পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२8०

  • প্রবাসী--জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩e

২৩শ ভাগ, ১ম খণ্ড রমলা ( ૭૧ ) রজতের ডায়েরী হইতে— জীবনের শ্ৰোত বহিয়া চলিয়াছে ; রূপের স্রোত, বর্ণের ধারা,- হে অরূপ, তোমা হইতেই এই অপরূপ রঙের ঝর্ণ অহনিশি ঝরিয়া পড়িতেছে ; এই সুপার ফোয়ার জগংচিত্রের নদী । কিশলয়ের মত শিশু জন্মে, ফুলের মত ফোটে, গানের স্বরের মত আসে, পাতার মত ঝরিয় পড়ে। তারা জলিয়া উঠে, তার নিবিয়া যায় ; মাতুষ জন্মগ্রহণ করে, মাচুর্য চলিয়া যায় ; এই রূপের জগতে বস্থপুঞ্জ কোন প্রাণের আবেগে ভাঙিতেছে, গড়িতেছে, গলিতেছে, ঋরিতেছে, শূন্যে মিলাইয়া আবার নব নব রূপে আবর্তিত পরিবর্ধিত হইতেছে। হে অরূপ, তোমার তুলির টানে নব নব রূপরেখা আঁকিয়া মুছিয়া আবার নতুন রঙে জাকিয়া তুমি চলিয়াছ, এক একটি পৃথিবী তোমার হাতের সৌন্দৰ্য্যশতদলের একটি পাপড়ির মত ফুটিয়া ঝরিয়া পড়ে। অনন্ত নীলাকাশের কোটি কোটি তারার ঝলমল চন্দ্রাতপতলে স্বৰ্য্যচন্দ্রের গমনাগমনের ছন্দে সমুদ্রস্তনিত সুন্দরী ধরণীর পটে কত বর্ণের কত ছবি—বৈশাখী ঝড়ের সন্ধ্য, আষাঢ়-মেঘের ঘন সমারোহ, শরতের সোনার প্রভাত, শীতের রৌদ্রোত্তপ্ত মধ্যক্তি, মাধবী জোংস্কারাত্রি —ঋতুর পর ঋতু ফুলে ফুলে পা ফেলিয়া জলে স্থলে কত রঙের উত্তরীয় উড়াইয় তোমাব যাত্ৰ –হে অপরূপ, তোমাকে নমস্কার ! আমার চোখের সম্মুখে কত স্থখ, কত ছবি ভাসিয়া উঠিতেছে—খুকীর হাসি, ছেলেদের খেলা, প্রিয়ার চাউনি, গায়িকার স্বরালোকদীপ্ত আননপদ্ম, বন্ধুর প্রেমের হাসি ; শালবনে প্রেমিকপ্রেমিকা, নগরের জনস্রোত, কারখানার কুলীমজুর, ষ্টেশনের যাত্রী, জ্যোৎস্না রাতে তরুণ তরুণী, মানবজীবনের স্বথদুঃখের কত চিত্ৰ তুমি আঁকিতেছ ! শিল্পী তোমাকে নমস্কার । পৃথিবীর এই নানা রূপের পুরীতে শুধু আমাকে আমন্ত্রিত কর নাই, এই রূপকথালোকের সোনার কাঠি আমার হাতে তুলিয়া দিয়াছ ! সৌন্দৰ্য্য-মাণিক্যের স্পর্শে জগৎ লাবণ্যে ভরিয়া গিয়াছে। তোমার হাতের একটি তুলি আমার হাতেও দিয়াছ, এই রঙের ঝর্ণাতলায় বসিয়া আমার এ ছোট হৃদয়ের পাত্র ভরিয়া সবাইকে বার বার তোমার আনন্দস্বধা পান করাই ! অফুরন্ত তোমার রূপের ফোয়ার, আফুরন্ত আমার হৃদয়-পেয়াল, আমি ধন্য হইলাম । বিশ্বলীলাকমল হাতে করিয়া কোন আনন্দে মাতোয়ারা হইয়া তুমি হাসিতেছ। এ জ্যোৎস্ব-রাতে তোমার প্রসন্নমুখের হাসি দেখিয়া নয়ন মুগ্ধ সার্থক হইল । তোমার এই কোটি কোটি রূপের প্রদীপজালা বিশ্বমন্দিরে আমার ও তুলি দিয়া প্রাণের শিখয পৃথিবীর অঙ্গনভলে একটি রঙের আরতিপ্রদীপ জালাইয়। ধন্য হইলাম । বিশ্বশিল্পী, তোমাকে নমস্কার । ( ૭ા ) সাত বছর কাটিয়া গিয়াছে । হাজারিবাগের সেই বাড়ীখানি আর ভাঙা-পোড়ে। হইয়। নাই, আবার সেখানি রঙীন মুন্দর স্থসজ্জিত হইয়াছে, তাছার চারিদিকে নূতন ফুলের গাছে ভর বাগান নানারঙে ঝলমল করিতেছে। পুরাতন হাস্নাহান ঝাড়টির স্থানে আর-একটি নূতন প্রকাণ্ড হামাহানার ঝাড় জন্মিয়াছে। তাহার চারিদিকে বিকাল বেলায় একটি মেয়ে ও দুইটি ছেলে লুকোচুরি থেলিতেছে, ঝাড়ের ধারে বারানায় এক চেয়ারে কাজীসাহেব পেলার বুড়ী হইয়া বসিয়া আছেন । তিনি এখন অতিবৃদ্ধ হইয়া গিয়াছেন, এখন আর ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ছুটিয়া খেলিত্ত্বে পারেন না, বুড়ী হইয়াই থাকিতে হয়। র্তাহার কোলে কতকগুলি ছবি, খেলনা, পুতুল ; সেগুলি:ৰ্তার কাছে গচ্ছিত রাখিয়া ছেলেরা খেলিতেছে। দীর্ঘশক দাড়িভে হাত বুলাইতে বুলাইতে তিনি উদাস দৃষ্টিতে পশ্চিমের ধূসর গিরিমালার