পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] লুকিয়ে রাখা হয়েছে ; আর ঐ খাবার-টেবিলে বসেই ওর বাপ-মারা শুকনো রুটি ছাড়া আর-কিছুই খায় না।" —ও: আনাই, এই কথা শুনে আমার কি কষ্ট হ’ল তা বুঝতেই পাৰ্বছ । ওরা আমার মুখের জন্য কত লালায়িত । আমার এই . অন্ধকারের মধ্যে ওরা আমাকে-কেবল আমাকেই নানাপ্রকার বিলাস-সামগ্ৰী দিয়ে সুখে রাখতে চান। ও ! কি আশ্চৰ্য্য সেবা-যত্ন । এই ঋণ শত বৎসরেও আমি পরিশোধ করতে পারব না । ৪.পত্রে বাড়ীর দুরবস্থার এই গুপ্ত কথাটা আমি যে আন্দাজে জেনেছি— তা আমি কারও কাছে প্রকাশ করিনি । দারিদ্রোর কথাটা আমার কাছে লুকিয়ে রাখবার সব চেষ্টা যেন ব্যর্থ হয়েছে—এ কথা মা জানতে পারলে একেবারে অভিভূত হ’য়ে পড়বেন । আমায় সৰ্ব্বদাই দেখাতে হবে, যেন আমাদের বাড়ীর ভাল অবস্থার সম্বন্ধে আমার খুবই বিশ্বাস আছে। কিন্তু আমার বাড়ীকে রক্ষা করব বলে আমি घृझ्नकन्न श्रब्रश्।ि আমার প্রণয়াকাঙ্গীর নাম এণ্ড মও” । তিনি আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন—ভগবান যেন আমাকে মার্জন করেন — রঙ্গিণীর মতে হাব-ভাব দেখিয়ে তার মন ভোলাবার একটু চেষ্ট করতে লাগলেম । আমি বললেম – “আমার উপর এখনো কি আপনার সমান ভালবাস আছে ?” তিনি বললেম – “ই, আমি তোমাকে ভালবাসি, কারণ তোমার যে রূপ-লাবণ্য, সে একটা উচ্চধরণের রূপ-লাবণ্য—অতি নিৰ্ম্মল, বেশ লজ্জানত্ৰ ।

  • আর আমার দেহের গঠন ?” —“দ্রীক্ষালতার মতো সুন্দর ও স্বললিত" । —আঃ–আর আমার ললাট ?” —“গজদস্তুের মতো প্রশস্ত ও মন্মণ—ও-ললাটের কাছে গজদন্তুও

হীর মানে ৷” —“সত্যি ?” এই কথা বলে আমি হাসতে লাগলেম । “একথায় তোমার এত মজা লাগল কেন ?” “আমার মনে হ’ল, যেন তুমি আমার দর্পণ । তোমার কথার ভিতর দিয়ে আমি নিজেকে দেখতে পাচ্ছি।” “প্রিয়তমে, তুমি চিরদিন এইরকমই আমাকে ভেবে ।” “তুমি রাজি আছ ? তা হ’লে—” “আমি নির্ভল দর্পণের মতে, তোমার রূপ, তোমার গুণ তোমার কাছে প্রতিফলিত করতে আমি রাজি আছি । তুমি আমার স্ত্রী হবে বলে সম্মতি দাও । আমার একটু সম্পত্তি আছে। তোমার কিছুরই ”অভাব হবে না। আর আমি প্রাণপণে তোমাকে স্বর্থী করতে চেষ্টা করব। এই সময় আমার বাপ-মার কথা মনে এল । আমি ভাবলেম, একে যদি আমি বিবাহ করি, তা হ’লে তার ঋণ-ভার হতে মুক্ত হতে পারবেন। আমি উত্তর করলেম – “কিন্তু এই বিবাহে তোমার আত্ম-মর্য্যাদার হানি হবে । আমি তোমাকে দেখতে পাব না।” তিনি বললেন –“হায় হায় —একটা কথা আমারও তোমাকে জানানো আবশ্যক।” “—কথাটা কি ?—শুনি ।” —“আমি প্রকৃতি-দেবীর একটি কুৎসিত সন্তান । আমার মুখেতেও কোন সৌন্দৰ্য্য নেই—আমার চলন-ভঙ্গীতেও কোন গাম্ভীৰ্য্য দর্পণ ‘ව්ෆ් (R


