পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

y জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর শ্ৰী স্বর্ণকুমারী দেবী আমার পূজ্যপাদ দাদামহাশয় ৮ জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিসভায় সভাপতি হইয়া আজ কিছু বলিতে আমাকে অনুরোধ করা হইয়াছিল । এজন্য আমি আপনাদের নিকট কতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিড়েছি । কোনো প্রিয়জনকে তারাইবার পর কত কথাই বলিতে ইচ্ছা হয় ! ঘে-সকল সুখময় স্মৃতি এখন মনের মধ্যে সারাদিন উথলিন্ত আবেগে বহিতেছে, সেইসকল স্মৃতি বাঙ্গিরে প্রকাশ করিতে কত না আকুলত জন্মায়! আমার দাদামহাশয়ের গুণগান করিবার কথা অনেকষ্ট আছে, কিন্তু আমার শরীর অনুস্থ, এবং অবসাদ গ্রন্স বলিয়া আমি আমার বাসনাকে সংধভ করিঘ তাহfর সম্বন্ধে কেবল দু’একট। মাত্র কথা বলিয়া শেষ করিব । সাহিত্য-জগং তfহার নিকট কিরূপ ঋণী এপ্রবন্ধে তাঙ্ক বলা বাহুল্য-মাত্র । তিনি নিজে বেশ বড়-একজন লেখক ছিলেন । র্তাহার রচিত ‘পুরুবিক্রম’, ‘অশ্রীমতী’ প্রভৃতি নাটক ন্যাশানাল থিয়েটার প্রভৃতি পূৰ্ব্বকালীন নাট্যালয়ে বহুবার অভিনীত হইয়াছে । তাহার পর গিরীশ ঘোষ নাটক লিখিতে আরম্ভ করেন । নৃতনদাদ এরূপ গুণগ্রাঙ্গী ও অমায়িক-চিত্ত ছিলেন যে, গিরীশ ঘোষের খ্যাতিতে তিনি কিছুমাত্র ক্ষুণ্ণ হন নাই । প্রহসনরচনাতেও তিনি সিদ্ধ-হস্ত ছিলেন। তাই র “ধংকিঞ্চিৎ জলযোগ”, “দায়ে প’ড়ে দারপরিগ্রহ” প্রভৃতি প্রহসনরচনাগুলি নবীন পাঠকদের পড়িয়া দেখিতে অন্তরোধ করি। ঐসকল গ্রন্থে • হাস্যকৌতুক প্রচুর আছে, কিন্তু এরূপ স্বরুচি-সঙ্গত লেখা আধুনিক কোনো প্রহসনরচনাতে প্রায়ই দেখিতে পাওয়া যায় না ;–অন্ততঃ আমি দেখি নাই। এতদ্ব্যতীত ফরাসী, সংস্কৃত প্রভৃতি নান ভাষার গ্রন্থ অনুবাদ করিয়া তিনি বঙ্গসাহিত্যের যেরূপ পুষ্টিসাধন করিয়াছেন, এমন আর কেহই করেন নাই। কিন্তু তিনি কেবল সাহিত্যিকই ছিলেন না ; চিত্রবিদ্যা এবং সঙ্গীতবিদ্যাতেও তাহার অসাধারণ প্রতিভা ছিল । এই উভয় বিদ্যা তিনি বিনা-শিক্ষাতেই লাভ করিয়া ছিলেন। যাহারই সহিত তাঙ্গার আলাপ হইত, তাহারই প্রতিকুতি তিনি মতি অল্পায়াসে অঁাকিয়া রাথিতেন এবং যে-কোনো গায়ক গোলকধাঁধাযুক্ত ঘূর্ণ্যমান তানলয়ে গাহিয়া গেলেও, তিনি সঙ্গে-সঙ্গে যন্ত্রে ভাহা বাজাইয়া লইতে পারিতেন। প্রথম যখন কলিকাতায় হারমোনিয়াম আমদানি হয়, তখন আমাদের বাড়ী একটি বড় হাৰ্বমোনিয়াম্ আনা হইয়াছিল। নূতনদাদ সেই যন্ত্রটি প্রতিদিন প্রত্যুষে বাজাইতেন । আমি তখন অতি ছোটে ছিলাম, —মনে পড়ে, আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত্তন তাহার বাজ না শুনিবার জন্য ছুটিয়া যাইতাম। আমাদের জোড়াসাঙ্কোর বাড়ীতে তখন সঙ্গীতচর্চা যথেষ্ট-পরিমাণে হইত। তথনকার স্বপ্রসিদ্ধ গায়ক বিষ্ণু আমাদের বাড়ীতে গায়কতা করিতেন এবং দেশ বা বিদেশ হইতে যে-কোনো বড় গায়ক আসিলেক্ট এখানে অতিথিরূপে অভার্থিত ইষ্টতেন। সেই আবহাওয়ার মধ্যে থাকিয়৷ নূতনদাদার স্বাভাবিক সঙ্গীতক্ষমতা আরো বিকাশপ্রাপ্ত হয়। এই অব হাওয়ার মধ্যে লালিত-পালিত হইয়া স্নেহাস্পদ রবীন্দ্রনাথও এতবড় সঙ্গীতজ্ঞ হইয়া উঠিয়াছেন । তিনি বাল্যকালে কিছু দিন বিষ্ণুর নিকট গান শিক্ষা করিয়াছিলেন। নূতনদাদ। কিন্তু সেরূপভাবে কাহারও নিকট শিক্ষালাভ না করিয়া ও বিচক্ষণ গায়কের মতনই মুরজ্ঞ হইয়াছিলেন । রবীন্দ্রনাথের এবং আমার বহু গানে তিনি মুর বসাইয়া দিয়াছেন । তিনি কিরূপ গুণের আদর করিতে জানিতেন, এপ্রসঙ্গে তাহার একটি গল্প বলি । তাহার এক সামান্ত বাজার সরকারের বালিকা-স্ত্রী গান গাহিতে পারিত। কেমন করিয়া একথা উtহার কানে গিয়াছিল জানি না, কিন্তু ইহা শুনিবামাত্র তিনি সেই মেয়েটিকে কাছে