পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৩০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

《o

    • /w/、ヘヘヘ_/

প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩২২ সেথা হ’তে ফিরি গেল চলি পীরি বধু আন্ধুরীর ঘরে । সকাল হইতে, সমুখে মুকুর রাখিয়া বাধিতেছিল সে চিকুর, মুছিতেছিল সে হাতের সিদূর পুথির পাতার পরে। ভূপতিরে হেরি বাকি গেল রেখা, কাপি গেল তার হাত । কহিলা ভাসিয়া নয়নের জলে আজিকে যাইবে কি সাহসবলে ? মাথা খাও, ফের, ঘটিবে না হ’লে বিষম বিপদপাত। দোক্তা ও পান গালে ঠাসি দিয়া খোলা জানালার ধারে, কুমারী সন্ন বসি একাকিনী পড়িতে নিরত প্রণয়-কাহিনী, সহসা শুনিয়া মস মস ধ্বনি চমকি চাহিল স্বারে । গুলের কোটা ফেলি রাখি ভূমে গেল ভূপতির কাছে। কহে সাবধানে, তার কানে কানে, পাজির আদেশ আজি কে না মানে ? এমনি করে কি মরণের পানে ছুটিয়া চলিতে আছে ? দ্বার হতে দ্বারে ফিরিল ভূপতি নমিয়া দুর্গা কালী— “গাড়ী ত আসেনি" শিৰু স্থাকি কয় “হ’ল ষে বাবুর যাবার সময়।" . শুনি ঘরে ঘরে কেহ পায় ভয়, - কেহ দেয় তারে গালি । - o - [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড আজকে লোকের নাহিক অস্তু সেনেট-সৌধ পরে । ক্রমে খুলি গেল কপাট কঠিন কল-কোলাহল হয়ে এল ক্ষীণ দশট ঘণ্টা ধ্বনিল প্রাচীন গোলাম-খানার ঘরে । ভরি গেল টুল টেবিল মলিন, দপ্তরী ছুটে চলে, প্রশ্ন দেখিয়া শুকায় পরাণ, ঘৰ্ম্ম গড়ায় মুক্ত সমান, নড়িতে চড়িতে থালি "সাবধান!” গার্ড ফুকরিয়া বলে । হঠাৎ লাফায়ে উঠিল ভূপতি, ছুটে আসে গার্ড যত, "কি হ’ল কি হ’ল ?” শুধায় তাহারে । সে কয় কাদিয়া “গলার কলারে ফুটিতেছে কেন যেন বারে বারে ছু চের ডগার মত ” মুক্ত করিতে জামার বক্ষ সহসা ফুটিল হাসি— দেখে ছারপোকা অতি দুৰ্ম্মতি প্লেটের উপরে চলে দ্রুতগতি, অমনি তাহারে টিপিল ভূপতি, নিমেষে ফেলিল নাশি । সেদিন শুভ্র বসন-ফলকে পড়িল রক্ত লিখা । সেদিন ধৰ্ম্ম রটেল মহীতে, পাজির বিধান ভাবিতে ভাবিতে মুণ্ডিত শিরে কঁাপিল চকিতে দেশের যতেক শিখা ৷ শ্ৰীবনবিহারী মুখোপাধ্যায় । T ৫ম সংখ্যা ] পাতঞ্জল সাস্থ্যে ব| যোগদর্শনে ঈশ্বর কপিলসাম্ব বলেন যে এই পরিদৃশ্যমান জগতের অন্তরালে একটি অব্যক্ত মূল কারণ আছে। এই মূল কারণটি সৰ্ব্বদাই এক অবস্থা হইতে অন্য অবস্থাতে পরিণত হইতেছে, এবং এইরূপে কতকগুলি বিকৃতি স্থষ্টি করিতেছে । এই বিকৃতির মধা দিয়াই অব্যক্ত প্রকৃতি বা মূল কারণ ক্রমশঃ ব্যক্ত ও পরিস্ফুট হইতেছে। প্রকৃতিরই সত্তা বা উপাদানই এই বিকৃতির মধ্য দিয়া পরিস্ফুট ও পরিব্যক্ত হইয়া বিকাশ লাভ করিতেছে । কিন্তু এই বিকার বা বিকৃতিগুলির উৎপত্তি দ্বারা প্রকৃতির কোন ও ক্ষয় হয় না। তাহার ভাণ্ডার অক্ষয় ও পরিপূর্ণ হইয়াই থাকে। সত্ত্ব, রজ, তম, এই তিনটি বস্তু লইয়াই প্রকৃতির নিশ্বাণ ! এই তিনটির কোনও একটিই আবার দুইটি ছাড়া থাকিতে পারে না । সত্বের ধৰ্ম্ম "প্রকাশ”, রজ ক্রিয়াত্মক এবং ‘তম’র ধৰ্ম্ম আবরণ। এই তিনটিকেই ত্রিগুণ বলা হইয়া থাকে। যখন এই গুণত্রয় পরস্পরকে এমন করিয়া বাধা দেয়, যে, তাহদের কোনটির ধৰ্ম্মই স্ফৰ্ত্তি পায় না, পরস্পরের প্রতিঘাতে পরস্পরের ধৰ্ম্ম একেবারে আচ্ছন্ন বা তিরোহিত