পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ অলখ-ঝেণরণ פאראס সে যা বলে সবাই তাতেই চটে যায় ; আমি যা বলি সবই আপনাদের কানে ঠাট্ট শোনায় " মৃধা বলিল, “সেটা মোটেই আপনার ঠিক ধারণা নয়। আমাদের এই দলের মধ্যে একমাত্র আপনিই ত ভাল ক’রে কথা বলতে পারেন। আমি ত না জানি চটাতে, না জানি হাসাতে, না জানি খুশী করতে ।” নিখিল বলিল, “তার চাইতেও ভাল হয়ত কিছু জানেন, সেট যে কি আপনার নিজের ধরবার ক্ষমতা নেই।” মৃধা বলিল, “আচ্ছা, অত ক'রে আর মানুষকে বাড়াবেন না । যেটা আমার যোগ্য নিন্দ সেটা মেনে নিলে কিছু অভদ্রতা হয় না।” নিখিল বলিল, “আমি হয় ঠাট্টা করি, নয় ভদ্রতা করি, এরকম একটা ধারণা আপনার কেন হয়েছে বলুন ত? এই দুটোর মাঝামাঝি সত্যি কথা বলা ব’লে যে একটা জিনিষ আছে, সেটা কি আমার মধ্যে একেবারেই খুঁজে পাওয়া যায় না ?” মৃধা চুপ করিয়াই রহিল, মনে করিয়াছিল বলে, “আমি সামান্ত মাতুষ, আমার সম্বন্ধে এরকম সত্য কথা বিশ্বাস করতে সাহস হয় না।” কিন্তু কথা আর বাড়াইয়া লাভ কি, মনে করিয়া সেইখানেই থামিয়া গেল । তাহার মন তখন ঘূরিতেছিল অন্ত চিন্তায় । আজ মিলির বিবাহ, কিছুদিন পরে তাহাদেরও ত পালা আসিবে। এমনই ঘটা করিয়া তাহার বিবাহ হইবে কি ? সেই বিবাহউৎসবে এমনই প্রত্যহ কি তপনকে দেখা যাইবে ? সুধা আপন মনেই হাসিল । কাহার সঙ্গে বিবাহ হইবে সে কথা না ভাবিয়া উৎসব-গৃহে প্রত্যহ তপন আসিবে কি না এইটা তাহার মাথায় ঢুকিল আগে ! সে পাগল । আপনার মনের কাছে আপনি অত্যন্ত সঙ্কুচিত হইয়া একবার যেন ভয়ে ভয়ে ভাবিল,—আচ্ছা, তপন বর হইলে কেমন হয় ? মনে পড়িল { গেলেন । দিন কয়েক আগে রাত্রে সে নিজের , "ांश श:, ছিল, কিন্তু বরের মুখটা কিছুতেই দেী হয় না । তাহার মুখটা মুসলমান বরের মত ঝালম ছিল। স্বধ সাহস করিয়া তুলিয়া দেখিতে প। ভূমি যদি তুলিয়া দেখিত তপন । `नाः। কিন্তু তাহা কি সস্তব ! তপন যে মস্ত বড়লোফে ছেলে । তাহার পিতামাত আত্মীয়স্বজন কেহ ত সুধাকে চেনেন না । স্বধার মত গরীবের কালো মেয়েকে অকস্মাৎ র্তাহার কেন বউ করিয়া লইয়া যাইবেন ? তাহাদের কাহার ও কল্পনায়ই ইহা আসিবে না। এই বিবাহ-উৎসবের আগে স্পষ্ট করিয়া তপনের সহিত বিবাহের কথা স্বধা কোন দিন ভাবে নাই । আজ তাহা ভাবিয়া দেখিতে মনটা ভয়ে ভাঙিয়া পড়িল । যদি তপনের আর কাহারও সঙ্গে বিবাহ হইয়া যায় । তবে তপন ত একেবারে পর হইয়া যাইবে । স্বধা কি তাহা সঙ্ক করিতে পারিৰে । চোখ বুজিয়া স্বধা এই চিন্তাটাকে মন হইতে তাড়াইতে চেষ্টা করিল । না, না, তপন বিবাহ করিবে না। সে এমনই করিয়া গরীব-দুঃখীর সেবা করিয়া দেশের হিতচিন্তা করিয়া দিন কাটাইবে । সপ্তাহ-অস্তে একবার তাহাদের বন্ধুসভায় দেখা যাইবে তাহার প্রসন্ন মুখের ধ্যানমগ্রভাব । স্বধা তাহাতেই খুশী থাকিবে । নিখিল বলিতেছে, “আপনি বড় কম কথা বলেন । আপনার সঙ্গে গল্প জমানো যায় না ।” স্বধা কাগজের পৃষ্ঠ হইতে মূখ তুলিয়া বলিল, “স্থ ।" মিলি বাহিরে গিয়াছিল জামার মাপ দিতে। ঘরে ফিরিয়া আসিয়া বলিল, “আমাকেও এক তাড়া খাম দাও, আমারও কিছু কাজ করা উচিত।” তিন জনেই নীরবে কলম চালাইতে লাগিল । ( ক্রমশ: )