পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] এরূপ লোকদিগের হাতে অস্ত্র দিলেও তাহারা অনেক সময় অস্ত্র ব্যবহার করিতে, পরিবে না। কখন কখন হয়ত ডাকাতর অস্ত্র বাড়িয়া লইতেও পারে। তথাপি যাহারা আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র চায়, তাহাদের অস্থপ্রাপ্তির উপায় এখনকার চেয়ে সহজ কুরিয়া দেওয়া উচিত। দেশের অগ্নবৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য :সম্মিলিত , ও ব্যক্তিগত একাগ্র চেষ্ট হওয়া একান্ত আবশ্যক । যাহাতে গায়ের,জোর বুজে তাহার জন্য বাল্যকাল হইতে শারীরিক স্বাস্থ্যের প্রতি আরো বেশী মন দেওয়া দরকার। বালকদের নানারিধ কুঅভ্যাস যাহাতে না জন্মে, ও ব্রহ্মচধ্য রক্ষিত হয়, সেইরূপ শিক্ষা ও সংসর্গের বন্দোবস্ত করা প্রয়োজন । লাঠি হইতে আরম্ভ করিয়া' অন্ত নানারূপ অস্ত্রের ব্যবহার করিতে • সকলের অভ্যস্ত হওয়া, এবং মুষ্টিযুদ্ধ ও জাপানী জিউজুৎস্থ সকলের শিক্ষা করা উচিত। কিন্তু গায়ের জোর যতই বাড়ুক, অস্ত্রশস্ত্র যতই থাকুক, এবং অস্ত্রচালনার অভ্যাস যতই থাকুক না কেন, মনের জোর ও সাহস না থাকিলে সবই বৃথা । মনের জোর ও সাংস কেমন করিয়া বাড়িতে পারে, তাহা হঠাৎ এক কথায় বলিয়া দেওয়া কঠিন। কিন্তু বাঙালীর ভীরুতা কেন হয়ত দ্রুত কমিতেছে না, হয়ত বা বাড়িতেছে, তাহার কোন কোন কারণ নিদ্দেশ করা যাইতে পারে। ইস্কুলে দেখা যায়, এক-একটা ক্লাসের ২৩টা দুষ্ট বালকের ভয়ে সমস্ত ক্লাস তটস্থ হইয়া থাকে ; অথচ ঐ ২৩টা ছাত্র আর-সকলের চেয়ে বলিষ্ঠ না হইতে পারে। দুষ্ট ছেলেরা যেমন ‘মরিয়া’ ও একজোট, ভালছেলেরা যদি তেমনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও একতাস্থত্রে বদ্ধ হয়; তাহা হইলে দুষ্ট ছেলেদের প্রভাপ সহজেই নষ্ট করা যায়। সেইরূপ যে গ্রামে ডাকাতী হয়, তাহার অধিবাসীরা যদি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও একমন হন, তাহা হইলে তাহার ডাকাত তাড়াইতে ও কোন কোন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করিতে পারেন । ইহাতে অবশ্য বিপদ আছে। কিন্তু ডাকাতদের সহিত যুদ্ধ না করিলেও ত বিপদ ঘটে, ডাকাতরা ত নিরীহ অবিরোধী লোকদেরওখুন জখম করে। ডাকাতদের হাতে হত; হৃতসৰ্ব্বস্ব বা জখম বিবিধ প্রসঙ্গ—ডাকাত ও গুণ্ডার অত্যাচার ኵጎፋ » হইবার পালা কখন কাহার হইবে, তাহারও স্থিরতা নাই । কলিকাতায় গুগুীর হাতে কখন কাহার অর্থনাশ বা প্রাণসংশয় ঘটবে, তাহারও ईिईड नाई। ७७ কাহাকেও আক্রমণ করিতেছে দেখিলে, দর্শকেরা যদি বিপন্ন ব্যক্তির সাহায্যাৰ্থ অগ্রসর হন, তাহা হইলে গুণ্ডার অত্যাচার, কমে। . . কিন্তু যদি সবাই “চাচ, আপুন বঁাচা" নীতি অবলম্বন করেন, তাহা হইলে কাহারও আত্মরক্ষার উপায় হয় মা ! আমাদের ভীরুতার কারণ আর-একটি এই, যে, আমরা কেবলই বলি ও শুনি, যে, বাঙালী ভীরু ও কাপুরুষ, বাঙালী অমুক জায়গায় আক্রান্ত হইয়া আত্মরক্ষার চেষ্টাও না করিয়া মার খাইল এবং দর্শকের কেবল দাড়াইয়া দেখিল বা পলায়ন করিল ; কিম্বা অমুক গ্রামে ডাকাতী হইয়া গেল, ডাকাতদের সংখ্যা ১০২৩।২৫ ছিল, তাহারা মারধর করিয়া অভ্যাচার করিয়া এত হাজার টাকার জিনিষ লইয়া গেল, গ্রামবাসীরা কিছু করিল না, বা করিতে পারিল না । ইহাতে আমাদের ভীরুতা বাড়ে, আমবা যে অসহায়, এই ভাব বুদ্ধমূল হয়। কিন্তু ১০। ২০ জন ডাকাতদের সাহায্য কে করে ? তাহার অনেক শত বা হাজার লোকের বাসভূমি গ্রাম খান লুট করে কি সাহসে ? নিজের বুকের পাট বড় করা চাই। আর যদি ভগবানের উপর নির্ভরের কথা বল, তাহা হইলেও ত ইহা নিশ্চিত, যে, ভগবান ডাকাতদের পক্ষে নহেন, সংলোকদেরই পক্ষে । কিন্তু তিনি ভীরু কাপুরুষেরও পক্ষে নহেন, ইহাও নিশ্চিত। তবে কি, “আমরা ভীরু, আমরা ভীরু," না বলিয়া ও না শুনিয়া, আমরা ক্রমাগত কল্পনা করিয়া বলিতে ও শুনিতে থাকিব, “আমরা সাহসী, আমরা বীর” ? তাহ নয় ;–মিথ্যা বলিলে ও কল্পনা করিলে কখনও উন্নতি হয় না। সত্যের পথই অবলম্বন করিতে ইইবে । - ইহা সত্য नंप्र, যে, বাঙালী সৰ্ব্বত্ৰ সৰ্ব্বদ ব্যক্তিগত ভাবে কেবলই মার থাইয়াছে, কথন আত্মরক্ষা করিতে ও দুবৃত্ত আততায়ীকে পরাস্ত করিতে পারে নাই । ইহাও সত্য নহে, যে, বঙ্গের কোনও গ্রামের লোকেরা