পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

BS్చe . SOBO “কিসের জন্য তুমি আমায় এত অপমান করতে সাহস কর শুনি ? আমি কি বাড়ির ঝি, ন চাকর ? তার চেয়ে আমাকে দাদার কাছে পাঠিয়ে দাও, ল্যাঠা চুকে যাক।” ভট্টাচাৰ্য্য চিম্টি কাটিয়া উত্তর করিলেন, “ও, তাও যদি মাসে মাসে টাকা ক’টা ন পাঠাতে হ’ত।” কথাটা র্যাহার উদ্দেশ্যে বলা হইল এবার আর তাহার কানে গেল না। ঘরে ঢুকিয়াই তিনি সগৰ্ব্বে প্রস্তান করিয়া ছিলেন । বারান্দায় তাহার কলকণ্ঠ বাড়িখানা তোলপাড় করিয়া তুলিতেছিল “কিসের সংসার, কিসের কি. চিরদিন পরের ঘরগুয়ার আগলেই মলুম। নিজের ছেলে-বোঁকেও যদি অন্যায় কবুলে কিছু বলতে না পারি তো সে সংসারে আমার দরকার ? ঢের ঢের ছেলে দেখেছি, অমন বেী-ঘেষা ছেলেও আর দেখিনি বাপু ! আর বৌটিও কি আমার লক্ষ্মীমন্ত রে, আস নাগাদ ছেলেটা ফেল ক'রে করে হয়রাণ হয়ে গেল।” ভট্টাচাৰ্য্য বিলক্ষণ জানেন যে, লক্ষ্মী বৌমাটি মুখ ফুটিয়া একটি কথাও কহিবে না, সুতরাং তিনি নিজে যদি ইন্ধন না জোগান তাহ হইলে যুদ্ধটাও আর বেশী দূর গড়াইবে না। ধীরে ধীরে বিছান হষ্টতে উঠিয়া ছকটি কৃয়াতলায় ঠেস দিয়া রাখিম। তিনি প্রাতঃরুত সমাপন করিতে গেলেন। এটি তাহার সন্ধির প্রস্তাব। গুহিণীর চোখের অমৃথ ; তাই অন্যান্য পতিসেবাকায্যের হায় প্রতাঙ্গ প্রাতে পরম ভক্তিসহকারে হকার বাসি জলটুকুর সদ্ব্যবহারও তিনিষ্ট করিয়া থাকেন। হাতমুখ ধুইয়া আসিয়াও যখন ভট্টাচাৰ্য্য দেখিলেন যে, ছক সেইখানেই পড়িয় আছে তখন ঘরে গিয়া কিছুক্ষণ চুপ করিয়৷ বসিয়া রছিলেন।...কিন্তু পাচ মিনিট যায়, পনের মিনিট যায়, আধ ঘণ্ট। যাম, ইক ৩ার আসিবার নাম করে না। সকাল বেলার তামাক খাওয়াটা আর হয় না দেখিয় ভট্টাচাৰ্য্য অবশেষে রাগে গপ্ গপ্ করিতে করিতে বারান্দায় আসিয়া উচ্চকণ্ঠে বলিলেন, “যার চোখ খসে যায় যাবে, আমার কি ? এই আমি চল্লম বাড়ি থেকে, আর কখনও আসি তো- ” বাহিরে আসিয়া দাড়াতেই পরাণ ঘোষ দুই পা জড়াইয়৷ ধরিল। আজ তাহার বালা জোড় রাথিয়া দশটা টাকা না দিলেক্ট হইবে না, কুটুম্ববাড়ি বেহানের দাবিতত্ত্ব পাঠানো চাই-ই । সকাল বেলা এমন শিকারটা পাইয়া বুড়ার মনটা হালকা হইয়া গেল। অনেক দর কষাকষির পর ঘোষের পো সাতটাক লইয়াই সন্তুষ্ট থাকিতে রাজি হুইল । আধঘণ্টাও যায় নাই,- বুড় আবার বাড়ি ঢুকিলেন। ঘোষের পে'-কে হঠাৎ সাত টাকার জায়গায় আট টাকা দিয়া চমক লাগাইয়া দিয়া বুড়া আবার তাড়াতাড়ি বাড়ি ঢুকিলেন। আবার যেন বুড়া ইচ্ছা করিয়াই একটু বেশী কাশিয়া খড়মটাতে একটু বেশী জোরে শব্দ করিতে করিতে বারান্দা দিয়া ঘরের দিকে গেল, কিন্তু তবু বারান্দার আরএক কোণে ধিনি হাড়িমুখ করিয়া বসিয়াছিলেন তিনি ভ্ৰক্ষেপই করিলেন না । তাহা না হউক বুড় যেন দমিলেন না। কেহ চাহিয়৷ দেখিলেই দেখিতে পাঠত বুড়ার ঠোট দুইটা ঈষৎ ফাক হক্টর গিয়াছে। দাত থাকিলে তাহাও দেখা যাইত নিশ্চয় । , ঘরে ঢুকিয়াই বুড় গম্ভীরভাবে কৃয়াতলায় বাসন মাজিতে প্রবৃত্ত ক্ষিমি বিকে ডাকিয়া বলিল, আজ রাত্রেই তিনি কাশী চলিয়া বাইবেন । কাহারও যদি দরকার থাকে সে যেন আসিয়া তাহার জিনিষপত্র বুঝিয় লয়। বুড়া অনেকবার এমন কাশীতে গিয়াছেন । আসিল না । বুড়া আবার চেচাতীয় বলিলেন, কাহারও যদি দরকার থাকে সে আসিয় তাহার দাদার চিঠি দেখিয়৷ যাইতে পারে। কাল হইতে চিঠি আসিয়া পড়িয়া আছে। ইহার পর বাক্সটাক্স বাধা ছাদা হক্টয়া গেলে কিন্তু আর আমার দোষ নাই ! ধীরে ধীরে গদাই লস্করি চালে গম্ভীর মূৰ্ত্তি ঘরের দরজার কাছে দেখা দিল। বুড়া তত্ত্বপোষের উপর গাট হইয়া বসিয়া থাকিয় নিলিপ্তভাবে পত্ৰখান। দরজার দিকে ছড়িয় ফেলিলেন। আর শুকুন। ডাটার মত আঙ্গুল কমুখানি দিয়া একেবারে পালিশকরা মাথাটার বর্তমান সম্পত্তি কয়টাতে হাত বুলাইতে লাগিলেন । পত্র পড়িতে গিয়াই হাড়ি মুখখান মূহূৰ্ত্তে জালার মত হইয়াই ছোট হইয়া যায়। চিঠিখান খানিকটা পড়িয়াই বুড়ী খাটের দিকে ছড়িয়া ফেলিয়৷ চলিয়া যাইতে চাহেন—- এমন সময় আর একখানা চিঠি পায়ের কাছে আসিম পড়ে। বাকা বাক অক্ষরে বড় বড় করিয়া লেখা— দেখিয়া পড়িতে ইচ্ছাও করে আবার— এবার বুড়ী পত্রের সবটা কেই