পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ ইন্দ্ৰমূৰ্ত্তি প্রভাতে হাত-মুখ ধুয়ে মগধরাজের সন্নিধাতা-অমাতা ইন্দ্ৰমূৰ্ত্তি চোখে কাজল ও ঠোঁটে আলতা দিয়ে রূপের দর্পণে মুখ দেখছিলেন। আমরা যে কালের কথা বলছি, সে কালে মেয়েদের মতন,ঠোঁটে আলতা ও চোখে কাজল দেওয়াটা পুরুষদেরও নিত্যকর্মের মধ্যেই ছিল । ইন্দ্ৰমূৰ্ত্তির বয়েস চল্লিশ-বিয়াল্লিশের মধ্যে। লোকটার বাড়ী অন্ধ দেশে । মগধে এসে প্রথমে সে রাজার নস্থাপিত ব। নাইবার ঘরের চাকরের কাজে ভৰ্ত্তি হয় । সে আজ প্রায় পচিশ বছরের কথা। অন্ধুদেশীয় অঙ্গসংবাহনের নূতনত্বে ও স্থখদ বৈচিত্র্যে মহারাজ ক্রমশ তাকে স্নেহের চক্ষে দেখৃতে সুরু করেন। লোকটার আরএক বিদ্যা ছিল, সে চমৎকার কেশ-বিন্যাস করতে পারত। চাপাই-চুড়ে, জোড়-চামর, ত্ৰিধন্মিল্প, চতুগৃঙ্গ, পঞ্চফণা প্রভৃতি নানারকমের খোপ। সে বধিতে জানত। মহারাজ তার এই নূতন বিদ্যার কথা জানতে পেরে প্রিয়তমা মহিষী ধনীর বেণী-রচনার কাজেও তাকে বাহাল করেন । এমনি ক’রে রাজান্তঃপুরেও লোকট। অবাধপ্রবেশের অধিকার লাভ করে। ক্রমে এমনি হ’য়ে উঠল, যে, ইন্দ্ৰমূৰ্ত্তি না হ’লে রাজার স্বান হয় না ; ওদিকে সে না চুল বঁধতে এলে রাণীর মুক্তকেশ মুক্তই থেকে মায় । একবার অবন্তীর সঙ্গে মগধের যুদ্ধ বাধে। যুদ্ধক্ষেত্রে মহারাজের কণ্ঠে একটা তীর এসে বিঁধে গিয়ে ভিতরে রক্তস্রাব হয়ে শ্বাসরোধের উপক্রম হয়। সে-সময়ে ইন্দ্ৰমূৰ্ত্তি ক্ষতের মুখ থেকে রক্ত চুষে নিয়ে মহারাজের যন্ত্রণার উপশম ও একরকম জীবনরক্ষাই করে । সেই থেকে সে মগধসম্রাটের সন্নিধাত-অমাত্য হয়। কি অন্তঃপুরে, কি যুদ্ধক্ষেত্রে, কি মন্ত্ৰী-পরিষদে,—সৰ্ব্বত্রই ইন্দ্ৰমূৰ্ত্তিকে মহারাজের সান্নিধ্যে থাকৃতে হ’ত । রাজ্যের কোনো কথা, কোনো গুপ্ত মন্ত্রণ তার অজ্ঞাত রইত না । তার কান-ভাঙানির ভয় করে না এমন লোক পাটলিপুত্রে বিরল। কখন সে কার সম্বন্ধে মহারাজের কান ভারি ক’রে দ্যায়, সেই ভয়ে মন্ত্রীরা থেকে আরম্ভ 2- وS ডঙ্কা-নিশান ولا هوان SAMMASAeMAeeMAMM AMMA MA MASAMA AM AM AMM AMMeMMAMAMM MMM MM AMAeMMAeMAe eeeSeAMS ক'রে, সেনাপতি, নগরশ্রেষ্ঠী, প্রশাস্তা, সমাহৰ্ত্তা, এমন কি স্বানের ঘরের স্বাপক এবং শয়ন-ঘরের আস্তরক পর্য্যস্ত ব্যতিব্যস্ত ! বলা বাহুল্য, এখন আর সে স্বানের ঘরের তৃত্য নয়, মন্ত্ৰী-পরিষদের সদস্য। এই অযোগ্য লোকটার ভাগ্যোদয়ে সবাই মনে মনে বিরক্ত, কিন্তু বাইরে সবাই এর চাটুবাদ ক’রেই চলত। মহামাতোরা পর্যন্ত এর সঙ্গে সসম্বমে কথা কন । দন্তে লোকটার মাটিতে আর পা পড়ে না – “দাসীর ছেলে দশার ফেরে মন্ত্রী হয়েছে, হেঁটে ধেতে হোচট লাগে, পান্ধী চেয়েছে !” ইন্দ্ৰমূৰ্ত্তির হ’ল সেই রকম। একদিন একসর ছাতুর পরিবর্ভে তার ম৷ তাকে পাটলিপুত্রের হাটে বেচে যায় ; আর আজ সে সুবিপুল মগধ-সাম্রাজ্যের গুপ্ত-কর্ণধার, রাজার কান তার জিন্মায়, রাণীর ষড়যন্ত্রের সে প্রধান যন্ত্র । বেশবিন্যাস শেষ ক'রে, বুড়ো আঙুলের ঠেলায় একসঙ্গে গোটা-চার-পাচ পান মুখের মধ্যে পূরে দিয়ে রেশমের মতন মস্বণ একখানা চিত্রকম্বলী কাপে ফেলে দুধে-চামড়ার তৈরী ফুলদার চটিজোড়ার ভিতর পায়ের ডগা গলিয়ে দিতে দিতে লোকটা ঘর থেকে বেরিয়ে এল। ঘরের সামনে খাচার ভিতরে টিয়ে-পার্থীট। তার চটির শব্দে চটুকা ভেঙে ঘাড় কাত ক'রে ইন্দ্ৰমূৰ্ত্তিকে একবার দেখে নিয়ে চোখ দুটে আবার শাদ পর্দায় ঢেকে ফেলে যেন ঠাট্টার স্বরে বলে উঠল “টবুবুর।" ইন্দ্ৰমূৰ্ত্তি তার দিকে একবার কটুমটিয়ে চেয়ে সোজ। সদরে গিয়ে হাজির হ'ল। চন্দনকাঠের নক্সাদার দরজার বাইরে মকরমুখে। ডাওঁীওয়াল দোল তৈরী ছিল । তাতে উঠেই যুক্তপাণি বাহকদের সর্দারকে স্থাকার দিয়ে বললে—“কোষাগার, কায়স্থনিবেশ ।” বাহকের দোলা কঁধে তুলে রাজনিবেশের অগ্নিকোণে মসীপর্ণিক কায়স্থ-পল্লীর দিকেই যাচ্ছিল, হঠাৎ অৰ্দ্ধপথে ইন্দ্রমূৰ্ত্তি চেচিয়ে বললে—“ফের, ফের, বণিক-নিবেশ, ক্রীবর্দ্ধন শ্রেষ্ঠীর বাড়ী ।” বাহকের কঁধি বদলে উত্তর মুগে চলতে লাগল। দোলা যখন শ্ৰীবৰ্দ্ধনের দরজায়, শেঠজী তখন খাতায় ময় ইল্লমূৰ্ত্তি ঘরে ঢুকতে তার চমক ভাঙল। তুবড়ির