লতাত এবং ভ্রাতুষ্পপুত্রের মধ্যে অতি নিৰ্ম্মল সুধাধারার ন্যায় যে গুপ্ত স্নেহ প্রবাহিত ছিল তাহা মৰ্ম্মস্পর্শী ভাষায় প্ৰকাশ করিয়া দেখাইয়াছে। ইহার পরে রাজেন্দ্রনারায়ণ কাশীবাসী হইলেন। এই হইল ঘটনা। বলা বাহুল্য কৃষকের মুখনিঃস্থত এই পালার ভাষা সংস্কৃত প্রভাবশূন্য। ইহা নােয়াখালী জেলার চাষার ভাষা। রচনাভঙ্গি সরল এবং উদ্দীপনাময়, তাহাতে সর্বত্র পাঠকের কৌতুহল জাগ্ৰৎ থাকে। চাষীরা যাহা বৰ্ণনা করিবে এবং চাষারা যাহা শুনিবে সে কাহিনীর মধ্যে কোন অবান্তর কথা থাকিলে তাহদের ধৈৰ্য্যচুতি ঘটা স্বাভাবিক। ভদ্র ও শিক্ষিত সমাজের কাবো