পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

άδΒ - - ধ্ৰু প্রবাসনী &n SనO8O ক্লাবে বড় একটা আর আসে না । চাদার পাট অনেকদিন হইল উঠাইয় দেওয়া হইয়াছে, তাহাতে লাভের মধ্যে এই হইয়াছে রমাপ্রসাদও নিয়মিত আর আসে না । বীণাকে গোড়ার কয়েকটা দিন রোজই একবার অন্ততঃ দেখিতে পাওয়৷ ঘাইত ; রিহাসর্ণল স্বরু হক্টতেই স্বলত-প্রিয়গোপালকে উপরে টানিয়| লষ্টয়া সে ব্রিজের আডড জমাইত। সম্প্রতি তেতলায় ব্রিজের আডডা এত জমাট বাধিয়াছে যে মূলত অথবা বীণ কাহারও আর সেখানে উপস্থিত থাকার প্রয়োজন হয় না। বীণ৷ এতটা আশা করে নাই, তাহার পর হইতেই ক্লাবে আর সে আসে না। রমাপ্রসাদ মাঝে মাঝে যখন আসে তেতলাতেই চলিয়া যায়, প্রিয়গোপালের পাশে কাগজ পেন্সিল লইয়া বসি স্কোরের হিসাব রাখে। ক্লাবের চাদ নাই অথচ ক্লাব আছে, এই জিনিসটা বুঝিতে তাহার আরও কিছুদিন লাগিবে। স্বভদ্র ছাড়া ক্লাবে আর নিয়মিত এখন যে আসে সে ঐন্দ্রিলা। স্বলতাকেও সব দিন এখন দেখিতে পাওয়া যায় ন', স্বযোগ পাইলেই বালিগঞ্জে বীণার কাছে গিয়া জোটেন। মেয়েদের মধ্যে আরও কেহ কেহু, ছেলেদেরও দুএকজন লুকাইয়া বালিগঞ্জেই সান্ধ্য মজলিশ জমাইতে যায়, ঐন্দ্রিলা তাহ জানে। বিমানেরও খুব ইচ্ছা রিহাসীলটা হাজরা রোডে না হইয়৷ বালিগঞ্জে হয়, কিন্তু ঐন্দ্রিলা তাহাকে আমল দেয় না। মনে যাই থাকুক, মুখে বলে, “সেখানে গেলে কাজ ত হবে না, আডডাই হবে সারাক্ষণ। বলুন অভিনয়ে দরকার নেই, তারপর আডড দিতে চলুন, আমি বাধা দেব নাi” মনে যে কি আছে নিজেও সে ভাল করিয়া তাহ জানে না। বাড়ীতে মায়ের জালায় দুদণ্ড তিষ্ঠানো এমনিতেই তাহার প্রায় অসাধ্য হইয়া উঠিয়াছিল, সম্প্রতি কন্যা অভিনয়ে নামিতেছে শুনিয়া তিনি আহার-নিদ্রা ত্যাগ করিয়া এমন কাও বাধাইয়াছেন যে দিনের মধ্যে খানিকট সময়ও বাহিরে কোথাও পলাইয় তাহাকে ভুলিয়া থাকিতে না পারিলে তাহার সঙ্গে সঙ্গে সেও একদিন ক্ষেপিয়া যাইবে । কিন্তু কেবল মায়ের কাছ হইতে পলাইতেই যে সে ক্লাবে আসে তাহ বলিলে সত্যকথা বলা হইবে না। মায়ের উপর রাগ করিয়া খানিকট আসে তাহা ঠিক, বীণার উপরে রাগ করিয়াও থানিকটা । ক্লাবে অজয় ছাড়া অন্ত মানুষগুলি কি মাস্থ্য নহে, ষে একজনের অভাব হইতেই এমন করিয়া আর-সকলের সঙ্গে সম্পর্ক চুকাইয় ফেলিতে হইবে ? অথচ এই বীণাই কথায় কথায় মানুষে মানুষে সম্পর্ককে এত বড় করিবে, যেন তুচ্ছতম মানুষকেও তার শ্রেষ্ঠ মূল্যটি দিতে পে যেমন জানে এমন আর কেহ জানে না । & অজয়ের কথাও কি কোনও একরকম করিয় ঐন্দ্রিলার মনে আছে ? অজয় আগ্রহ করিয় ঐন্দ্রিলাকে ক্লাবে ডাকিত, ঐন্দ্রিলাকে ক্লাবে দেখিতে পাইলে তাহার অন্ধকারাচ্ছন্ন মুৰ্থ উজ্জল হইয়| উঠিত, এই চিস্তায় ঐন্দ্রিলার কি লুকান কোনও স্থখ আছে ? ক্লাবে আসিয়া সেই চিন্ত হইতে এতটুকু মুখণ্ড কি সে পায় ?...সুভদ্র স্বর্থী হুইবে ভাবিয়া ক্লাবে অবশ্ব সে ত আসেই । ঐন্দ্রিলাকে ক্লাবে পাইয় স্বভদ্রের সবটুকুই যে মুখ তাহ। নহে, বাছিয়া বাছিয়া ঠিক এই সময়েই ক্লাবের বনিয়াদে ভাঙন ধরিতেছে লক্ষ্য করিয়া তাহার দুঃখ বহুগুণ বেশী। এক এক করিয়া সভ্যসংখ্যা কমিতেছে । কিন্তু প্রাণপণ করিয়াও সুভদ্র কিছু করিতে পারে না । তাহার কেবলই মনে হয়, ঐন্দ্রিলাকে ডাকিয়া আনিয়া সে অপদস্থ করিল। শেষ অবধি অভিনয়ই যে হইবে তাহার ঠিক কি ? যদি না হয়, অবস্থাটা খুবই চমৎকার দাড়াইবে সন্দেহ নাই। কিন্তু মুভদ্রের সে আকর্ষণী শক্তি নাই, আন্তরিকতার মধ্যে যাহার জন্ম, মাতুষকে মাতুয যাহা দিয়া বাধিয়া রাখিতে পারে। তাহার জীবনের আরও গভীরতর জায়গায় কত মানুষ আসিয়া ঘুরিয়া গেল, কাহাকেও সে বঁাধিতে পারিল না ত, বাধিবার চেষ্টাই কখনও সে করে নাই, আজ অত্যন্ত বেশী বাহিরের জায়গায়, কেবলমাত্র কথার আদানপ্রদান উপলক্ষ্য করিয়৷ একদল মানুষকে ধরিয়া রাখিতে আশা করে সে কি সাহসে ? স্বভত্রের দিন সত্যই বড় দুঃখে কাটিতেছে। বিমান তাহার সঙ্গে তর্ক জুড়িয়া বলিতে চায়, ক্লাবের মানুষগুলির পরস্পর-সম্পর্কের মধ্যে একটুখানি আন্তরিকতার মশলা-সংযোগ করিবার চেষ্টা করিত একমাত্র বীণা। তাহাকে বাদ দিয়া ক্লাব জমাইবে আশা করিয়া থাকে যদি ত স্বভদ্র ভুল করিয়াছে। স্বভদ্র বলে, “তঁাকে ত আর আমরাবাদ দিইনি, তিনিই আমাদের বাদ দিয়েছেন।” বিমান বলে, “কিজন্যে দিয়েছেন তা ত তুমি জানোই ভালো