- ------- - ---- تہہ ۔۔۔ہ-میسسہمے مہتمم۔--سی-سید م۔م۔

নেই। আমার চূড়ান্ত দুর্ভাগ্য হচ্চে—দারুণ বসন্ত রোগের ক্ষতচিহ্নে আমার মুখ আচ্ছন্ন। অতএব, আমি যে একজন অন্ধ বালিকাকে বিবাহ করছি—তাতে আমার স্বার্থপরতাই প্রকাশ পাচ্ছে । এতে আমার নম্রতা প্রকাশ পাচ্ছে না।” আমি তার দিকে আমার হাত বাড়িয়ে দিলেম । “আমি জানিনে নিজের উপর ভূমি কতটা কঠোর হচ্ছ কিন্তু আর যাই হোক আমার বিশ্বাস তুমি খুব খাটি লোক। আমি যেমনটি আছি তুমি তবে আমাকে ঠিক সেইভাবে গ্রহণ করে । তোমার চিস্ত ত’ত্তে কিছুই আমাকে বিচলিত করতে পারবে না । আমার এই অtধার মরুভূমিতে তোমার প্রেমই আমার হরিৎকুঞ্জ;হবে।” আমি ঠিক্‌ কাজ করছি, কি ভুল করছি আমি জানিনে। কিন্তু এটা জানি, আমার বাপ-মাকে উদ্ধার করবার জন্তই আমি এই কাজে প্রবৃত্ত হচ্ছি। হয়ত, হাতড়াতে হাতড়াতে আমি ঠিক্ রাস্তাটা ধবৃতে পেরেছি। & পত্ৰ তোমার এবারকার পত্রে তুমি প্রিয় সখীর মতো আমার প্রতি কত স্নেহ-মমতা প্রকাশ করেছ—আমাকে প্রশংসা করেছ—আমাকে অভিনন্দন করেছ ; এইসবেতেই পত্ৰখানি ভরা। ই ভাই, দুই মাস হ’ল আমি বিবাহ করেছি। নারীদের মধ্যে আমার মতে স্বর্থী আর কেউ নেই। আমার কিছুই আকাজ করবার নেই। আমার স্বামীর আমি হৃদয়-পুত্তলী, আর আমার বাপ-মায়ের আমি আদরের বস্তু । তারা আমাকে ত্যাগ করেননি। আমার অন্ধতার জন্ত আর আমি দুঃখিত নই। "এণ্ড মণ্ডের দৃষ্টি আমাদের উভয়ের উপরেই আছে। যে-দিন আমাদের বিবাহ হয়, আমার দর্পণ আমার জাকালে “ক’নে-সাজের” কথা আমার কাছে প্রকাশ করেছিলেন । আমার অবগুণ্ঠনটি অতি স্বন্দর হয়েছিল—আর আমার নেবু ফুলের মালা-গাছিতে আমাকে খুব মানিয়েছিল। কোন আসল দর্পণ এর চেয়ে আর কি বেশী করতে পাৰ্বত ? সন্ধ্যার সময় আমরা দু-জনে বাগানে বেড়াই। সেখাকার ফুলের গন্ধে, পাখীর গানে, ফলের আস্বাদে ও কোমল স্পর্শে আমি মুগ্ধ। কখন কখন আমরা থিয়েটারে যাই এবং সেখানেও, আমার অন্ধ চোখ যা দেখতে না পায়, ওঁর বর্ণনার গুণে আমি সে-সমস্ত মানস-পটে দেখতে পাই। উনি বলেন, উনি দেথতে কুৎসিত, তাতে আমার কি এসে যায় ? কোনটা সুন্দর, কোনটা কুৎসিত, আমি ত এখন বুঝতে পারিনে, আমি শুধু বুঝতে পারি স্নেহ-মমতা—ভালবাসা । ভাই আনাই, আজ তবে এইখানেই বিদায় হই—আমার স্বখে তুমি স্বর্থী হও । که و ভাই আনাই, আমি মা হয়েছি । একটি ছোট মেয়ের মা । কিন্তু আমি তাকে দেখতে পাইনে। সবাই বলে, এমন মিষ্টি দেখতে হয়েছে, যে চোখ ফেরানো যায় না। তারা বলে, উটি আমার জীবন্ত ক্ষুদে-নমুনা, কিন্তু সে-সম্বন্ধে আমি কিছুই বলতে পারিনে। ওঃ ! কি বলবতী মায়ের ভালবাসা । আমি যে নীল আকাশ দেখতে পাইনে, ফুলের শোভা দেখতে পাইনে, আমার স্বামীর মুখশ্ৰী, আমার বাপ-মায়ের মুখশ্ৰী দেখতে পাঙ্গনে—সমস্তই ত আমি অম্লানবদনে সঙ্ক করে এসেছি— কখনো আক্ষেপ প্রকাশ করিনি। কিন্তু আমি যে আমার বাছাটিকে দেখতে পাব ন—এ আমার পক্ষে অসঙ্ক । ও: , আমার চোশের