পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

क० 65: a ইন্মত আলী গোলাম নবি কাল পরাণির বৈরী। দুসমনি করিয়া আমার হাতৃত দিল বেড়ি ৷” আশুবাবু মনে করেন কাফেন চোরা পালার সহিত সেকেন্দারের যেন একটি প্ৰকৃতিগত সম্বন্ধ আছে। নমাজ পড়িতে যাইয়া এই পালার গায়ক মনসুরের পরিবর্তন হইয়াছিল। গায়ক সেকেন্দারও তেমনই নমাজভক্ত। তাহার কপালে একটা কালো জট আছে। আশুবাবু শুনিয়াছেন, নমাজ পড়িতে পড়িতে মাটিতে মাথা ঠেকাইয়াই তাহার এই জট বঁাধিয়া গিয়াছে। পটীয়া থানার পরিগ্রামে নিবারণচন্দ্ৰ সূত্রধরের বাড়ীতে আশুবাবু সেকেন্দারের গান শোনেন । পালাটি শেষ করিতে তাহার প্রায় আট ঘণ্টা সময় লাগিয়াছিল। তাহার কণ্ঠস্বর এমনই মধুর এবং ভক্তিপ্নত যে প্ৰায় চারিশতা লোক তাহাকে বেষ্টন করিয়া বসিয়া যেন তাহার গান অমৃতের মত পান করিতেছিল। আসরের চারি কোণে চারিটি বাঁশের খুঁটি পোতা, এবং তাঙ্কার উপরে চারিটি প্ৰকাণ্ড কেরোসিনের ল্যাম্প, মশালের মত জ্বলিতেছিল। সেই ল্যাম্পগুলির উদগীরিত ধূমরাশিতে চারিদিক অন্ধকার হইয়াছিল ; তন্মধ্যে ল্যাম্পের আলোকে এবং ধূমমণ্ডলীর মধ্যে সেকেন্দারকে ধূমাবতীর ন্যায়ই দেখা যাইতেছিল। আপাদ-বিলম্বিত একটি সুদীর্ঘ চােগায় তাহার দেহ আবৃত, এবং সেই চােগার উপরিভাগে একদিকে একটি অৰ্দ্ধচন্দ্র-চিহ্ন। তাহার এক হস্তে একটি চামর, অপর হস্তে একটি ঝুমঝুমি রিমিঝিমি করিয়া বাজিতেছিল। দলের মধ্যে একজন বাদক, ও অপর কয়েকজন দোহার । সেকেন্দরের উচ্চস্বর অপরাপরের কণ্ঠ ধ্বনিকে অবলীলাক্রমে অতিক্রম করিয়া উদ্ধে উঠিতেছিল, এবং আসরের যাবতীয় লোকের লক্ষ্য সেইদিকেই ছিল। উত্তরদিকের মাঝামাঝি একটি লোহার খুটী, মাথায় একটি অৰ্দ্ধচন্দ্ৰাকৃতি লৌহবলয় ধারণ করিয়া ভূপ্রোথিত ছিল, সেই বলয়ের নিক্ষে ফুল ও পল্লবের মাল্য বুলিতেছিল। নীচে একখানি কুলায় চাউল ও অন্যান্য দ্রব্য সাজান ছিল। সেগুলি গাজীর সিন্নি। হিন্দু মুসলমান উভয় জাতির চাষী সম্প্রদােয়ই এই সিন্নি মানত । করিয়া বাড়ীতে গাজীর গীত দিয়া থাকে; কিন্তু আশুবাবু দুঃখের সহিত লিখিয়াছেন, “এখন দিন ফিরিয়া গিয়াছে। গ্রাম্য মোল্লাজীরা ফতোয়