পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- WO8 কিম, এখনি উঠে এসে দেখ গিনি, তুমি যদি ছোট বোমাকে দিয়ে অমন করে কড়া মাজাও তা হলে আমি আজ থেকে আর বাড়ীতে ভাত খাব না। গিন্নি কহিতেন—কে ওকে কড়া মাজতে মাথার দিব্যি দিয়েছে? - কোন দিন বা কৰ্ত্তা বলিতেন—ষ্ট্যাগ। গিন্নি, যে বোম্বাই আম ক'টা এনেছিলুম, ছোট বোমাকে একটা দিয়েছিলে ত ? গিন্নি ঝঙ্কার দিয়া কহিতেন—ই্যা গে। হ্যা, দিয়েছিলুম, দিয়েছিলুম, দিয়েছিলুম ! আমরা যেন রাকুলী, ওঁর বেীকে না দিয়ে সবই আমরা গিলেছি । শুনিয়া কৰ্ত্তা তাড়াতাড়ি তামাকের চেষ্টায় ভবেশবাবুর বৈঠকখানায় পলাইয়া যাইতেন। সেদিন অনুপমার শরীরটা ভাল ছিল না। ননদ বিমলা কহিল—ই গা বউ, তোমার ত আজ অসুখ করেছে ; তুমি আজ আর কিছু থাবে না ত? এরূপ প্রশ্নে ভোজনের আসক্তি স্বতঃই কমিয়া যায়। অনু সংক্ষেপে কহিল—ন । বিমলা গিন্নির কাছে গিয়া কহিল—ম, বউ বলছিল আজ আর সে কিছু থাবে না। গিল্পি কহিলেন—ন খায় ত আমি কি আর গিলিয়ে দেব ! শুনিয়া অনুপমার মনে পড়িত তাহার বাপের বাড়ীর কথা। পিতামাত কর্তৃক তিরস্কৃত হইয়। কতদিন সে অল্পের উপর অভিমান করিয়া বসিত। ঠাকুরমার বারম্বার সস্নেহ আহবানেও ভোজনে সন্মত হইত না। তার পর ক্ষুধ যখন অত্যন্ত-প্রবল হইত এবং বহুপ্রত্যাশিত পুনরাহবান কোমলতর মূৰ্ত্তিতে দেখা দিত, তখন সে যেন নিতান্ত দয়াপরবশ হইয়াই অন্নের উপর সঞ্জাত ক্রোধ বড়জোর ব্যঞ্জনবিশেষের . উপর নিক্ষেপ করিয়া শাস্ত হইত। এখন আর সেদিন নাই। এখানে দ্বিতীয় আহবান প্রত্যাশা করা বিড়ম্বন৷ . भाऊ । * * গৃহিণী কিন্তু সেদিন একবার দয়া করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন-একটু সাবু টাবু থাবে ত ? না, আর-কিছু এনে • দিতে বলব ? প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩২২ --


০৭:৫১, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)০৭:৫১, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)~~

উক্ত স্বপথে অনুপমার কোন কালেই রুচি ছিল না। সে কিন্তু বেশ জানিত উহার প্রতি অনাস্থ প্রদর্শন করিয়া’ উপাদেয়তর কোন পথ্য নির্দেশ করিলে, সে কথাটি অপরাহ্লবৈঠকে সমুপস্থিত হইয়া সমবেত রঙ্গময়ীদের সম্মুখে হাসির নূপুর পায়ে দিয়া বিবিধ ভঙ্গীতে নৃত্য করিতে থাকিবে, এবং ভূরি ভূরি রঙ্গরসের সৃষ্টি করিয়া আসর সরগরম করিয়া তুলিবে। অগত্য সে সম্মত হইল। নানা দুশ্চিন্তায় অঙ্গর শরীর ভাঙ্গিয়া পড়িতেছিল। অতুর পিতা কন্যার অমৃগের সংবাদ পাইয়৷ কিছুদিনের