পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] তাহার স্বতন্তু বিচার হইতে পারে ও হওয়া উচিত । এই বিচার করিবার মত সব খবর আমাদের জানা নাই। তবে এই কথা বলিতে পারি, যে, আমরা স্বভাষ-ৰাবুর কপিষ্ঠত, কাৰ্য্যনিৰ্ব্বাহের স্বগৃঙ্খল ব্যবস্থা করিবার ক্ষমতা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশংসাই শুনিয়াছি। অভিজ্ঞতার কথা অবগু উঠিতে পারে। কিন্তু উহারও দুই দিক্‌ আছে। অভিজ্ঞতার গুণের দিকৃট সকলেই জানেন বা অনুমান করিতে পারেন। উহার অন্য একটা দিক আমরা সব সময় মনে রাখি না । কোন একটা প্রতিষ্ঠানের দোষ থাকিলে, তাহা অভিজ্ঞ লোকদের গা-সওয়া হইয়া যায় ; তাহা আর র্তাহাদিগকে পীড়া দেয় না। তাহার একট। দৃষ্টান্ত দেখুন। যখন বাবু স্বরেন্দ্রনাথ মল্পিক মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন, তথম তিনি মিউনিপ্যালিটির একজন বড় চোর ধরিয়াছেন, এইরূপ সংবাদ কাগজে বাহির হয়। কিরূপে বাৰু বিজয়কৃষ্ণ বস্থর সাহায্যে চোর ধরিলেন, তাহার এমন বর্ণনা কাগজে বাহির হইয়াছিল যেন বায়োস্কোপে প্রদশিত ঘটনার মত তাহা পাঠকদের চোখের সাম্নে ঘটিতেছে । তাহার পর যে কি হইল, তাহ আর শোনা গেল না ; এবং পরেও আর তিনি কোন চোরের বিরুদ্ধে অভিযান করিয়াছিলেন বলিয়া শুনি নাই । বোধ হয়, চেীয্যট। প্রথমে তাহার মনকে যত আঘাত করিয়াছিল , পরে ক্রমে ক্রমে আর ততটা করে নাই—উহ! গা-সওয়া হইয়া গিয়াছিল ; কিম্বা তিনি চোর ধরা-রূপ সংকাজটা হয়ত পরে গোপনেই করিয়! থাকিবেন.। অন্ত কারণও থাকিতে পারে । এইটি অভিজ্ঞতার মন্দ দিক্ । অবশ্ব এমন লোকও পৃথিবীতে আছেন, যাহারা ক্রমাগত দোষ দেখিলেও, দোষগুলা তাহীদের গা-সওয়া হয় না। কলিকাতা মিউনিসিপ্যালিটির কোন ভূতপূৰ্ব্ব চেয়ারম্যান আমাদিগকে ঐ প্রতিষ্ঠানটিতে উৎকোচ-গ্রহণ ও চেয্যের প্রাচুর্ভাবের কথা বলিয়াছিলেন ; এক্ট কারণে কেহ কেহ ইহাকে ক্যালকাটা করপোরেশ্বন না বলিয়া ক্যালকাটা করাপখন বলিয়া থাকেন। অতএব এই সব দোষের সহিত অতিপরিচয়ে বা তৎসমুয়ের সহিত নিত্য-সংঘর্ষে যাহাদের হৃদয়মনে কড়া পড়িয়া যায় মাষ্ট, এমন কোন কশ্মিষ্ঠ প্ৰ বিবিধ প্রসঙ্গ—স্বরাজ্যদল ও চাকরার যোগ্যতা

ፃፃ

সংলোক ইহার প্রধান কৰ্ম্মী হওয়া মন্দ নয়। তা ছাড়, পুরাতন কাটায় ঘরে যে সব জায়গার আবর্জন ও ময়লা সাফ হয় না, নুতন বাটায় তাহা হইতে পারে। বিশেষ কোন দলের লোক বলিয়াই কাহাকেও চাকরী দেওয়াতেই আমাদের আপত্তি। বঙ্গীয় প্রাদেশিক ংগ্রেস্-কমিটি এক প্রস্তাব ধধ্যে করেন, যে পুরাদস্তুর অসহযোগী কংগ্রেসওয়ালাকেই যেন কলিকাত মিউনিসিপ্যালিটির প্রধান কাৰ্য্যনিৰ্ব্বাহক ও ডেপুটি কাৰ্য্যনিৰ্ব্বাহক কৰ্ম্মচারী নিযুক্ত করা হয়। আমরা এরূপ প্রস্তাব ও তাহার ভিত্রীভূত নীতির সম্পূর্ণ বিরোধী । ভারতীয় খবরের কাগজসকলে যে যে বিষয়ে ভারতের মুসলমান গবৰ্ণমেণ্ট কে ব্রিটিশ গবর্ণমেণ্ট, অপেক্ষ শ্রেষ্ঠ বলা হয়, তাহার মধ্যে একটি এই, যে, মুসলমান আমলে হিন্দুদিগকেও অভিযানে ও অন্ত সময়ে প্রধান সেনাপতি, প্রাদেশিক শাসনকৰ্ত্তা, প্রভৃতি উচ্চ পদ দেওয়া হইত ; এবং তাহা “পিত্তি-রক্ষা” নীতি অনুসারে দেওয়া হইতনা । শ্রেষ্ঠ বলিবার কারণ কি ? কারণ এই যে, জাতি বা ধৰ্ম্মের বিচার না করিয়া যোগ্যতম লোককে অনেক কাজ দেওয়া হইত। ইংলণ্ডে পূৰ্ব্বে ইহুদী ও রোম্যান ক্যাথলিকৃদিগকে চাকরী দেওয়া হইত না । কিন্তু আধুনিক কালে ইহুদী ও রোম্যান কাথলিকগণও অতি উচ্চ পদে নিযুক্ত হইয়াছেন । যেমন রোম্যান ক্যথলিক লর্ড রিপন ভারতের বড়লাট হইয়াছিলেন,ইহুদী লর্ড রেডিং বড়লাট হইয়াছেন, ইত্যাদি। ইংলণ্ডের লোকের কেবল প্রটেষ্টাণ্ট খষ্টিয়ানদিগের মধ্য হইতে কৰ্ম্মচারী নিয়োগ না করিয়া অন্ত ধৰ্ম্ম-সম্প্রদায় হইতেও করায় বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়াছেন । বৰ্ত্তমান সময়ে শ্রমিক গবর্ণমেণ্ট, মন্ত্ৰীসভায় পৰ্যন্ত অ-শ্রমিক লর্ড চেম্স্ফোর্ডকে লইয়াছেন। অন্যান্য সভ্য দেশেও ধৰ্ম্মসম্প্রদায়নিৰ্ব্বিশেষে সরকারী চাকরী দেওয়া হইয়া থাকে। ভারতবর্ষের বর্তমান গবৰ্ণমেণ্ট, পৃষ্টিযান্‌ গবৰ্ণমেণ্ট ; কিন্তু চাকরী অখুষ্টিয়ানদিগকেও দেওয়৷ ই য়ু । মানুষের উপর ধর্মের প্রভাব যেরূপ ব্যাপক, গভীর ও প্রবল, রাজনৈতিক মতের প্রভাব তেমন নয় ; এবং প্রত্যেক ধৰ্ম্মের অমুৰত্ৰীগণ মিজ সম্প্রদায়ের লোকদিগকে স্বভাবতঃ অন্য সম্প্রদায়ের লোকদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে