পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] বেধেছে, ঠিক সেই সময়ে বৈশালী-রাজ্যের সাত হাজার সাত শে। সাতান্তর জন সন্তের সম্মিলিত সম্মতিতে যিনি সৰ্ব্বময় কৰ্ত্তা, সেই মহাসম্মত ধন্থ গ্রহের পুত্র, সেনানায়ক বলগুপ্ত, কালো ঘোড়ার পিঠে কালো কম্বলের আস্তরণ চড়িয়ে, চল্লিশ হাত চওড়া দুর্গপ্রাচীরের উপর ময়ূরসঞ্চারী গতিতে ঘোড়া চালিয়ে, সে রাতের মতন নগর-পরিক্রম সমাপ্ত করে কৌমারী-মণ্ডপের দিকে ফিরে যাচ্ছিলেন । হঠাৎ প্রহরীদের উত্তেজিত কণ্ঠস্বর কানে পৌছোতেই ঘোড়া ফিরিয়ে একেবারে তাদের মাঝখানে গিয়ে হাজির হলেন। ভিড় ফাক হয়ে গেল। বুকে-লৌহপট-ভাট প্রহরী ও তীরন্দাজের দল তর্কের তোড় থামিয়ে হাত জোড় করে” নমস্কার জানালে । প্রতিনমস্কার করে’ বল গুপ্ত জিজ্ঞাসা করলেন—“কি সমাচার ? ভিড় কিসের ?” একজন প্রহরী নগ্নপ্রায় মূৰ্ছিত লোকটাকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বললে—“এই লোকটা দুর্গে ঢুক্ছিল, একে বন্দী করেছি।” “দুর্গে ঢুকৃছিল ? তোমরা কি টুল ছিলে ?” “আজ্ঞে, ন, দেখতে পেয়ে ওংপেতে ছিলুম। লোকট। প্রাকারের উপরকার ছাট পাথরের থরকাটা ইস্তিনথের ফাক দিয়ে উকি মারছিল ।” “তার পর ?” “ভাবলুম শড় কীর পোচায় সাবড়ে দিই, কিন্তু আপনার আদেশ বন্দী করা, তাই টপকে আসা পয্যন্ত অপেক্ষা করে রইলুম। যেমন ভিতরে আসা অম্নি তুষ্যধ্বনি কবুলুম, তীরন্দাজরা এসে পড়ল । সহজেই বন্দী করা গেল । তার পর আলো নিয়ে তাঁর ছুড়ে পাথর ফেলে দেখলুম, আর কেউ দেওয়াল বেয়ে উঠছে কি না ; দেখলুম কেউ না, লোকটা এক্লাষ্ট ।” ভিড়ের ভিতর থেকে একজন বলে উঠল—“লোকটা দুঃসাহসী !” ডস্ক-নিশান جستا ۹ ه. ه -معبده مير ه بر ع २&> আরেকজন বললে—“পাগল ?” বলগুপ্ত বললেন –"পাগল কিসে?" লোকটা বললে—“নইলে কষ্ট করে’ গা ছড়ে প্রাচীর বেয়ে উঠে শেষে বিনা বাক্যব্যয়ে ধর দেয় ?” প্রহরীর দিকে ফিরে বলগুপ্ত বললেন —“তোমরা যখন বন্দী কর, লোকটা বাধা দ্যায় নি ?” প্রহরী একটু ইতস্তত করে বললে—“না।” “তবে মূৰ্চ্চা গেল কি করে’ ?” প্রহরী চুপ করে রইল । প্রহরীকে নিরুত্তর দেপে বলগুপ্ত বললেন—“সহজেই যখন ধরা দিলে, তখন আত মারাটা ভালে। হয় নি।. ধাকৃ, এখন ওকে সেবা-ঘরে পাঠাবার বন্দোবস্ত করে, আঘাত বোধ হয় গুরুতর নয়, মূৰ্ছী ভাঙতে বিলম্ব হবে বলে’ মনে হচ্ছে না। --যে দুঃসাহসী দুষ্পবেশের ভরসা রাখে, তার কাছ থেকে দুলৰ্ভসংবাদের আশা দুরাশা না হওয়াই সম্ভব। লোকটাকে চাঙ্গা করে তুলতে হবে ... যাও, ওকে সেবাঘরে পাঠিয়ে দাও।” কথা শেষ হ’লে বলগুপ্ত প্রথম প্রহরীর হাতে নিজের নামাঙ্কিত একটা অভিজ্ঞান-মুদ্র দিয়ে হরিণসঞ্চারী গতিতে ঘোড় ছুটিয়ে অন্ধকারে অদৃশু হ’য়ে গেলেন । এই গভীর রাত্রে আবার সেবাঘর পর্য্যন্ত দৌড়োতে হবে শুনে প্রহরীর সমস্ত রাগ পড়ল ঐ মূৰ্ছিত লোকটার ঘাড়ে । সে নিজে আfর একজন তীরন্দাজে মিলে লোকটাকে ঝণকি দিয়ে শূন্যে তুলে খানিক ঝুলিয়ে, খানিক বা হেঁচড়িয়ে না বৃকোল-বোঝাই বস্তাটার মতন টানতে টানতে নিয়ে চলল। বন্দীর ঝুলে-পড়া মাথাট। যে প্রাকারপথের কয়েং-বেলের মতন পাথরগুলোর উপর প্রতিপদেষ্ট ঠোক্কর খাচ্ছে সেদিকে কেউ ভ্ৰক্ষেপও করলে না । ( ক্রমশ: ) সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত