পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৬8 ছিলেন। কতদিন তার ভালর ভালয় গেল। পরে এক পুত্র জম্মিল। তাহার অন্ন-প্রাণনের পর বিবাহ হইবে । রাজ। এই এই বাবদে প্রজার নিকট সেলামি চাহিলেন । ইতিমধ্যে রাজার পিতাও স্বৰ্গারোহণ করিলেন। কাজেই হাড়-পোড়ানি আর এক বাবদ আদির জুটিল। এক সঙ্গে তিন বাবদে, অল্প নয়, টাকার ছয় আনা, আদায় হইল। প্রজার দুঃখ হইল, রাজার প্রতি ঈশ্বর নারীজ হইলেন, মৃত্যুর পর রাজা নরক-যন্ত্রণ ভোগ করিতে লাগিলেন। ফল কথা, রাজা হৈলে পিতা হয় প্রঞ্জা হয় লেট । প্রজা-পুত্র বলি কদর আর বুঝে কেট । ইহার সাক্ষাৎ প্রমাণ, রাজা ইরিনাথ। তাহঁর সময়ে ইজারাদার প্রজার নিকট অস্তায় করিয়া এ-বাবদ সে-বাবদ করিয়৷ অতিরিক্ত কর লইতে লাগিল। প্রজা রাজার গোচরে দুশ্বের কথা জানাইল। কিন্তু, রাঞ্জ জবাব দিলেন না । পরদিন আবার প্রজী রাজার নিকট খাড় হইতে গেল, কিন্তু সে দিন রাজা পাটে বসিলেন না, দরবার হইল না । এই রوي ষ্ঠের দিন গত হইল, রাজার সঙ্গে পুনশ্চ আর দেথা হইল না। এদিকে খরচ ফুরাইয়া গেল, প্রজা নাচার হইল। প্রজা বলে পুনরপি যাব দরবারে । হএ না হএ আজিকা ফিরি না যাব ঘরে ॥ এতেক ভাবিয়া প্রজা চলিল তথন । রাজার দখলে যায়। দিল দরশন ॥ দেখে রাজা বসি আছে পাটের উপর । দরানি যাইতে না দেএ রাজার গোচর ॥ যাইতে না পায় দিল দোহাই রাজার। দেখিয়া জবাব রাজা না দিল তাহার ॥ স্বারের দরান কোন মতে যাইতে দিল না, রাজাও শুনিলেন না। প্রজাকে চোখের জল ফেলিতে ফেলিতে ফিরিতে হইল। ছয় দিনের পথ আসিয়াছিল, সম্বল আর কিছু মাত্র নাই । ক্ষুধায় আকুল হইয়া প্রজা উপবাসী রহিল। ভিক্ষণ করিয়া খাইয়া কতদিনে ঘরে ফিরিল, নিরঞ্জন পুণ্যমস্ত রাজার পাপ টুকিয়া রাখিলেন । কতদিন পরে রাজার মৃত্যু হইল। দান-ধম পুণ্য কমপহেতু বৈকুণ্ঠে স্থান হইল। তিনি সিংহাসনে বসেন, নানা উপচারে স্ববর্ণের থালে অন্ন ভোজন করেন । সবই সুখ, এক স্বালাতে তিনি ছটফট করিতে লাগিলেন। প্রজাকে উপবাসী কবুইয়াছিলেন, তাহঁীর অঙ্গে হাওয়া লাগে না, সদা গ্রীষ্মজ্বালা ভোগ করিতে লাগিলেন । ত্রিলোকের নাথের দয়া হইল, তিনি দ্বিজৰূপে দেখা দিয়া ছয় আন জ্বালা নিবারণ করিলেন। তাইারই অংশে পুত্র কৃষ্ণনাখ জন্মগ্রহণ করিরা দানধৰ্ম - পুণ্যকম দ্বারা পিতাকে উদ্ধার করিলেন । মহা ধাৰ্ম্মিক রাজা হৈল কি কহিব তার। যাহার সম পুণ্যমস্ত রাজা নাহি আর ॥ দিগ-জোড়া নাম হৈল ভাটি আর উজালি । রহিবেক নাম যশ যাবৎ মেদিণী ॥ প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ,'১ম খণ্ড • মহারাজ কৃষ্ণনাথের নাম, তাহার পত্নী প্রাতঃস্মরণীয় মহারাণী স্বর্ণময়ীর নামে ঢাকা পড়িয়াছে। কান্তনামার সম্পাদক ঠিক লিখিয়াছেন, “পৌরাণিক এবং জনশ্রুতি-মূলক চরিতাখান লইয়া কাব্য-রচনা বাঙ্গালাসাহিত্যে বহুলভাবে প্রচলিত থাকিলেও ঐতিহাসিক ও সমসাময়িক ব্যক্তিবর্গের কথা কাব্যাকারে লিপিবদ্ধ করার উদাহরণ অভিনব।" বেশী দিনের কথা নয়, মাত্র এক শত বৎসর পুবে রাজা-প্রজার কি সম্বন্ধ ছিল, কবি আমাদিগকে দেখাইয়া গিয়াছেন। সে পিতাপুত্রের সম্বন্ধ এখন দুলভ ইয়াছে। 源 পিতা রাজা পালন করে নানান যতনে । পরে মারে অবিচারে দয়া নাহি জানে ॥ অবষ্ঠ তখনও দুদস্তি প্রজা ছিল, রাজাকে মানিত না, রাজকর দিত না । কান্তবাবুর এক নূতন জমিদারীর নাম ছিল বাহিরবন্দ । বড় থল রাজ্য সেহি খল তার প্রজ । খাজনা না দেএ কাকেও নাহি মানে রাজা ॥ এক এক ব্লtয়তের জমা দুই চারি হাজার । কুঞ্জর আছয়ে বান্ধা ফিলথানীর মাঝার ॥ কাহার পুঙ্কণীর জল কেহ নাহি পাএ । কাহার জtঙ্গাল দিয়া কেহ নাহি যাএ। এত ধনবান ও খল প্রজা শাসন করিতে কাস্তবাবুকে কষ্ট পাইতে হইয়াছিল। পরে কিস্ত দয়ার শরীয় রাজার দয়া হৈল মনে । ইনসাফ করিল বাবত না দিঅ কথনে । এইরুপ কিস্ত নানা কথার মাঝে মাঝে মানুল্লা মণ্ডলের শোকধবনি উত্থিত হইয়াছে। তিনি কেন কীতিকথা লিখিতে বসিলেন ? ইহাৰ উত্তর নানাস্থানে দিয়াছেন । কিন্তু বোধ হয় আসল উত্তর, তিনি মহারাজা কৃষ্ণনাথের পুণ্যে মুগ্ধ হইয়াছিলেন । বে-সে তাইরে পুণ্যকীর্তি লিখিতে পরিবে না । ত্রিলোকনাথ ভাবিলেন, পুত্র-ভ্রাতা লৈঞা আগে মন তোলাইব । তবে ত রাজার কীৰ্ত্তি পশ্চাতে লেখাব ৷ ঃথ পায় আমার নাম না ভুলে যে জন । সেহি সে লিখিবে কীৰ্ত্তি পিতা-উদ্ধারণ ॥ હરું হেতু তিনি পুত্র ভ্রাতা মারে আমার লেখtএ আমার হাতে । পুত্র-শোকের শেল আমার রেল কলেজতে। সে সব কহিতে আনার প্রাণ জীরে জার। ঈশ্বর বাচনি লিখি হইয়া নাচার ॥ হায়রে দারুণ বিধি কঠিন তোর হিয়া । কীৰ্ত্তি লেখাইলে আমার বুকে শেল দিয়া ॥ এই যে স্বাভাবিকতা, ইহার জন্তও বাঙ্গালী পাঠক মানুল্ল। মিঞার কীতি স্মরণ করিবে । শ্রী যোগেশচন্দ্র রায়