পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سbb\ھ ঐ শহরটি ছেড়ে বেরিয়ে পড়াই জীবন বাঁচানোর একমাত্র উপায়। কিন্তু আমার অন্তরের ডাক্তারটি যে হতাশ হ’য়ে পড়েছিল।-- কিছু দিন হ’ল বম্বে এসে একটা ষ্টুডিও খুলেছি, কাজ নিয়েছি । জীবনটা কোনও কাজের ভিতর বিক্ষিপ্ত হ’তে চাচ্ছিল, কৰ্ম্মহীন অলস জীবনের অবিচ্ছিন্ন ব্যথাভর চিন্তায় যেন পুড়ে পুড়ে ছাই হ’য়ে যাচ্ছিলেম। কাজের নেশায় একটু যেন সাম্লে নিয়েছি । আমার ছবিতে ষে-মুখের আদরা ফুটে ওঠে ত৷ আমার বুকের রক্তে কল্পনার তুলিতে লেখা । একটা বায়োস্কোপের কাজ পেয়েছি ; সেখানে মাঝে মাঝে যে দৃপ্ত দেখান হয় তার প্লট ছবি সবই আমার তৈরী। তা গল্প নয়, বলতে গেলে আমার জীবনের ক’টি পাত। তা দেখে’ দর্শকেরা যখন প্রশংসায় উচ্ছসিত হয়ে ওঠে আমি তখন ক্টোচার খুটে চোখ মুছি। কিন্তু বুকের ব্যথা কালির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলবার একটা দুঃখ-ভরা স্বথ আছে। যাকে চেয়েছিলেম এব যাকে না পেয়ে জীবনট একেবারে ব্যর্থ বলে’ বোধ হচ্ছিল সে যেন অতর্কিতভাবে আমায় ধরা দিয়ে যায় আমার তুলির ংএর ভিতর .সে-দিন অভিনয়-শেষে যখন নিজের ঘরে এই-সব নানা কথা ভাব ছিলেম তখন নিৰ্ম্মল-বাবু - তার ফোটোর তাগিদ দিতে এলেন। লোকটি ক’দিন ধরে ক্রমাগত তাগিদের চোটে আমায় উদ্‌বাস্তু করে’ তুলেছিল। শুনেছিলেম স্ত্রী মারা যাবার পর তিনি আবার বিয়ে করা স্থির করেছেন। এ-শ্রেণীর লোক, যারা প্রেম নিয়ে ছিনিমিনি পেলে, তাদের প্রতি কোন কালে আমার শ্রদ্ধা নেই। তিন-তিন বারের ফোটে। তিনি বাতিল করায় আমি ধারণা করে ফেলেছিলেম তার উদেশ্ব কৃত্রিমতার ছোপে চেহারাপান বিশের কোটায় টেনে নেওয়া। স্ত্রীর সঙ্গে বয়সের ব্যবধানটা অনেকে কৃত্রিম উপায়ে ঢাকৃতে চেষ্টা করে। আমি তখন কল্পনার তুলিতে প্রেমের স্বৰ্গীয় সুষমা জাকৃছিলেম। এই অপ্রেমিকের আবির্ভাবে ভারি বিরক্তি বোধ হ’ল । বাস্তবিক মানুষ একদিন যাকে নিজের সৰখানি দান করে, তার মৃত্যু হ’তে না হতে সে সব প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড দানের জিনিষ আবার অপরকে তুলে দেয় কি করে ? আমার মনে হয়, যতদিন উপভোগের উপায় থাকে মাহুষের প্রেম ততদিন বেঁচে থাকে, আর ধেদিন সে উপায় লোপ পায় প্রেমও সেদিন মরে’ যায়। ছি ! ছি:! মানুষ প্রেমটাকে কি ছোট করে ফেলে ।. নিৰ্ম্মলের কথা মানুষ পরকে প্রবঞ্চনা করে” কিন্তু নিজকেও যে এত ফাকি দেয় এর আগে আমি তা জানডেম না। দু’বছর আগেকার কথাটাই ভাবি, যখন প্রথম বিয়ে করি। উজ্জল বিবাহ-সভায় তার সরম-কম্পিত তুলতুলে হাতথানি হাতে ধরে যখন তাকে জীবন-মরণের একমাত্র সঙ্গিনী বলে’ স্বীকার করেছিলেম, তখন কিন্তু ঐ স্বীকারোক্তিটাকে এতটুকু সন্দেহ আমার হয়নি। তারপর দুটি জীবনের ভিতর বিরহ-মিলন মান-অভিমানের লুকোচুরি আমাদের চারপাশে সাতটি-রংএ-ঝলমল যে ইন্দ্ৰধন্সটি গড়েছিল, ভেবেছিলেম পৃথিবীর সমস্ত আঁধারের মাঝেও এইটি আমাদের বুক আলোকিত করে রাখবে।. কিন্তু তার মৃত্যুর পর দু'টি বছরও আমার সে প্রেম বেঁচে রইল না। হয়ত থিয়েটারের অভিনেতার মতনই আমি পার্ট বদলে আবার আসরে নাবৃতেম, যদি না একটি প্রেমিক তার জীবনের কষ্টিপাথরে আমার নীচ আচরণটা কষে দেখাত।.তার কথাটাই আজ বলব। বঙ্গের এক চিত্রকর, চিত্র একে ইনি বেশ নাম করেছিলেন। তাকে আমার একটি ফোটাে তৈরী করতে দিয়েছিলেম, আমার ভাবী স্ত্রীকে উপহার দিবার জন্যে । ষোল আর তিরিশ, বয়সের ব্যবধানটা কিছু আকাশপাতাল নয়, তবু দোজবর বলে’ যদি আমার ত্রিশ বছরটাকেই সে চল্লিশ বলে ভুল করে বসে সেই ভয়ে তিনটি ফোটাে বাতিল করে চতুর্থবার লজ্জার মাথা খেয়ে তাকে ফোটােখানি রিটাচ করতে বলেছিলেম। শেষদিন ফোটোগ্রাফারের জেরায় বিরক্ত হ’য়ে উঠেছিলেম, কিন্তু তার মুখেও আমন ঘৃণার রেখা ফুটে উঠবার কি কারণ হতে পারে প্রথমটা তা বুঝতে পারিনি। সে বললে—“মাজুষের আদত যা, তার উপর মিথ্যার ছোপ দেওয়া অপরের পক্ষে