পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

००७


-ാം -- "গীতার আলোচনা করিলে বোধ হয় যে, গীত প্রচারের সময় ভারতবর্ষে মোক্ষলাভের জন্ম চারিটি বিভিন্ন মার্গ প্রচারিত ছিল। সেই মাৰ্গচড়ুইয়ের নাম যথাক্ৰমে-কৰ্ম্মমার্গ, জানমাৰ্গ, ধ্যানমার্গ ও ভক্তিমাণ। যিনি যে পথে চলিতেন, তিনি ভাবিতেন যে, সাধনমার্গের সেই একমাত্র পণ, দ্বিতীয় পথ নাই। ভগবান গীত প্রচার কaিয়। ঐসকল বিভিন্ন সাধনমার্ণের অপূৰ্ব্ব সমন্বয় বিধান করিয়াছেন। তাহার ফলে দেখ যায় যে, প্রয়াগে যেমন গঙ্গা যমুন ও সরস্বত পুণ্য সঙ্গমে মিলিত হইয় পতিতপাবনী ধারায় দেশ প্লাবিত করিয়া সমুদ্রাভিমুখে প্রবাহিত হইয়াছেন, সেইরূপ গীতাতে, কৰ্ম্ম, জ্ঞান, ধান ও ভক্তিরূপ মার্ণচতুষ্টয় অপূৰ্ব্ব সমন্বয়ে সমম্বিত হইয়া জগৎকে পবিত্র করিয় ভগ বানের অভিমুখে প্রবাহিত হইয়াছে। এই সমস্বয়বাদ গীতার নিজস্ব-- শাস্ত্রের আর কোথাও এমন উজ্জ্বল ভাবে উপদেশ দেখা যায় না। * + অতএব, কৰ্ম্ম, জ্ঞান, ভক্তি ও ধানের সমন্ময় উপদেশ দিয়া গীত৷ দেখাইয়াছেন যে, জীবের সম্পূর্ণ-বিকাশের জন্য কেবল কৰ্ম্ম, কেবল জ্ঞান, কেবল ভক্তি, কেবল ধ্যান যথেষ্ট নহে , জীবকে ব্রহ্মে বিকশিত করিতে হইলে, এ মাৰ্ণচতুষ্টয়কেই সম্পূর্ণ আয়ত্ত করিতে হইবে। নতুব আত্মার আংশিক ঐকদেশিক বিকাশমাত্র হইবে । সেইজন্য গীত৷ কৰ্ম্মবাদ, জ্ঞানবাদ, ভক্তিবাদ ও ধান-বাদের সামঞ্চস্ত করিয়৷ এই অপূৰ্ব্ব সন্যবাদের উপদেশ দিয়াছেন।" কেবল সাধনাসম্বন্ধে নহে, দার্শনিক বাদবিবাদ সম্বন্ধেও - গীতাতে এই সমন্বয়ের ভাব অত্যুজ্জ্বল। তাহার ফলে সাংখ্য ও বেদান্ত, দ্বৈত ও অদ্বৈত, বিবৰ্ত্ত ও পরিণাম—সত্য - পরিণত হইয়াছে। আমরা যদি এই সমন্বয়ের ভাবে ভাবিত - হইয়া সত্যের অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হই, তাহা হইলে অনায়াসে - - জয় বিতণ্ডার কণ্টকিত ক্ষেত্র পরিহার করিয়া সামঞ্জস্তের উৎ মা স্বাক্ষ হইতে পারব। বুদ্ধি ও বোধি । - - - - - - - আমাদের স্মরণ রাখিতে হইবে যে, তত্ত্বদর্শনের করণ বুদ্ধি নহে-বোধি। মার্জিত বুদ্ধি দ্বারা তর্কবিচার নিম্পন্ন হয়, কিন্তু বোধি ভিন্ন তত্ব সাক্ষাংকার হয় না। এসম্বন্ধে o - - - - - - o প্রসিদ্ধ ফরাসী দার্শনিক বাগস কয়েকটি উপাদেয় কথা o বলিয়াছেন—তাহ আমাদের প্রণিধানযোগ্য :– o "Intuition and intellect represent two opposite directions, of the work of consciousness. Intuition goes in the very direction of life : intellect in the opposite direktion. ... ." Intellect is characterised by a natural inability to know life. Instinct is o sympathy and turned towards life." - - এই কথাঁর সম্প্রসারণ করিয়া তাহার শিষ্য Wildon o - Carr বলিতেছেন – - --"What them is the intellect 2 It is to the mind what the eye or the ear is to the body. Just as in the course of evolution the body has become endowed -- প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩২২ - - - - [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড


- --

