পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

»ፃ8 aaA AAAAS AAAA S AAAAA AMSAAAAAA AAAA SAAAAA MMMMM MSMS C C সেই সব দিনের অবিবেচনার কথা ভাবিয়া পশুপতিরও অনুতাপ হইতেছিল। বলিল—তাও কি বইটা আছে ? জানা নেই—শোনা নেই—পরস্ত পর একটা মেয়ে–নিৰ্ব্বিচারে দামী বইট। তার হাতে তুলে দিলাম। কি বোকাই যে ছিলাম তখন ! ও— আপনি ত এসে পড়েছেন একেবারে—আচ্ছা! নকুড় বামদিকে বঁাশতলার সরুপথে নামিয়া পড়িলেন। সামনেই তাহার বাড়ি। কহিলেন,—কাল আবার দেখা হবে। শিগগির শিগগির চলে যাও পশুবাবু, চারিদিক থমথম খেয়ে আছে, বিষ্টি নামূবে এক্ষুণি । তখন সত্যই চারিদিক নিষ্কম্প, বাতাস আদৌ নাই—গাছের পাতাটি নড়িতেছে না । মাথার উপরে অতি ব্যস্ত আকাশ মেঘের উপর মেঘ সাজাইয়া নিঃশব্দে আয়োজন পরিপূর্ণ করিয়া তুলিতেছে । আজ পাচ টাকার মধ্যে সমস্ত পূজার বাজার সারিতে হইতেছে, আর বহু বৎসর পূর্বে একদিন ঐ দামের একখানি নুতন বই নিতান্তই সখ করিয়া বিসর্জন দিয়াছিল, মনে একবিন্দু ক্ষোভ হয় নাই-চলিতে চলিতে কতকাল পরে পশুপতির সেই কথা মনে হইতে লাগিল । কলিকাতা হইতে সে বাড়ি ফিরিতেছিল, অন্তর-ভরা আশা ও উল্লাস, হাতে চিত্রাঙ্গদা । বনগার পর দু-তিনটা ষ্টেশন ছাড়াইয়া—সে ষ্টেশনে ট্রেন থামিবার কথা নয়—তবু থামিল । ইঞ্জিনের কোথায় কি কল বিগড়াইয়া গিয়াছে । যাত্রীরা অনেকে নামিয়া পড়িল। প্লাটফরমের উপরে দক্ষিণ দিকটায় জোড়া পাকুড়গাছ ছায়া করিয়া দাড়াইয়াছিল, তাহার গোড়ায় ষ্টেশনের মরিচ-ধরা ওজনের কলটি । পাকুড়গাছের গুড়ি ঠেশ দিয়া দিব্য পা ছড়াইয়া কলটির উপর বলিয়া পশুপতি চিত্রাঙ্গদা খুলিয়া পড়িতে বসিল। লাইনের ওপারে অনেক দূরে স্বৰ্য্য অস্ত যায়-যায়। কুয়ায় কলসী ভরিয়া আ’ল পথে গ্রামে ফিরিতে ফিরিতে বেী-বিরো তাকাইয়া তাকাইয়া রেলগাড়ী দেখিতেছিল। পশুপতি একমনে পড়িয়া চলিয়াছে। ঠিক মনে নাই, বোধ করি আঙ্গুনের সাথে চিত্রাঙ্গদার প্রথম পরিচয়ের মুখট-খাস জমিয়া উঠিয়াছে। এমন সময়ে সে অস্থভৰ প্রবাসী--অগ্রহায়ণ, ১৩৩৮ [e>* छांनं, २घ्न थ७ করিল, জোড়াগাছের পিছনে কেহ আসিয়া দাড়াইয়াছে । সেখানে চিত্রাঙ্গদার আসিবার ত সম্ভাবনা নাই। পশুপতি ভাবিল, হয় পানিপাড়ে কি পয়েণ্টসম্যান, নয় ত ছাগলে গাছের পাতা থাইতে আসিয়াছে । অতএব না ফিরিয়া পাতা উলটাইতে যাইতেছে, এমন সময়ে কাচের চুড়ি বাজিয়া উঠিল। তাকাইয়া দেখে, বছর আষ্টেকের একটি মেয়ে, মুখখানার চারিপাশে কালে কালে চুলগুলি ছড়াইয়া পড়িয়া আছে । পশুপতি স্পষ্ট দেখিতে পাইল, মেয়েটির বড় বড় চোখ দুটির উপর লেখা রহিয়াছে, সে ঐ পাতার ছবিগুলি ভাল করিয়া দেখিবে । আপিস-ঘরে টেলিগ্রাফের কল টক্‌টক্‌ করিয়া বাজিয়া যাইতেছিল এবং লাইনের উপরে ইঞ্জিন একটানা শব্দ করিতেছিল—ইস সূ-স। জাজ পশুপতি ভাবিতেছে সে-সব নিছক পাগলামি, সেদিন কিন্তু সত্যসত্যই তাহার মনের মধ্যে এইরূপ একটা ভাবাবেশ জমিয়া জাসিয়াছিল যেন স্থবিপুল ব্ৰহ্মাণ্ডও তাহার গতিবেগ থামাইয়া স্নান অপরাহ্ল-আলোয় মেয়েটির লুব্ধ ভীরু চোখ দুটিকে সমীহ কৰিয়া প্লাটফরমের ধারে চুপটি করিয়া দাড়াইয় গেল । জিজ্ঞাসা করিল—খুকী, ছবি দেখবে ? দেখ না— কেমন খাসা খাসা সব ছবি । অনুরোধের অপেক্ষামাত্র। তৎক্ষণাৎ মেয়েটি সেই মরিচা-ধরা ওজন-যন্ত্রের উপর বিনাদ্বিধায় পশুপতির পাশে বসিয়া পড়িল । পশুপতি ছবির মানে বলিয়া দিতেছিল, সে নিজেও পশুপতির পাণ্ডিত্যের মধ্যাদা না রাখিয়া সঙ্গে সঙ্গে বানান করির পড়িতেছিল, এমন সময়ে ঘণ্টা দিল, ইঞ্জিন ঠিক হইয়াছে—এইবার ছাড়িবে। পশুপতির মনে হইল, অতিরিক্ত তাড়াতাড়ি করিয়া ইঞ্জিন ঠিক হইয় গেল। মেয়েটির মুখখানিও হঠাৎ কেমন হইয়া গেল— তাহার ছবি দেখা তখনও শেষ হয় নাই সে-কথা মোটে না ভাবিয়া রেলগাড়ী তার স্বদীর্ঘ জঠরে ছবির-বই-সমেত মানুষটিকে লইয়া এখনি গুড়গুড় করিয়া বিলের মধ্য দিয়৷ দৌড়াইবে—বোধ করি এইরূপ ভাবনায়। বইখানি মুড়িয়া নিজেই সে পশুপতির হাতে দিল, কোন কথা বলিল না।