পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] দের অভ্যর্থনা করা, পরিবেশন করা প্রভৃতি নানা কাজে বড় খাটুতে হয়েছিল। অনেক রাত্রে উঠে খেতে গেলুম। আমার ছোট ভাই খাবার সময় বলে, “অনেকক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলেন তো দাদা ? দিদি এসেছিলেন, আরতির সময় আপনাকে দেখবার জন্তে আপনার ঘরে গেলেন। আপনি ঘুমিয়ে আছেন দেখে আপনার পায়ে হাত দিলেন আপনাকে ওঠাবার জন্যে। আপনি উঠলেন না । তার পর তারা সব চলে গেলেন । তিনি নাকি পবৃত্ত বাপের বাড়ী চলে যাবেন। আপনি অবিপ্তি একবার ওবাড়ী যাবেন, কাল। আপনার সঙ্গে দেখা না হওয়ায় দিদি বড় দুঃখ ক'রে গিয়েছেন।” আমি ঘুমের ঘোরে কথাটা তলিয়ে না বুঝে বললুম, —দিদি মানে ? —ও বাড়ীর । —উমারাণী ? —ই । দিদি, টুনিদি, এরা সব আরতির সময় এসেছিলেন কি না। উমারাণীর কথা আমার খুব মনে ছিল । তার সেই ভক্তিনম্র মধুর ব্যবহারটুকু আমার বড় ভাল লেগেছিল। তাই তাকে তুলি নি, এবার চা-বাগানে গিয়ে মেয়েটির কথা কয়েকবার ভেবেছি। তার পরদিন সকালে উঠে কাজকর্মের পাশ কাটিয়ে এক ফাকে ওদের বাড়ী গেলুম। বাইরে কাউকেও না দেখতে পেয়ে একেবারে ওদের রান্নাঘরের মধ্যে চলে গেলুম। টুনির মা বললেন, “এস এস বাবা। তা এতদিন এসেছ, এ বাড়ী কি একবারও আসতে নেই ?” আমি সময়োচিত কি একটা কৈফিয়ৎ দিলুম। উমারাণী মাছ কুটুছিল, আমি যেতেই তাড়াতাড়ি রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে বাইরে চলে গেল। একটু পরেই হাত ধুয়ে এসে আমার পাধের কাছে প্ৰণাম করলে। টুনির মা বললেন, “বেীমা, সতীশকে দালানে নিয়ে গিয়ে বসাও গে। এখানে এই ধোয়ার মধ্যে—” দালানে যেতেই, টুনি কোথায় ছিল,এসে ব’লে উঠলে, “এৰুি! দাদা যে? কি ভাগ্যি ! বৌদিদি দাদা দাদা বলে মরে ফি দিন ਬਾਬਾਂ জিজ্ঞেস করে—দাদা পুজোর উমারাণী を〉? SAASAASAASAASAASAASAA AAAS AAAAAM AAASA SAASAASSAAMMeeS eMAAASAAAS ছুটিতে বাড়ী আসবেন তো ? দাদার দায় পড়ে গিয়েছে খোজ করতে ! ৪৫ দিন এসেছেন, এ বাড়ীর চৌকাঠ মাড়ালে চওঁী কি অশুদ্ধ হয়ে যায় শুনি ?” - আমাকে একটু অপ্রতিভই হতে হোলো। উমারাণীর কোকৃড়া চুলে ভরা মাথাটিতে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললুম, “হ্যা রে রাণী, দাদার কথা তা হলে ভুলিস নি ?” টুনির কথায় মেয়েটির খুব লজ হয়েছিল, সে মুখ নীচু করে আমার ক্টোচার কাপড়ের কোণ হাতে নিয়ে চুপ, ক’রে নাড়তে লাগলো—আমি দালানে একটা খাটের উপর বসে ছিলুম, উমারাণী নীচে আমার পায়ের কাছটিতে বসে ছিল । আমি জিজ্ঞাসা কবুলুম, “শচীশ বলছিল, দিদি চলে যাবে সোমবারের দিন। সে কথা কি ঠিক ?” উমারাণী নতমুখেই উত্তর দিল, “বাবা পত্র দিয়েছিলেন একাদশীর দিন নিয়ে যাবেন । কিন্তু আজও তো এলেন না ।” ওর গলার স্বরটা যেন একটু কেঁপে গেল । তার বিরহী বালিকা-হৃদয়টি মা-বাপের জন্তে তৃষিত হয়ে উঠেচে বুঝে সাত্বনার স্বরে বললুম, “আসবেন ; আজ তো মোটে নবমী । আচ্ছা, কলকাতা কেমন লাগলো, রাণী ?” উমারাণী উত্তর দিল, “বেশ ভালো।” আমি তার নতমুখখানির দিকে চেয়ে বল্লুম, “তা নয় রে, রাণী। ভালো কখনই লাগেনি, দাদার খাতিরে ভাল বললে চলবে না । কোথায় পশ্চিমের অমন জল হাওয়া, আর এই ধুলে ধোয়—ভালো লাগৃতেই Fil II" উমারাণী একটুখানি হেসে চুপ ক’রে রইল । জিজ্ঞাসা করলুম, “পশ্চিমে পূজো হয় রে রাণী ?” সে বললে, “ঠিক এদেশের মত হয় না। হিন্মুস্থানীরা কি একটা করে, সেও অনেকটা এই রকমের। আর সেখানে এ সময় রামলীলার খুব ধুম হয়।” আমি উঠে আসবার সময় উমারাণী আবার একবার আমার পায়ের কাছে নত হয়ে প্রণাম করলে ।