পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՓԵ-Եր প্রভৃতি বাহিরের দলকে সমাজের মধ্যে ক্ষত্রিয় নামে চালাইয়া লইয়াছেন, তেমনি মঙ্গভারতের পূর্বযুগে ক্ষত্রিয় রাজাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ক্ষত্রিয়দের দমনার্থ নাগদের নিযুক্ত করিয়াছেন। ধনলোভে যদি কোনো ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয়ের সহায়তা করিতে চাহিয়াছেন, তবে নাগরাই অর্থ দিয়া তাহাকে ক্ষত্রিয়ের দল হইতে সরাইয়া লইয়া গিয়াছেন (মহাভারত, আদিপৰ্ব্ব, ৪৩ অধ্যায় )। ব্রাহ্মণদের দেবতা স্বীকার করিয়া নাগরা শক্তিশালী হইয়াছেন। তাই বাস্থকি, তক্ষক প্রভৃতি ইন্দ্রের সেবা করেন। ইন্দ্রের বাহন ঐরাবতও এক নাগেরই নাম মহা, আদিপৰ্ব্ব, ২১৬ অধ্যায়, ১৮-২০ শ্লোক ও মহাভারত, পৌষ্য পৰ্ব্ব, ৩ অধ্যায় )। কৃষ্ণ যখন ইন্দ্রপুজার বিরোধী, তখন তিনি ইন্দ্রের শরণাগত নাগদের রক্ষা করেন নাই । যে কারণে জরাসন্ধ শিশুপালাদির সঙ্গে কৃষ্ণের বিরোধ হয়, সেই কারণেই নাগদের সঙ্গে খাণ্ডববাসিগণের সঙ্গে কৃষ্ণাৰ্জুনের বিরোধ হয়। কৃষ্ণ ইন্দ্র-বিরোধী হষ্টলেও অগ্নির বিরোধী নন। অগ্নিদেবতার তৃপ্তির জন্যই খাণ্ডবের দাহ হয়। এবং যে নাগকন্যা উলুপীকে অর্জন বিবাহ করেন তাহার গৃহে পবিত্র অগ্নি রক্ষিত ছিল। সেই অগ্নিতে অর্জুন দৈনিক অগ্নিহোত্রাদি করেন (মহাভারত, আদিপৰ্ব্ব, ২১৬, ১৫)। নানা কারণে বৈদিক দেবতার সহিত কৃষ্ণের বিরোধ হইয়াছিল। যাগযজ্ঞপর বৈদিক বাণীকে তিনি গীতায় “পুষ্পিতা বাকৃ” বলিয়াছেন, যাগযজ্ঞের নিন্দা করিয়াছেন এবং খুব সম্ভব এইজন্তই ভৃগুমুনির পদাঘাত লাভ করিয়াছেন। মনসা-পূজার প্রসঙ্গে নাগদের কথা বলিতে হয়। কারণ যখন মনসা দেবী বাংলাতে আসিলেন তখন প্রাচীন জরৎকারুপত্নীর সঙ্গে ও বাস্থকির ভগ্নীর সঙ্গে তাকে এক করা হয়। আবার মনসার হাত হক্টতে রক্ষা পাইবার জন্য গরুড়ের স্মরণ করা হইত। তাই স্বপর্ণদের কথাও বলিলাম। এই নাগ ও স্থপর্ণ দুইই অনাৰ্য্য জাতি । দুইই পরস্পর বিবাদে রত। নাগের দল ইন্দ্রের শরণাপন্ন। নাগের দল সুৰ্য্যের স্বরূপ লইয়া তর্ক করিয়া স্বপর্ণের দলকে (অর্থাৎ পক্ষী যাহাদের totem ) বশীভূত করিয়া আধিপত্য