জন্য তাহাকে পশ্চিমে তাহার কৰ্ম্মস্থানে লইয়। যাইবার প্রস্তাব করিলেন । কৰ্ত্তার আপত্তি ছিল না, গৃহিণী কিন্তু বাকিয়া বসিলেন । নিভৃতে দুদণ্ড কাদিয়। যে হৃদয়ভার লঘু করিবে, অনুপমার সে উপায়ও ছিল না। গানে আছে— রন্ধনশালাতে যাই তুয়া বঁধু গুণ গাই ধুয়ার ছলনা করি কাদি। অনুপমাও রন্ধনশালাতে গিয়া কাদিত এবং সেটা শুধু বঁধুয়ারই গুণ স্মরণ করিয়া নহে। বিমল দেখিতে পাইলে অহু কহিত—তোমার দুটি পায়ে পড়ি ঠাকুরঝি, মাকে বোলে না। বিমলা তখনি গিয়া বলিয়। দিত। গৃহিণী কহিতেন—উনি কচি খুকী ! পশ্চিমে হাওয়া পেতে যাবেন বলে রাতদিন প্যানপেনিয়ে মরছেন। দণ্ডবং বাবা মেয়ের খুরে, আমার চোদ পুরুষের ভাগি যে এখনো দড়ি ছেড়েন নি । - ( A.) অনুপমার একটিমাত্র স্বহং ছিল,—সে বিধবা অরুণা। বিবাহের দুইবৎসর পরেই তাঙ্গর স্বামী ইহুধাম পরিত্যাগ | করেন। অনুপমা তাহার সমস্ত দুঃখের কথা অরুণার কাছে বলিয়া অত্যন্ত আরাম পাইত। শুনিতে শুনিতে তাহার চোখদুটি সমবেদনায় ছল ছল করিয়া উঠিত। [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড । মধ্যে মধ্যে অনাহারে দিনযাপন করা যে কি কষ্ট অরুণা তাহা বিলক্ষণ বুঝিত। তাহারও একটু ইতিহাস আছে। । অরুণার স্বৰ্গীয় শ্বশুরের দুই পুত্র ; তাহার ছিল। কনিষ্ঠ। কনিষ্ঠের অংশটা পাছে হাতছাড়া হয়, এই আশঙ্কা । ভবেশবাবু বিধবা কন্যাকে শ্বশুরালয়ে পাঠাইয়াছিলেন। | . ১ম সংখ্যা ] SSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSS ------ অরুণা


- \^& SM MS MS .সেখানে অরুণার গৃহ ছিল না এবং গৃহকৰ্ম্মের অন্ত ছিল না। শব্দে বাহির হইয় গেল। উপরতল হইতে অনেকগুলি সেদিন একবেল পরিশ্রমের পর অরুণা মধ্যাহ্নে দু’টি ভাত লইয়া বসিয়াছে মাত্ৰ –প্রথম গ্রাস তুলিতেই কোথাকার একটা ক্ষুদ্র চিংড়ী অন্নের মধ্যে আত্মপ্রকাশ করিল ; এবং বড় জ। একেবারে আকাশ হইতে পড়িয়া গঙ্গাজলআন মালীটার প্রতি অজস্র গালিবর্ষণ করিতে লাগিলেন । আবার কোনদিন ঠিক এমনি সময়ে বড় জার নগ্নকায় জুতাপায়ে শাস্তাকুড়-মাড়ান ছেলেটি আসিয়া পরম আদরে ছোটকাকীর গলা জড়াইয়া পরিত। অবোধ বালকের আদর লাভের স্পৃহা ঠিক কাকীমার খাবার সময়টিতে কেন যে এত অসম্ভব রকম উদাম হইয়। উঠিত—সেটা অনুসন্ধানসাপেক্ষ। যাহাই হউক এমনি করিয়া প্রতিমাসে কন্যার গোটাপাচসাত একাদশীর সংবাদ পাইয়া ভবেশবাবু সেখানে দাত ফুটাইবার দুরাশ পরিত্যাগ করিলেন। অরুণা বাপের বাড়ী ফিরিয়া আসিল । অনুপমার প্রতি তাহার সহানুভূতি ক্রমে প্রগাঢ় বন্ধুত্বে