পাতা:প্রবাসী (অষ্টবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Gł o\? . আকাশে আকাশে বিস্তৃত ; তা প্রত্যেক প্রয়োজনের উপযোগী অথচ প্রত্যেক প্রয়োজনের অতীত। সেই জালোককেই বলি বাণীর রূপক। সায়ান্স এক দিন য়ুরোপে যুগাগুর এনেছিল। কেন ? বস্তুজগতে শক্তির সন্ধান জানিয়েছিল ব’লে না। জগৎতত্ব সম্বন্ধে জ্ঞানের অন্ধত ঘুচিয়েছিল ব'লে। বস্তুসত্যের বিশ্বরূপ স্বীকার করতে সেদিন মানুষ প্রাণ পৰ্য্যস্ত দিয়েছে। আজ সায়ান্স সেই যুগ পার করে দিয়ে আর এক নবতর যুগের সম্মুখে মানুষকে টাড় করালে। বস্তরাজ্যের চরম সীমানায় মূল তত্বের দ্বারে তার রথ এলো। সেখানে স্বাক্টর আদি বাণী। প্রাচীন ভারতে মামুষের মন কৰ্ম্মকাও থেকে যেই এলো জ্ঞানকাণ্ডে, সঙ্গে সঙ্গে এলে৷ পৃষ্টির যুগ। মানুষের আচারকে লঙ্ঘন ক’রে আত্মাকে ডাক পড়লে । সেই আত্মা যন্ত্রচালিত কৰ্ম্মের বাহন নয়, আপন মহিমাতে সে স্বষ্টি করে। সেই যুগে মানুষের জাগ্ৰত চিত্ত ব’লে উঠেছিল, চিরস্তনের মধ্যে বেঁচে ওঠাই হ’লে বেঁচে যাওয়া ; তার উলটাই মহতী বিনষ্টি। সেই যুগের বাণী ছিল, “ষ এতদ্বিন্ধুরমুতাস্তে ভবস্তি।” আর এক দিন ভারতে উদ্বোধনের যাণী এলে। সমস্ত মানুষকে ডাক পড়লে,—বিশেষ সঙ্কীর্ণ পরামর্শ নিয়ে নয়, যে মৈত্রী মুক্তির পথে নিয়ে যায় তারি যাণী নিয়ে । সেই বাণী মানুষের চিত্তকে তার সমগ্র উদ্বোধিত শক্তির যোগে বিপুল স্বষ্টিতে প্রবৃত্ত করলে। যাণী তাকেই বলি যা মামুষের অন্তরতম পরম অব্যক্তকে বাহিরে অভিব্যক্তির দিকে আহবান ক’রে আনে, যা উপস্থিত প্রত্যক্ষের চেয়ে অনাগত পূর্ণতাকে বাস্তবতর সত্য ব’লে সপ্রমাণ করে। প্রকৃতি পশুকে নিছক দিনমজুরী করতেই প্রত্যহ নিযুক্ত ক’রে রেখেছে। কৃষ্টির বাণী সেই সঙ্কীর্ণ জীবিকার জগৎ থেকে মানুষকে এমন জীবনযাত্রায় উদ্ধার করে দিলে যার লক্ষ্য উপস্থিত কালকে ছাড়িয়ে যায়। মানুষের কানে এলো—টিকে থাকৃতে হবে, একথা তোমার নয় ; তোমাকে বেঁচে থাকৃতে হবে, সেজন্তে ম’রতে যদি হয় সেও ভালো। প্রাণ যাপনের বদ্ধ গণ্ডীর মধ্যে যে-আলো জলে সে রাত্রির প্রবাসী—শ্রোবণ, ১৩৩৫ AMMMAMMMMAMMMMAeeA MAMAeAMMAMMAMMMMMMAMMM [ ২৮শ ভাগ, ১ম খণ্ড MAMAMMMAMMAMMAMAMAASAMMAMAMAAAA আলো, পশুদের তাতে কাজ চলে। কিন্তু মানুষ নিশাচর औय नग्न। সমুদ্রমন্থনের দুঃসাধ্য কাজে বাণী মানুষকে ডাক দেয় তলার রত্নকে তীরে আনার কাজে । এতে করে বাইরে সে যে সিদ্ধি পায় তার চেয়ে বড়ো সিদ্ধি তার অন্তরে। এ যে দেবতার কাজে সহযোগিতা। এতেই আপন প্রচ্ছন্ন দৈব শক্তির পরে মামুষের শ্রদ্ধা ঘটে। এই শ্রদ্ধাই নূতন যুগকে মর্ত্য সীমা থেকে অমর্ত্যের দিকে উদ্ধার ক’রে নিয়ে যায়। এই শ্রদ্ধাকে নিঃসংশয় স্পষ্টভাবে দেখা যায় তার মধ্যে, যার আত্মা স্বচ্ছ জীবনের আকাশে মুক্ত মহিমায় প্রকাশিত। কেবল মাত্র বুদ্ধি নয়, ইচ্ছাশক্তি নয়, উদ্যম নয়, যাকে দেখলে বোঝা যায় বাণী র্তার মধ্যে মূৰ্ত্তিমতী । আজ এইরূপ মানুষকে যে একান্ত ইচ্ছা করি তার কারণ, চার দিকেই আজ মানুষের মধ্যে আত্ম-অবিশ্বাস প্রবল। এই আত্ম-অবিশ্বাসই আত্মঘাত। তাই রাষ্ট্রক স্বাৰ্থবৃদ্ধিই আজ আর সকল সাধনাকেই পিছনে ঠেলে ফেলেছে । মানুষ বস্তুর মূল্যে সত্যকে বিচার করছে। এমনি ক’রে সত্য যখন হয় উপলক্ষ্য, লক্ষ্য হয় আর কিছু, তখন বিষয়ের লোভ উগ্ৰ হ’য়ে ওঠে, সে লোভের আর তবু সয় না। বিষয়সিদ্ধির অধ্যবসায়ে বিষয়বুদ্ধি আপন সাধনার পথকে যতই সংক্ষিপ্ত করতে পারে ততই তার জিৎ। কারণ, তার পাওয়াটা হ’লো সাধনাপথের শেষ প্রান্তে। সত্যের সাধনার সৰ্ব্বক্ষণেই পাওয়া । সে যেন গানের মতো, গাওয়ার অস্তে সে গান নর, গাওয়ার সমস্তটার মধ্যেই। সে যেন ফলের সৌন্দৰ্য্য, গোড়া থেকেই ফুলের সৌন্দর্য্যে যার ভূমিকা। কিন্তু লোভের প্রবলতায় সত্য যখন বিষয়ের বাহন হয়ে উঠলো, মহেন্দ্রকে তখন উচ্চৈঃশ্রবার সহিসগিরিতে ভৰ্ত্তি করা হলে, তখন সাধনাটাকে ফঁাকি দিয়ে, সিদ্ধিকে সিদ্ধ কেটে নিতে ইচ্ছে করে, তাতে সত্য বিমুখ হয়, সিদ্ধি হয় বিকৃত। সুদীর্ঘ নিৰ্ব্বাসন ব্যাপ্ত ক’রে রামচন্দ্রের একটি সাধনা সম্পূর্ণ হ’য়েছিল। যতই দুঃখ পেয়েছেন ততই গাঢ়তর ক'রে উপলব্ধি করেছেন সীতার প্রেম। র্তার সেই উপলদ্ধি নিবিড় ভাবে সার্থক হয়েছিল যেদিন প্রাণপণ