with certain special sense-organs which enable it to receive the revelation of the reality without, and at the same time limit the extent and the form of that revelation, so the intellect is a special adaptation of the mind, which enables the being endowed with it to view the reality outside it, but which at the sametime limits both the extent and character of the view - the mind takes." --- তবেই বুঝা গেল-বুদ্ধি তত্ত্ব-সাক্ষাতের পক্ষে পৰ্যাপ্ত । নহে । সেইজন্য পাশ্চাত্য দার্শনিকের বলিতে আরম্ভ । করিয়াছেন – o “Cease to identify your intellect and your Sell, Become at least aware of the larger truer Sels, that 1. sree creative self which constitutes your life as distin-1 guished from the scrap of consciousness which is its 1. servant. * * * Smothered in daily life by the 1, fretful activities of our surface-mind, 鬣 emergesin our great moments, and seeing ourselves in its radiance, we know, for good or evil, what we are: We are not pure intellects. * * A round our conceptional and logical thought, there remains a vague, nebulous somewhat, the substance at whose expense the luminous nucleus we call the intellect is formed." ' –Underhill's Mysticism pp. 389, অর্থাং বুদ্ধি সম্বিতের সর্বস্ব নহে—একটি ভগ্নাংশ মাত্র। । বোধি তাহার উপরে। এই বোধিকে লক্ষ্য করিয়া জাৰ্ম্মান । দশদিক আয়ুকেন (Eucken) বলিয়াছেন : “There is a definite man." ইহাই বোধি)। তিনি ইহার নামকরণ করিয়াছেন Gemuth. transcendental “It is the core of personality. There God and man initially meet." উপনিষদ যাহাকে গুহা,’ ’হৃদয়’, ‘দহর’ আখ্যা निग्रारश्न —Genuth কি তাহারই ছায়া ? - এই বুদ্ধির কোলাহল নিবৃত্ত ন হইলে বোধির বাণী শ্রুতিগোচর হয় না। সেইজন্য উপনিষদ বলিয়াছিলেন - পরাঞ্চি পানি বস্তৃং স্বাস্থ তন্মাং পরাক পশুতি নাস্থরাঙ্কন। । কশ্চিদ ধীর প্রতাগাত্মান ঐক্ষ২Iআবৃত্ত-চক্ষুর মৃতত্বমিচ্ছন। - এই মৰ্ম্মে Jacob Boehme afäi* ft&a :— - - “When both the intellect and will are quiet and passive " " then the eternal hearing seeing and speaking will be revealed in thee.” সভ্যতার ইতিহাস আলোচনা করিলে দেখা যায় যে, জাতির জীবনে দুইটি যুগ পর্যায়ক্রমে ক্রীড়া করে । * বোধির যুগ, অপর বুদ্ধির যুগ। বোধির যুগে তবে সাক্ষাংকার হয়, সত্যের প্রত্যক্ষ দর্শন হয় এবং বুদ্ধির যুগে তত্বের বিচার হয়, সত্যের বিতও হয়। বোধির যুগ ঋষিঃ - principle in ാ - - - যুগ, বুদ্ধির যুগ ভাষাকারের যুগ। এ সম্বন্ধে একজন পাশ্চাত্য পণ্ডিত কয়েকটি সুন্দর কথা বলিয়াছেন – “civilisation, like everything else in the world, is --- subject to unceasing, alternation, and two phases stand out clearly all through its history, ever repla. cing and succeeding each other. In the one, the positive phase, civilisation creates; in the other, the negative phase, it reproduces and copies. In the first phase it is in touch with realities which surnish the over-flowing source of new invention and inspiration : in the second it has lost touch with the realities themselves and bases itself on descriptions of realities —on tradition, books, ancient authorities; it copies explains, comments and follows.”