পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ংলার পাটচাষীর সমস্যা ঐসুধীরকুমার লাহিড়ী বাংলায় পাটের চাষ, পাট বিক্রমের ব্যবস্থা, পাটের দাম প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব কি-না এ সম্বন্ধে অমুসন্ধান করিবার জন্য সরকার এক কমিটি নিয়োগ করিয়াছেন। এই কমিটি র্তাহাদের অনুসন্ধান-কাজে নিযুক্ত আছেন। তুলার বাজার নিয়মিত করিবার জন্য মধ্য-প্রদেশ ও বেরারে যেরূপ আইন হইয়াছে, বাংলায় সেরূপ কোন আইন করা ভাল ও সম্ভব কি-না, পাটের আবাদ হইতে পাট বিক্রম পৰ্য্যন্ত সমস্ত জিনিষটা নিয়ন্ত্রণ করিবার জন্য একটা স্থায়ী সঙ্ঘ গঠন করা সম্ভব কি-না, সম্ভব হইলে কি ভাবে গঠন করিলে তাহা কার্যকরী হইতে পারে, সমগ্র প্রদেশের জন্য এরূপ স্থায়ী সঙ্ঘ গঠিত হইয়াপাটের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করিতে হইলে যে-অর্থের প্রয়োজন তাহা কোথা হইতে পাওয়া যাইবে, এইরূপ নিয়ন্ত্রণের দ্বারা পাটের দাম চড়িলে অন্য কোন সন্তা জিনিষ ইহার পরিবর্তে ব্যবহৃত হইতে আরম্ভ হইবার সম্ভাবনা আছে কি-না, এখন যে প্রচুর পাট চাষ হয় তাহা না কমাইয় অন্যান্ত নূতন কাজে ইহাকে লাগান যাইতে পারে কি-না প্রভৃতি পাট সম্বন্ধে সব দিক দিয়া অনুসন্ধান ও আলোচনা করিয়া পরামর্শ দিবার ভারও এই কমিটির উপর গুস্ত হইয়াছে। পাট-চাষ ও পাট-শিল্প সম্বন্ধে যাহাদের অভিজ্ঞতা আছে, বা কোন-না-কোনপ্রকারে র্যাহারা পাটের ব্যবসায়ে লিপ্ত আছেন, এই কমিটি এক বিশদ প্রশ্নপত্র প্রচার করিয়া তাহাদের মত ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছেন। পাটের উপর বাংলার উন্নতি অনেকটা পরিমাণে নির্ভর করে। এই কমিটির আলোচনা ও অনুসন্ধানের ফলে যাহাতে বাংলার পাট-সমস্যার একটা ভাল সমাধান হয় তজ্জন্ত সকলেরই যথাসাধ্য চেষ্টা করা কৰ্ত্তব্য । নানাকারণে পাট-সমস্ত বেশ জটিল। পাট-ব্যবসায়ে বাহারা লিপ্ত আছেন, তাহদের পরস্পরের স্বার্থ সম্পূর্ণ এক নহে। বহু ধনশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এই ব্যবসায়ে প্রচুর অর্থ নিয়োগ করিয়াছেন। তাহদের স্বার্থের সঙ্গে গরীব কিন্তু লক্ষ লক্ষ পাট-চাষীর স্বার্থে যে কোন বিরোধ নাই, এমন কথ} বলা যায় না। ১৯২১ সালের গণনা মতে চল্লিশ লক্ষ লোকের জীবিক নির্ভর করে পাটচাষের উপর। সেটুল বাৰিং এনকোয়ারী কমিটির সংলগ্ন অভিজ্ঞ বিদেশী ব্যাঙ্কারদের কমিটির সদস্ত মিটার এ. পি. ম্যাকৃভুগাল হিসাব করিয়াছেন যে, ইহার মধ্যে প্রায় দশ লক্ষ লোক নিজেরা পাট চাষ করিয়া থাকে। পাটসমস্তার সমাধানে এই বিচ্ছিন্ন দরিদ্র চাষীদের কথাই সৰ্ব্বাগ্রে ভাবিতে হইবে। তাহারা পাট চাষ করিয়া যাহাতে হায্য দাম পায় তাহার ব্যবস্থা করাই পাট সম্বন্ধে যে-কোন সিদ্ধান্তের মুখ্য লক্ষ্য হওয়া উচিত। সব দিক দিয়া পাট সম্বন্ধে আলোচনা করা এই প্রবন্ধের উদ্দেশু নয়। পাট-বিক্রয়ের কোন ভাল ব্যবস্থা করা যায় কি-না কেবল তাহার আলোচনাই এই প্রবন্ধের উদ্দেশু। বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাট বিক্রয়ের স্থব্যবস্থার অভাব খুব বেশী অনুভূত হইয়াছে। অনেক ব্যক্তি ও সমিতি এসম্বন্ধে বহু আলোচনাও করিয়াছেন। কিন্তু কোন স্বচিন্তিত প্রস্তাব কাৰ্য্যে পরিণত করিবার জন্য স্বসম্বদ্ধ কোন চেষ্টা আজ পর্যন্ত হয় নাই । কৃষিজাত পণ্য বিক্রমের ভাল ব্যবস্থা না থাকায় আমাদের দেশের চাষীদের ষে ক্ষতি হয় তাহার কথা কয়েক বৎসর পূৰ্ব্বে রাজকীয় কৃষি কমিশন বিশদভাবে আলোচনা করিয়াছিলেন। তাহারা বলেন, যদি কৃষিজাত বস্তুকে ভালমন্দ হিসাবে পৃথক পৃথক রাখিয়া, ওজন সৰ্ব্বদা ঠিক রাখিয়া ও অন্যান্ত উপায়ে এই সকল পণ্যের বাজারকে নিয়ন্ত্রিত করিতে পারা যায় তাহা হইলে আমাদের দেশের চাষীর অবস্থার প্রভূত উন্নতি হইতে পারে। বঙ্গীয় তদন্ত কমিটি ভালমন্দ পাট কি ভাবে মেশান থাকে সে সম্বন্ধে আলোচনা করিয়া বলেন যে, কোন শ্রেণীর পাট কোন চালানে আছে ইহা বুঝিতে না পারায় কলিকাতার পাটের বাজারে কোন স্থিরতা রক্ষা করা কঠিন হুইয়া পড়ে ; মফঃস্বল হইতে যাহারা পাট আমদানী করে তাহারা অনেক