পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] মা wosማ প্রস্তাব হইত ! কিন্তু ক্রমে ক্রমে লোকে এখানে বালিকা বিক্রয় আরম্ভ করে । এই কারণে বিবাহাদি প্রথা এখন উঠাইয়া দেওয়া হইয়াছে। হিমালয় বিদ্যা-প্রবন্ধিনী সমিতির প্রচেষ্টায় এই স্থানের , অন্যান্ত কুপ্রথাগুলি (জুয়াখেলা মদ্যপান ইত্যাদি ) ক্রমে উঠিয়া যাইতেছে। এই মেলার সময় এখানে নানাপ্রকার উৎসব হইয়া থাকে। তন্মধ্যে পাহাড়ী বালকদের সঙ্গীত ও নৃত্যই বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । ইহা-ভিন্ন এখানে অন্যপ্রকারের নৃত্যগীতাদিও হইয়া থাকে। তাহা ছাড়া মেলার সময় অনেক সাপুড়ে, বাজিকর ইত্যাদিরও সমাগম হয়। পাহাড়ী বালিকারা ঝুলন ক্রীড়াতেই বিশেষ আনন্দসহকারে যোগদান করে । এই মেলার আর-একটি দ্রষ্টব্য বিষয় ভিখারী-সম্প্রদায় । নানা দেশ হইতে নানা শ্রেণীর ভিখারীরা এখানে সমবেত হয় । এমন কি দাক্ষিণাত্য হইতেও অনেক ভিখারী মেলার সময় এখানে আসে । যদিও শিপির মেলা অল্প কয়েকদিন ধরিয়া বসে, তথাপি সিমলা ও তন্নিকটবত্তী পাৰ্ব্বত্য গ্রামগুলির মধ্যে এই মেলাটিতেই বেশী লোক সমাগম হয়। মা একজন বৃদ্ধ মজঞ্জা ভিখারিনী ঐ জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর সেদিন প্রাতে আমাদের চিত্রকর বন্ধু বি—র সঙ্গে দেখা করতে “মেন্ট ভ্যালেরিয়ার” গিয়েছিলেম। বি— একজন সেন পণ্টনেরলেফটেন্তান্ট । চমৎকার লোক। সেই সময় সে পাহারা দিচ্ছিল । জায়গা ছেড়ে তার কোথাও যাবার জো নেই। কাজেই ওখানে আমাদের দাড়িয়ে হ’ল। আমরা জাহাজের প্রহরী নাবিকদের মত ੋ লাগলেম। প্যারিসের কথা, যুদ্ধের কথা, অনুপস্থিত প্রিয়জনদের কথা আমরা বলাবলি করতে লাগলেম। আমাদের লেফটেনেন্ট, ভার, তখনও পূর্বের মত কলার উন্মত্ত ভক্ত, হঠাৎ আমার কথায় বাধা দিয়ে একটা ভঙ্গী করে আমার হাতটা ধরে" নিম্নস্বরে আমাকে বললে –“দেখ দেখ । কেমন ছুটি মাণিক-যোড় ।” তার ছোট্ট কটা চোখের কোণটা, শিকারী কুকুরের চোখের মত স্বলে উঠল ; সে আঙ্গুল বাড়িয়ে দুইটি বুড়ো-বুড়ীকে দেখিয়ে ৰিলে। এই বুড়ো-পুড়ী ঠিক সেই সময়, মেন্ট-ভ্যালেরিয়র মাল-ভূমিতে এসে উপস্থিত হয়েছিল । বৃদ্ধটির গায়ে চেষ্টনট্রংএর কোত্ত : বেটে, পাতল, লালমুখ, নীচু কপাল, গোল চোপ, পাচার ঠোঁটের মত নাক । বলি-রেখা-বিশিষ্ট পাখীর মত মুপ, গম্ভীর ও নিবৃদ্ধি। ছবিটা সম্পূর্ণ হয়, যদি বলি--একটা ফুলকটি কাপেটের ব্যাগ থেকে একটা বোতলের গলা বেরিয়ে আছে, আর বগলের নীচে, এক বাক্স মোরব্ব-ভবিষ্যতে প্যারিসের কোন লোক যদি এই টিনের বাক্স আবার দেখে ত পাচমাসব্যাপী অবরোধের কথা না ভেবে থাকৃতে পারবে না। জার বুদ্ধার প্রথমে আর কিছুই দেখতে পেলেম না-কেবল মাথায় একটা প্রকাও টুপী, আর গল থেকে প৷ পয্যন্ত সমস্ত শরীরে একটা শাল এটে জড়ানো । মধ্যে মধ্যে, সেই টুপীর ভিতর থেকে তার ছুচোলে৷ নাকের ডগা ও ছ’চারটি পাণ চুলের গোছ বেরিয়ে পড়ছিল।