—M. Van Menon, in the Commonweal. ভারতবর্ষে বোধির যুগ ঋষিদিগের সহি অন্তষ্ঠিত হইলে তর্কযুগের আরম্ভ হইয়াছিল ; সে যুগের এখনও অবদান হয় নাই। ভাষ্য, বাৰ্ত্তিক, টাকা, নিবন্ধ, অতুবন্ধ ইত্যাদি এই যুগের কীৰ্ত্তি বুদ্ধির দ্বারা তত্বের যতদূর নিরাকরণ হইতে পারে, তৎপক্ষে ইহার কিছুমাত্র ক্রট করেন নাই। কাউএল সাহেব বলিতেন যে, এইসকল গ্রন্থের মধ্যে প্রবেশের চেষ্টায় পাশ্চাত্য মস্তিষ্ক বিমূর্ণিত *—makes the European head dizzy vis-5sos কেন, এরূপ প্রাচ্য ও বিরল যিনি অবাধে এইসকল নিশিত বুদ্ধিভেদ্য তর্কারণ্যে প্রবেশ করিয়া অক্ষত মস্তিষ্কে প্রত্যা বৰ্ত্তন করিতে পারেন। --- প্রাচীন দর্শনেও যে পরবাদ আছে, এ কথা অস্বীকার - করি না। ব্রহ্মস্বত্রের দ্বিতীয় অধ্যায় ইহারই যথেষ্ট উদাহরণ। পঞ্চশিখাচায্যের যঠিত । ঈশ্বরকৃষ্ণের সাংখ্য কারিক যাহ্মার আধ্যাশ্লোক-নিবদ্ধ সংগ্রহগ্রন্থ । সেই ধষ্ঠিতন্ত্রও পরবাদ-বিবর্জিত ছিল না। ইহাও স্বীকার করি ষে, কেবলং শাস্তুমাfশ্রতা ন কত্ত্ববো। বিনির্ণয়: । যুক্তিহীন বিচারে তু ধৰ্ম্মহানি প্রজায়তে । কিন্তু তথাপি মনে হয়—বাদ ও বিতও এক বঙ্গ নহে । আর মনে পড়ে — নৈষ। তর্কেণ মতিরাপনেয়। এবং মনে পড়ে বাদরায়ণের সূত্র - অক্ষাপ্রতিষ্ঠান –ব্রহ্মাত্র ২১১১ ইহার ভায্যে শ্ৰীশঙ্করাচায্য লিখিয়াছেন – লোকে বুদ্ধির উপর নির্ভর করিয়া যে তর্কের উত্থাপন করে সে BBBB BBS BBBS BBB BB BBBBB BBBDD DS BBB - ভারতীয় तेन - ゞヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘーヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘし বুদ্ধিমান নিরাস করেন। পক্ষান্তরে, ঠাছার তর্কও তৃতীয় বুদ্ধিমন কর্তৃক খণ্ডিত হয়। অতএব তর্কের শেষ কোথায় ? শঙ্করাচার্য্য তৃতীয় বুদ্ধিমানেই বিশ্রাস্ত হইয়াছেন। কিন্তু যদি তৃতীয়ের পর চতুর্থ থাকে, চতুর্থের পর পঞ্চম তাহার পর ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ইত্যাদি, বীজগণিতের "n" - পৰ্য্যন্ত, তাহ হইলে তর্ক কোথায় গিয়া পৰ্য্যবসিত হয় ? আমাদের দেশে তর্কযুগে ইহাই ঘটিয়াছিল। কেহ দ্বিতীয় ধাতার ন্যায় "বেদান্ত–মাৰ্ত্তও" রচনা করিয়া—রবির পরিধি যেন ধাধিল নয়ন। অমনি প্রতিপক্ষ সেই স্বর্ষ্যের উপর প্রকাও এক মেঘ নিক্ষেপ করিলেন, অর্থাৎ 'হেন কালে কাল মেঘ উদিল আকাশে । অমনি বিপক্ষ পক্ষ প্রচও তর্ক-"প্রভঞ্জনের অবতারণা করিলেন। মেঘে ও পবনে তুমুল যুদ্ধ বাধিল বিমানচারী দেবগণ বিস্মিত নয়নে চাহিয়া রহিলেন । কোথাও বা আমাদের মানস-রসনার পরিতৃপ্তির জন্য প্রচুর ‘পগুন-খাদ্য বিরচিত হইল, কিন্তু মগুনের অভাবে তাহার শর্কর কর্করা পরিণত হইল। কেহ আমাদের নাসার পুলকিত করিবার আশয়ে 'বেদান্ত-পরিজাত বিকশিত করিলেন ; কিন্তু তাহা— "অকাল কুহমানীৰ ভয়ং সঞ্জনয়ন্তি না ।" কেহ শতদূষণী রচনা করিয়া মায়াবাদ খণ্ড খণ্ড করিবার উপক্রম করিলেন। প্রতিপক্ষ তৎক্ষণাং শতদূষণীখণ্ডন প্রচার করিলেন। কিন্তু দূষণকৰ্ত্ত নিৰ্ব্বাক হইবার লোক নহেন ; কারণ মৌন মুনির অলঙ্কার, তার্কিকের নহে। এইরূপে থওন মণ্ডনের সন্ধান প্রতিসন্ধানে তর্কস্থল কণ্টকিত হইয়া উঠিল। তখন প্রতিপক্ষ "বেদান্ত-ডিগুিম' নিনাদিত করিয়া বিবাদীকে সম্মুখ সমরে আহবান করিলেন। অমনি বিবাদী রণমূখে অগ্রসর হইয়া বাদীর প্রশস্ত গণ্ডে বিপুল দার্শনিক 'চপেটাঘাত করিয়া সংকুল যুদ্ধনীতি প্রদর্শন করিলেন। ফলে বিতণ্ডাক্ষেত্র ক্ষেত্ৰং ক্ষত্রপ্রধনপিশুনংএ পরিণত হইল এবং তার্কিকপুঙ্গবদিগের রক্তে রঞ্জিত হইয়া ‘রন্তিদেবস্ত কীৰ্ত্তিং'কে পরাজিত করিল। আমার ধারণা, যদি আমাদিগকে আর্য্য-সত্যের পুনরাবিষ্কার করিতে হয়, তবে আমাদের গৌতম বুদ্ধের ন্যায় আবার ‘বোধিদ্রুমতলে ধ্যানমগ্ন হইতে হইবে, যদি আমর তৃত্বমসি মহাবাকোর উপলব্ধি করিতে ইচ্ছা করি,