পরিণত হইল । একদিন অরুণ তাহার অসুস্থ সর্থীর জন্য কিছু জলখাবার আনিয়াছে দেখিয়৷ গৃহিণী কহিলেন—তোমার এত দরদে কাজ কি বাপু ছোটবউ কি আমাদের বাড়ী পেতে পায় না ? ১. সেই দিন হইতে তাহাদের প্রকাশ্য আদান প্রদান রহিত হইয়া গেল। (b. ) সেতুবন্ধ রামেশ্বর পর্যন্ত সারিয়া পিসিম সেবার বাড়ী ফিরিলেন। গণেশ মাতাপিতাকে প্রণাম করিয়া বাহিরের মুর আশ্রয় করিল। একদিন সুধীরের নিকট অরুণার বৈধব্যসংবাদ পাইয়া, গণেশ বহুকালের পর খুব একমাস মদ খাইল । চেয়ারে বসিয়া দূরু আকাশের দিকে দৃষ্টি স্থির রাখিয় আপন মনে গুনগুন করিয়া কি একটা গান ধরিল। এই সময়ে অতুপমা একরেকাৰ ফলমূল মিষ্টান্ন এবং এক মাস জল লইয়। গৃহে প্রবেশ করিল। রেকবিগান গণেশের সন্মুখস্থ টেবিলে রাথিয় জলের মাস হাতে নতমূগী হইয়া দাড়াইয়। রহিল। গণেশের কি মনে হইল কে জানে, লে একটানে রেকব: ধান উঠানে ফেলিয়া দিয়া চটিজোড়া পায়ে দিয়া চটচটু - স্ত্রীকণ্ঠের একটা চাপা উচ্চহাস্ত তাহার কানে গিয়া পৌছিল। - অরুণাদের বাড়ীর পাশ দিয়া যাইতে যাইতে গণেশ স্বধীরের গলা শুনিতে পাইল—দিদি, দিদি, আর-একটু হ’লেই আট আনা পয়সা লোকসান হয়ে যাচ্ছিল ! অরুণা –সে কিরে ! কেমন করে’ ? গণেশের গমনবেগ অত্যন্ত মন্দীভূত হইয়া গেল। সে রাস্তার একপাশে বসিয়া একটা পাথর কুড়াইয়া রাস্তার উপর যা'-তা’ লিখিতে লাগিল । স্বধীর –বাজারের দিকে যাচ্ছি, রাস্তায় দেখি একটা খোড়া ভিকিরী। আমার পকেটে ছিল একটা পয়সা আর একটা আধুলি । আমি অত দেখিনি, পয়সাটা দিতে দিয়ে ফেলেছি আধুলিট। আধুলি কি না । তার হাতে অম্‌নি চকচক করে উঠেছে! খোড়ার মুখে হাসি আর ধরে না ; সে মনে মনে কল্পে—কেল্লা মার দিয়া ! অরুণ।--তারপর তুই বুঝি আধুলিটা কেড়ে নিয়ে এলি ? স্বধীর।—তা কেন ? আমি পয়সাটা দিয়ে আধুলিটা ফিরিয়ে নিলুম। অরুণ –ছিঃ ! তুই এমন নিষ্ঠুর ! যা, ছুটে গিয়ে এখনি তাকে আধুলিট দিয়ে আয়। সুধীর –কিন্তু আমাকে একটা লাটাই আর দশবাণ্ডিল স্বতে কিনতে হবে যে ! অরুণ।--পে হ'বে এখন, তুই যা। দেখিস, যেন পয়সাটা আবার ফিরিয়ে আনিস নি। (> ) ফাস্তুন মাস। সে রাত্রে চাদের আলো, বসন্তের বাতাস। গণেশ গোলাপীগোছ একটু মাত্র। চড়াইয়া একখানা মাছর বিছাইয়া ছাদে শয়ন করিল। রাত তখন প্রায় এগারটা। ইতর সাধারণ ঘুমাইয়াছে ; কেবল যাহাদের প্রেমালাপের পালা তাহারাই জাগিয়া আছে। গণেশ দেখিল ভবেশবাবুদের ছাদ হইতে কাঠের সিড়ি দিয়া কে একজন স্ত্রীলোক নামিয়া আদিতেছে। তাহার হাতে একপানি ছোট থাল। গণেশ ছিল সিড়ি হইতে । - -