হইয়া থাকে, সেই অবস্থাকেই এই ত্রিগুণের সাম্যাবস্থা বলা হয়, এবং এই সাম্যাবস্থাকেই প্রকৃতি বলা হয়। এই ত্রিগুণের কোনও একটি গুণ যখন অপরগুলি অপেক্ষা প্রবল হইয় উঠে, তখন তাহাকে গুণক্ষোভ বা গুণবৈষম্য বলা হয়। এই গুণক্ষোভের প্রথম অবস্থাতে, সত্ত্বগুণ প্রবল হইয় উঠে, এবং তাহাতেই বুদ্ধিতত্বের উৎপত্তি হয়। ইহার পর যখন রজোগুণ বাড়িয় উঠে তখনই অহঙ্কারতত্ত্বের উৎপত্তি হয় । এই অহঙ্কারতত্ত্ব হইতে, তমোগুণের প্রাধান্তে পঞ্চতন্মাত্র, রঙ্গোগুণের প্রাধানে পঞ্চ কৰ্ম্মেন্দ্রিয়, সত্ত্বগুণের প্রাধান্সে পঞ্চজ্ঞানেন্দ্রিয় উৎপন্ন হয়। এই পঞ্চতন্মাত্র অহঙ্কার হইতে উৎপন্ন হইলেও, অহঙ্কার যখন বুদ্ধিতত্ত্ব হইতে উৎপন্ন হইয় থাকে, সেই অবস্থাতেই বুদ্ধিতত্বের মধ্যে উৎপাদধৰ্ম্মী অহঙ্কারের মধ্যেই ইহার আদ্য বিক্রিয়৷ আরম্ভ হয় । কাজেই ইহার বিকার দয়া পরিণতি বুদ্ধিতত্বের মধ্যেই আরম্ভ হয় 8 পাতঞ্জল সাস্থ্যে বা যোগদর্শনে ঈশ্বর & Ax (লিঙ্গমাত্র সংস্থষ্ট। বিবিচ্যন্তে )। এই পঞ্চতন্মাত্রই ক্ষিতি অপ তেজ মরুং ও বোম প্রভৃতি মহাভূতের স্বল্প কারণ ; কারণ এই পঞ্চ তন্মাত্রের মধ্যে যখন তমোগুণ বাড়িয় উঠে তখনই পঞ্চমহাভূত উৎপন্ন হয়। এই পঞ্চমহাভূতের পরমাণুগুলি আবার পরম্পরের সহিত মিলিয়া নানাবিধ ধৰ্ম্ম উৎপন্ন করিয়া থাকে, এবং এই ধর্মের ভেদ-অনুসারে বস্তুর ভেদ স্বীকৃত হইয়া থাকে। স্বপ্নতম বিকৃত বুদ্ধিতত্ব হইতে আরম্ভ করিয়া বিভিন্নগুণের নূ্যনাধিক্যবশতঃ স্কুল, স্কুলতর ইত্যাদিক্রমে মহাভূত পৰ্য্যন্ত বিকৃতির যে ভিন্ন ভিন্ন স্তর দেখিতে পাওয়া যায়, তাহাদিগকে তত্ত্ব কহে, কিন্তু মহাভূতের পরমাণুগুলির পরস্পর বিভিন্ন ও বিচিত্র সন্নিবেশ-নৈপুণ্যে যে-সমস্ত জড় উদ্ভিদ প্রাণি-শরীর প্রভৃতি বস্তুসমূহ উৎপন্ন হয়, তাহ তত্ত্বোংপত্তি নামে অভিহিত হয় না। কারণ পরমাণুর সঙ্ঘাত বা সংমিশ্রণসস্তৃত বস্তুগুলি বাহ্যদৃষ্টিতে যতই বিরূপ দেখাক না কেন, তাহাদিগকে কোনক্রমেই পরমাণু হইতে ভিন্ন বলিয়া অস্বীকার করা যায় না। বস্তুত: কাঠ খড় লোহা তাম। সোনা পাথর লতাপাতা গাছ কীট পতঙ্গ পশুপক্ষী প্রাণিশরীর প্রভৃতি সংসারে যাবতীয় জড়পদার্থের কোনটি হইতে কোনটি একেবারে ভিন্ন নহে; প্রভেদমাত্র পরমাণুসন্নিবেশের ; যে পরমাণুগুলির কোনও প্রকার সন্নিবেশবশতঃ আমরা তাহাদের উপচিত ধৌগিক সমষ্টিকে কাঠ বলি, তাহারাই অন্য কোনও বিশেষ প্রকারে সন্নিবিষ্ট হইলেই সেই যৌগিক সমষ্টিকে হয়ত আমরা লোহা বা তাম৷ বলিতাম, আবার তদপেক্ষ কোন বিশেষ প্রকারের সন্নিবেশকে হয়ত ফুল বা ফল বলিতাম। তবেই কোনও বস্তুর সহিত কোনও বস্তুর আত্যন্তিক ভেদ নাই। অতীত বৰ্ত্তমান ও ভবিষ্যৎ হিসাবে কিংবা ধর্থের বিবিধ পরিবর্তনের হিসাবে যাহা কিছু ভেদ দেখা যায় তাহ কেবল পরমাণুসন্নিবেশের বৈচিত্র্য ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রতিক্ষণেই পরমাণুগণ রজোগুণের দ্বার বিতাড়িত হইয়া পরস্পর স্থানপরিবর্তন করিতেছে, এবং তাহার ফলে একদিকে যেমন একই বৰ্ত্তমানক্ষণের মধ্যে সমস্ত অতীত বিধৃত হইয়া রহিয়াছে এবং ভবিষ্যৎ পরিণামের বীজও তাহারই মধ্যে সঙ্কুচিত হইয়া রহিয়াছে, তেমনি আবার অপরদিকে প্রতিক্ষণের নূতন সন্নিবেশের দ্বার