পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] রাজপথ 塑~ ده با জয়ন্তী স্মিতমুখে কহিলেন, না কিছু করনি, এমনিই বলছি । মনে-মনে বলিলেন, ‘আবৃক্টর সাম্নে দাড়িয়ে একবার চেহারাটা ভাল করে, দেখলেই বুঝতে পারবে কি করেছ।” * : স্বমিত্রা যখন স্থির বুঝিল যে জয়ন্তী পরিহাস করি। তেছেন না, সত্য-সূতই তাহাকে তাহার অভিপ্রেত জীবন অবলম্বন করিতে বলিতেছেন, তখন আর তাহার আনন্দের পরিসীমা রহিল না। বহুমূল্য অপহৃত সামগ্ৰী ফিরিয়া পাইলে যেরূপ আনন্দ হয় ঠিক সেই আনন্দ স্বমিত্রা মনের মধ্যে উপলব্ধি করিতে লাগিলেন । সে প্রফুল্লমুখে বলিল, ‘আজ থাকৃ মা, কাল একেবারে স্বান করে আমার ঘরে ঢুক্ৰব । সেখানেই আমার সমস্ত কাপড়-টাপড় আছে ।” এ-কয়েক দিন স্থমিত্র তাহার কক্ষে একবারও প্রবেশ করে নাই । জয়ন্তী সহাস্য-মুখে বহিলেন, ‘না বাপু, তুমি আজই তোমার খদ্দরটদর পরে । মিহি কাপড় পরে আবার আর-এক রাত গরমে ছট্‌ফট্‌ করবে, তার চেয়ে তোমার ঠাণ্ড মোটা কাপড়ই ভাল।” সুমিত্রা হাসিতে-হাসিতে বলিল, “আজ মিহি কাপড়েও গরম হ’ত ন ম ।’ জয়ন্তী স্মিতমুখে বলিলেন, “তা জানি । রাপের বাড়ী যাবার দিন স্থির হয়ে গেলে তখন আর মেয়েদের শ্বশুরবাড়ী খারাপ লাগে না “ কিছু উত্তর না দিয়া স্থমিত্র উপমার উপযোগিতায় হাসিতে লাগিল । e তাহার পরিধানে একটা শান্তিপুরী শাড়ী ছিল, তৎপ্রতি ইঙ্গিত করিয়া জয়ন্তী বলিলেন, “ছেলে-বেলা থেকে আজ-পৰ্য্যন্ত এসব কাপড় দিশী কাপড় বলেই আমরা শুনে আসছি, তোমাদের হাতে পড়ে আজ এসব বিলিতী হয়ে গেল।” "... • স্বমিত্রা স্মিতমুখে বলিল, “হাতে পুড়ে না মা, বিবেচনায় পড়ে। দিশ স্বতে না হ’লে দিশী কাপড় হতেই পারে না। বিলিতী স্থতো বুনে যদি দিশী কাপড় হ’ত তা হ’লে কাঠালের রস দিয়ে আমসত্ত হবারও কোন স্বাধ নেই, আর টেম্সের জলকেও গঙ্গাজল বলা যেতে পাৱে ষ্টে [ ७२ ] ‘.... - ক্ষণকাল পরে খন্দরের পরিচ্ছদ পরিয়া হাসিতেহাসিতে স্থমিত্ৰ আসিয়া দুই হস্তে জয়ীর পদধূলি লইয়া মাথায় দিল । জয়ন্তী চাহিয়া দেখিলেন রৌদ্রদগ্ধ অবসন্ন শস্য-ক্ষেত্রের উপর বর্ষণোন্মুখ শ্যামল মেঘ আসিয়া দাড়াইলেই শস্যশীর্ষ যেমন ঈষৎ সতেজ হইয়া উঠে, স্বমিত্রার শীর্ণ-শ্লথ দেহের উপর তেমনই একটা সতেজত উপস্থিত হইয়াছে। যেন একরাত্রির বর্ষণেই সস্তপ্ত রজনীগন্ধ জীবনীশক্তি পাইয়াছে ! জয়ন্তীর প্রতি সানন্দ দৃষ্টিপাত করিয়া স্বমিত্র বলিল, মা, “তোমার অনুমতি পেয়ে খদ্দর পরে’ আজ যেমন, আনন্দ হচ্ছে এমন একদিনও হয়নি ! ইচ্ছা হচ্ছে যে একেবারে চবুকার প্রথম স্থতো দিয়ে তোমার জন্যে একখানা শাড়ী করিয়ে নিই!” জয়ন্তী হাসিতে-হাসিতে বলিলেন, “আমাকে এত নাকাল করেও যদি সাধ না মেটে তা হ’লে তাও দিয়ে ! এখন চলে, বাপের মেয়ে বাপের হাতে দিয়ে আসি !” ছেলেমামুষের মত দুই বাহু দ্বারা জয়ন্তীর কণ্ঠবেষ্টন করিয়া ধরিয়া সুমিত্রা বলিল, “কেন মা ?—আমি কি মা’রও মেয়ে নই ?” মুখে জয়ন্তী কিছু বলিলেন না, মনে-মনে বলিলেন, “মা'র মেয়ে কি না তা জানিনে, কিন্তু তুমি মা’র মাষ্টার ” ভিতরের দিকে দ্বিতলের বারাণ্ডায় প্রমদাচরণ পদচারণা করিতেছিলেন। জয়ন্তী স্থমিত্রাকে লইয়া তথায় উপস্থিত হইয়া বলিলেন, “এই নাও তোমার মেয়ে ফিরিয়ে দিতে এসেছি!” স্বমিত্রা হাসিতে-হাসিতে পিতার সম্মুখে উপস্থিত হইয়া প্রণাম করিয়া ছাড়াইল । o স্বমিত্রার পরিবর্তিত বেশ কিছুমাত্র লক্ষ্য না করিয়া প্রমদাচরণ বিমূঢ়ভাবে বলিলেন, “তার অর্থ ?” তৎপরে, •5.