পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NV8 ই বলতে চাচ্ছ ত ? কিন্তু তুমি ভুলে যেয়ে না যে, মি স্থমিত্রার মা ! আমার আদেশেও সে অনেক নিষ করতে পারে ?” একমুহূৰ্ত্ত চুপ করিয়া থাকিয়া প্রমদাচরণ র্তাহার য়ার হইতে ধীরে ধীরে উঠিয়া দাড়াইলেন ; তাহার বিমানবিহারীর দিকে ফিরিয়া শাস্তকণ্ঠে বলিলেন, মাজ আমাদের আর ও-আলোচনাটা শেষ হ’ল না মান ; থাকৃ, অন্ত দিন হবে । বাইরে যেমন দুর্যোগ লছে, তেমনি আজ সকাল থেকে আমাদের ভেতরেও Ifলযোগ চলেছে ! তুমি ধেয়ে না ; বসে, গল্প-টল্প র ।” তাহার পর সুমিত্রার নিকট উপস্থিত হইয়া iহার মস্তকের উপর দক্ষিণ হস্ত স্থাপন করিয়া স্নিগ্ধণ্ঠে কহিলেন, “মাতৃ-আদেশ লঙ্ঘন করতে তোমাকে rমি উপদেশ দিচ্ছিনে মা, তবে তোমার মঙ্গলের ন্যে যদি একান্তই আবস্ত্যক হয়, তা’ হ’লে পিতৃ:াদেশেরও তোমার অভাব হবে না, এ-কথা তোমাকে Iামি শুনিয়ে রাখলাম।" বলিয়া প্রমদাচরণ ধীরে ধীরে ক্ষ হইতে বাতির হইয়া গেলেন । সে-সময়ে স্থমিত্রার চক্ষু হইতে টপ টপ করিয়া অশ্রু পড়িতেছিল, তাহা আর কেহও লক্ষ্য করিল 1, শুধু প্রমদাচরণই যাইবার সময়ে দেখিয়া গেলেন । ! 2 ৯ | প্রশ্নদাচরণ যে ব্যাপারটা করিয়া গেলেন, তাহা বিবাদ হে, কলঙ্ক নহে, তর্কও নহে ; তাহার মধ্যে কটুক্তি ছিল rা, ক্রোধ ছিল না, এমন কি উত্তেজনা ও ছিল না ; তথাপি প্রমদাচরণ প্রস্থান করিবার পর ক্ষণকালের জন্য জয়ন্তী ভীর বিস্ময়ে অভিভূত হইয়। রহিলেন । স্থমিত্রার প্রতি উৎপীড়ন হইয়াছে কল্পনা করিয়া তাহার প্রতিবাদ, এবং প্রয়োজন হইলে তাহার প্রতিকার করিবার ইচ্ছা জ্ঞাপন, প্রমদাচরণ যে এমন করিয়া করিতে পারেন তাহার সম্ভাবন। প্রমদাচরণের একটানা অবিসংবাদী জীবন ও প্রকৃতির মধ্যে কোথায় যে ছিল তাহ জয়ন্তী ভাবিয়া পাইলেন মা ! যে-জিনিষ কখনও বিচলিত হয় নাই, তাহা চলিতে আরম্ভ করিলে কোথায় গিয়া দাড়াইবে তাহার প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড কোন আন্দাজ করিতে না পারিয়া জয়ন্তী মনে-মনে উদ্বিগ্ন হুইয়। উঠিলেন । কিন্তু উপস্থিত-ক্ষেত্রে ব্যাপারটাকে হালকা করিয়ু দেওয়াই সমীচীন মনে করিয়া মৃদু হাসিয়া কহিলেন, “নিজে চিরকাল জোর খাটিয়ে এসে এখন এমন হয়েছে যে, কোন বিষয়ে জোর-জবরদস্তি করা হচ্ছে বলে সন্দেহ হ’লেই ব্যস্ত হ’য়ে ওঠেন । কিন্তু এটা বোঝেন না যে, তার এ মেয়েটির ওপর-আর-সব খাটান যায়, শুধু জোর থাটানই যায় না।” ভাচার পর সুমিত্রার দিকে চাহিয়া হাসিতে হাসিতে বলিলেন, “ম। বাপু সুমিত্র, তুমি ওঁকে আমন করে, ভয় পাইয়ে দি ও না ; তুমি দেশী বিলিত মিলিয়ে কাপড় পোরে। । আর আমি নিজেও তাই ভালবাসি । যেখানকার ধে-জিনযটি ভাল হবে সেখানকার সে-জিনিষটির আদর করুব। পাঞ্জাব ধণি বাঙ্গালীদের পক্ষে আপনার শু’তে পারে তা’ হ’লে আফগানিস্থানই বা কেন হবে না, আর পুথিবীর অন্ত যে-কোন স্থানই বা কেন হবে না ? পাঞ্জাব আর বাংলাকে এক করেছে একমাত্র ইংরেজের রাজ্য-শাসনই ত ? তুমি কি বল, বিমান ?” ইহার বিরুদ্ধে বিমানবিহারীর কিছুই বলিবার ছিল ন, কারণ ইহ। তাহারই যুক্তি যাই তাঁহারই মুখে জয়স্তা একদিন শুনিয়াছিলেন । তথাপি সে আজ সম্পূর্ণভাবে সে-কথা সমর্থন না করিয়া বলিল, “ত। এক হিসাবে সত্যি বটে মা, তবে এক মুখের অথবা এক দুঃখের অধীন হ ওয়াও একত্র হওয়ার একটা মস্ত কারণ একই শাসনপ্রণালীর অস্তগত হ’য়ে পাঞ্জাব আর বাংল। যখন একইরকম স্থবিধা-অসুবিধা ভোগ করছে তখন সে-দিক্‌ দিয়ে তার যে এক সে-বিষয়ে সন্দেহ নেই । তেমনি সকল জাতের মানুষকে যখন একই পৃথিবীত বাস করতে হচ্ছে, তখন একটা খুব বড় দিক দিয়ে তারা সকলে যে এক তাও মানতেই হবে । সে-হিসাবে আপনি যা বলছেন তা ঠিক। আমার মনে হয়, ধে, শিল্প, সাহিত্য, বাণিজ্য, এসব ব্যাপার নিয়ে গণ্ডী তৈরী করে” দল বেঁধে ঝগড়া করা, এক সংসারে ঘরে-ঘরে ঝগড়া করার মতই, অন্যায়। স্বদুর ভবিষ্যতে কোনো-এক সময়ে পৃথিবীর সমস্ত মানুষ একধৰ্ম্ম একজাত হ’য়ে যাবে