করেন। আর্য্যদের দেবতা গ্রহণ করিয়া নাগরাও প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩২৯ [ २२ल छांग, sन १७ بنمایی خصههایی خویی প্রবল হইয়া উঠেন (পোষ্যপৰ্ব্ব, ৩য় অধ্যায় ও আস্তীক পৰ্ব্ব, ২৫ এবং ৩৬ অধ্যায় )। এই নাগদের হাত হইতে মুক্তি পাইতে গিয়াই স্বপর্ণের আর্য্যদের নূতন দেবতা বিষ্ণুকে স্বীকার করেন। বিষ্ণু স্বর্ঘ্যেরই পরবর্তীরূপ। তবে ইন্দ্রের পর ইনিই প্রধান হইয়া উঠিলেন। কাজেই বিষ্ণুর নাম হইল “ইন্দ্রাবরজ"। গরুড় বিষ্ণুর বাহন হইয়া শক্তিশালী –তাই নাগদের সর্প-শাখা ও হস্তী-শাখা দুই দলকেই বশীভূত করিলেন । পুরাণে আছে গরুড় হস্তীকে খাইলেন ও নাগদের খাইলেন । এষ্ট হস্তী ও নাগ দুই দলের totem অর্থাৎ পবিত্র চিহ্ন । গরুড়ের দলের কাছে হারিয়া নাগের বিষ্ণুকে স্বীকার করে এবং গরুড়ের ভয় হইতে রক্ষা পায় ( ভাগবত, ১৯ম স্কন্ধ, ১৬ এবং ১৭ অধ্যায়। দ্বিজ বংশীদাসের পদ্মাপুরাণ, ৩০৯ পৃষ্ঠা )। গরুড়ের তাড়ায় নাগরা সমুদ্রের দ্বীপে আশ্রয় নেয় ( यांखेौक श्रृं6, २९ अथTांग्न, २७ अश्वTांग्न, २१ अक्षTांग्र) । সেখানে অনন্ত ও কালীয় নাগ স্বীয় বক্ষে ও মস্তকে নারায়ণকে গ্রহণ করেন (ভাগবত, ১৬, ১৭, দ্বিজ বংশীদাসের পদ্মাপুরাণ, ৩৩৭-৩০০পৃষ্ঠা )। বিনতানন্দন গরুড় অর্থাৎ পুরাণ-মতে যিনি পক্ষী তিনি বিষ্ণুর বাহন হইয়া শক্তিশালী হইয়া ইন্ত্রের রক্ষিত অমৃত হরণ করিতে গেলেন। ইন্দ্র বজ্ৰ মারিলেন। বজ্ৰ ব্যর্থ হইল। গরুড় একটি পক্ষের পালক উপহার দিয়া বজ্রের মান রাখিলেন (মহাভারত, আস্তীক পৰ্ব্ব, ৩৩ অধ্যায়)। এসব কথা বেশ চিন্তা করিয়া দেখিবার মত। মোটকথা থাগুবে নাগকুল ধ্বংস হয় নাই। কাজেই নাগ-পূজাও লোপ হয় নাই। অবশু আশ্রয়হীন হইতে হইতে ইহারা দুৰ্ব্বল হইতে লাগিল। খাওববন-দাহে ইহাই কৃষ্ণ অর্জুন ও অগ্নির শাপ ছিল ( আদি, ২২৯ অধ্যায়, ১১শ্লোক)। অহিচ্ছত্রও নিশ্চয় সর্পদেরই দেশ ছিল। পরে দ্রোণ তাহ পান। মহাভারতের প্রথমেই আস্তীক পর্ব। তাহাতে আধ্য ও নাগদের বিরোধই চলিয়াছে দেখিতে পাই। ৰূপর্ণ ও নাগদের সঙ্গে আৰ্য্যদের এমন কি ব্রাহ্মণদেরও বিবাহ হয়। সেই-সব বিবাহেরু সন্ততিরাও ঋষি, ব্রহ্মবিদ ও বেদবিত্তম পুরোহিত হইয়া থাকেন।