পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] S S ASAAAA AAAA AAAA AAAA AAAA AAAAMAAAS AAAAA AAAA AAAASAAAAM খুলে ধরলেন। চিরঞ্জাব-বাবু সবে মুক্তির নিশ্বাস ফেলতে যাবেন এমন সময় গাড়ীর ভিতর হ’তে “আহা, বাচালে বাব, কিছুতে দোর খুলতে পারছিলুম না,” বলে’ | অশীতিপর বৃদ্ধ এসে দরজ জুড়ে দাড়াল। তার পর সিড়ির ধাপে ধাপে বসে অতি কষ্টে সে প্লাটফর্মে নেমে পড়ল। প্রথমেই গুধি পেয়ে ক্রুদ্ধ চিরঞ্জীব-বাবু চীৎকার করে উঠলেন, “মবু বুড়ী, আর নাম্বার জায়গা পেলি না ।” তার পর আর কোনোদিকে ভ্রুক্ষেপও না করে’ সলম্ফে তিনি সকলের আগেই গাড়ীতে উঠে’ পড়লেন । গৃহিণী নিদ্ৰালু ও করুণ স্বরে নীচ থেকে বললেন, “ওগো ধর না হাতখনি, উঠতে পারছি না।” কৰ্ত্তার হাত ধরে ও ঝির ধাক্কা খেয়ে ক্ষীণবৃন্তের পুষ্টফলের মত পানের ডিবা সমেত গৃহিণী কোন প্রকারে উঠলেন । দুইটা প্রকাও ঝুড়ি মাথায় কুলি আবার পথ রোধ করলে - নীচ হ’তে নারীসঙ্ঘ তারস্বরে চীৎকার করে উঠতেই ঝুড়িতে ঠেলা দিয়ে ভিতরে সরিয়ে দিয়ে কুলির সরে দাড়াল। ক্রমে ফেলি, ননী, হাবি, টেবি সকলে একে একে সিড়ি অঁাকৃড়ে উপরে উঠতে স্বরু করলে । গাড়ী ছাড়বার সময় উত্তীর্ণ হ’য়ে গেল। ষ্টেশনমাষ্টার চেচামেচি লাগালেন, “মশায়, তাড়াতাড়ি করুন, গাড়ী আর পাচ সেকেণ্ড দাড়াবে।” চিরজীব-বাবুর ইচ্ছা করছিল নেমে অকৃতজ্ঞ লোকটাকে দুই-চার ঘা দিতে, কিন্তু তখন আর সময় ছিল না ; ইতিমধ্যে তিনটি ঝি হাউ মাউ করে’ বাড়ীর মেয়েদের ঠেলে'-ঠলে তাড়াতাড়ি গাড়ীতে উঠে পড়ল। ভৃত্য ও সঙ্গী যুবকটি পাশের একট। গাড়ীর দিকে দৌড় দিলে। নিরভিভাবক মেয়ের। অগত্যা নিজেরাই নিজেদের পথ দেখতে বাধ্য হলেন । গাড়ী ছাড়ার সঙ্গে-সঙ্গেই গাড়ীর ভিতরে একটা তুমুল কলরব পড়ে গেল। ঠিক যেমন হওয়া উচিত ছিল তেমনটি না হওয়ার বিরত্তিতে চিরঞ্জীব-বাবুর গা রি রি করছিল। তিনি গায়ের ঝাল ঝেড়ে মেঝেতে উপবিষ্ট পরী-বিকে লাঠির একটা খোচা দিয়ে বললেন, “ঠাই জুড়ে বস্লি যে? জিনিষপত্র কি কি উঠেছে না উঠেছে দেখৃতে হবে না ?” পর তার কাল মুখখান নাড়া দিয়ে বললে, “কি কি ছেল হারানিধি Q>" আমি কি জানি যে দেখ ব?” চিরঞ্জীব বললেন, “তুই জানিস্ মা ত কি ওপাড়ার ভেমো গয়লা জানে ? চটে-মোড়া বিছানাটা উঠেছে কিনা দেখ দিকি ” ঝি এদিক-ওদিক চেয়ে বললে, “দেখছিনাত তেনাকে ।” প্রথম কথার উত্তরেই এমন কানজুড়ানো খবর পেয়ে চিরঞ্জাব জ্যামুক্ত ধনুকের মত বেঞ্চি হ’তে ছিটুকে সোজ উঠে দাড়িয়ে বললেন, “দেখছিস্ না কিরকম ? চোখের মাথা থেয়েছিল না ফেলে’ এসেছিস্ ইষ্টিশানে ? দাড়াও, বার করছি ম্যাক্টরের আম সন্দেশ খাওয়া । গিরি, জিনিষ কি কি ছিল বল ত, মিলিয়ে দেখি ।” সারাদিনের পরিশ্রমে ও গরুর গাড়ীর ঝণকৃরানিতে গৃহিণীর স্কুল দেহ তখন অতি ক্লাস্ত। তিনি ঘুমভরা চোখছুটি কোনপ্রকারে খুলে হাই তুলে চিবিয়ে চিবিয়ে বললেন, "জিনিব ? জিনিষ ত অনেকগুলি ছিল । আমার বড় পটুলি, ছোট পুট্‌লি, হাবির তোরঙ্গ, বড়দিদির তরকারির ঝোড়া”. । গৃহিণীর চোখ ঢুলে এল । কৰ্ত্তা বললেন, “থাম, দেখি আগে এইগুলোই আছে কি না। পরী, বড় পুটুলিটা আন দেখি।” পরী ছুটে হাত একসঙ্গে নেড়ে বললে, “সে উঠে নাই, কৰ্ত্তা । হাদু ছোড়া অন্ধকারে আমার পায়ের উপর ছোট মামীমার গয়নার বাস্কাটা ফেলে দিলে। দরজে মরি মা—পুটুলি উঠাব কি ?” কৰ্ত্ত পা ঠুকে দাত খিচিয়ে বললেন, “পায়ে বাক্স পড়েছিল ত পুটুলি উঠাস নি কেন পোড়ারমুখী ; হাত দুখানাও কি পসে গিয়েছিল ?” পরী সচ্ছন্দে হেসে বললে, “ই কি মেয়ামাহুষের কাজ কৰ্ত্তা ! কোথা তুই আর কোথা রেল। স্বগ গে পা দিয়ে দিয়ে তবে রেলে চাপতে হয়, পুটলি নিয়ে নাগাল পাব কি করে’ ?” جيو কর্তা উত্তর দিবার আগেই গৃহিণী জড়িত-স্বরে বললেন, “বড় পুটুলিতে যে ননী, হাবি, টেবির সব ধোবো কাপড়গুলি ছিল মা। ফেলির বেগমডুরে শাড়ী, নেবুর ইষ্টকিং মোজা, টুপীর ভেলিভেটের জাম, সব একত্তরে বেঁধেছিলাম। হ্যা পরি, সত্যি উঠা নাই পুটুলি ? কি হবে মা ! ই্যাগা ডাকূলে রেল থামৃবে না ?”