পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

੧੨ਂ নূতন রাজত্বের নূতন লাইসেন্স লওয়ার দরুন কয় দিন বাজার এবং দোকানপাট বদ্ধ ছিল, সেগুলি খোলার পর ৫ই মার্চ সারা শহর পরিষ্কার করিবার ও সাজাইবার ঘটা পড়িয়া গেল । শুনিলাম পরদিন সকাল সাতটায় মহাগুরু দলাইলামার শোভাযাত্র বাহির হইবে। পরদিন শোভাযাত্র দেখিতে গিয়া দেখি পথের দুই ধারে ভিড় করিয়া লোক দাড়াইয়া আছে এবং কড়া পাহারাও বসিয়াছে। শোভাযাত্রায় সৰ্ব্বপ্রথমে ছত্রাকার লাল টুপি পরিয়া মন্ত্রীদের অমুচরবর্গ আসিল, তাহার পর আসিলেন মন্ত্রিগণ, তাহার পরে পরে চলিলেন চি-চুঙ ( ভিক্ষু-অফিসর ), কুট (গৃহস্থ-অফিসর ), নাগরিক বেশে সেনাপতি, সেনাপতির বেশে ছ-ক মন্ত্রী, দুই জন ফৌজী জেনারেল ( সূদে-দুপোন ), সৈনিক অফিসর বেশে সর্দার বাহাদুর লে-দন-লা এবং তাহার পর রেশমী পদায় ঘেরা পালকীতে মহাগুরু ( বলা বাহুল্য, অন্ত সকলেই প্রায় ঘোড়ায় সওয়ার ছিল ) এবং সঙ্গে নেপালী মোঙ্গল ও চৈনিক-বেশে বহু সৈন্যপামন্ত । 鬱 舉 譬秀 সিংহলে ফিরিবার আয়োজন করিতে হইল, পুথি পুস্তক প্রভৃতি কেনা চলিতেছিল কিন্তু পথে সৈনিক পাহারা তখনও ছিল এবং নেপালের সঙ্গে যুদ্ধের আশঙ্কাe সম্পূর্ণ দূর হয় নাই, সুতরাং প্রত্যাবৰ্ত্তনের সকল ব্যবস্থা ঠিক করা যাইতেছিল না। সেই জঙ্ক ৭ই মার্চ ডং-রী-fরনপোছের নিকট গিয় তাহাকে চারিটি বিষয় দলাইলামার নিকট নিবেদন করিতে অনুরোধ করিলাম, যথা—( ১ ) সমূ-য়ে যাইবার অনুমতি, (২) পোভলার যে-সকল পুস্তক মহাগুরুর অনুমতি ব্যতীত ছাপা হয় না সে সকল ছাপাইয়া দিতে অনুমতি, (৩) গতের-গির ছাপা একটি করিয়া সম্পূর্ণ স্বল্‌-ইন্ডার ও স্তন-ইগু্যর, ও (৪) ভারত-প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি ছাড়পত্র । তিনি বলিলেন, প্রথম দুইটি বিষয়ে আদেশ পাওয়া সহজ, তবে শেষের দুইটির সম্বন্ধে বিশেষ সন্দেহ আছে । এই সময় লাসায় তুষারপাত চলিতেছিল। সেখানে তুষারপাত বেশী হয় না, কিন্তু মাটির ছাদ, মুক্তরাং রোদ প্রখর হইবার পূর্বেই তুষাররাশি ছাদ হইতে সরাইতে হয়। ২৪ দিনের রাজত্বের মধ্যে ছাদের বরফ পথে ফেলিলে প্রবাসী o | ১6৪৪ জরিমানার ব্যবস্থা আছে ভরা লোকে তাহ উঠাষ্টয়া কোণে অলিগলিতে ফেলল। ২৫শে মার্ক, পুরাতন শাসন ধেদিন ফিরিদ্ধা আসিল সেই দিন, প্রায় ১৮ আঙুল পরিমাণ বরফ পড়িল । লোকে বলিল সৌভাগ্যের বিষয় ২৪ দিনের রাজত্ব নাই এবং পথে ঘাটে ছাদের বরফ শুপাকার করিয়া ফেলিয়া রাখিল । 鬚 蠱 兴 নববর্ষের সময় শাস্ত্রার্থ অর্থাৎ তর্কযুদ্ধ হইয় থাকে। ১০ই মার্চ জো-থঙ মন্দিরে শাস্ত্রার্থ দেখিতে গেলাম । মন্দিকু-প্রাঙ্গণে পণ্ডিতগণ শিষ্যমণ্ডলী লইয়; বসিয়াছিলেন, দুই জন বুদ্ধ উচ্চাসনে বসিয়া মধ্যস্থরূপে বিরাজ করিতেছিলেন। প্রশ্ন কর্তা নিজ আসন হইতে উঠিয়া ঐ দুই বুদ্ধকে বন্দনা করিয়া প্রশ্ন করিবার জন্ম অনুমতি লইল এবং পরে ধৰ্ম্মকীৰ্ত্তির প্রমাণ-বৰ্ত্তিক সম্বন্ধে প্রশ্ন করিতে লাগিল। প্রশ্ন করিবার ধরণ বিচিত্র ছিল । প্রশ্ন করিতে করিতে সে কখনও অগ্রে কখনও পশ্চাতে পদক্ষেপ করিয়া, প্রতি প্রশ্নের শেষে সজোরে হাতে হাত চাপাড়াইতে চিল এবং এক এক প্রশ্নমালা শেষ হইলে তাহার জপমালা লহয়; ধৰ্ম্মক হইতে বাণ মোচনের স্থায় নাট্যমুদ্রায়ু অঙ্গভঙ্গী করিতেছিল। তাহার স্ব-পক্ষের বিদ্যার্থী ও পণ্ডিত অতি প্রসন্নমুথে তাহার তর্কযুক্তি শুনিতেছিল, উত্তর-পক্ষীয় ছাত্রবর্গ বিদ্যার্থীদিগের বিচিত্র টুপি পরিয়া শাস্ত ও শুদ্ধ হষ্টয়া বসিয়াছিল । এক পক্ষের ছাত্রের তর্ক অবতারণা শেষ হইলে বিপক্ষের ছাত্রও মধ্যস্থকে বন্দন করিয়া তর্ক খগুন করিয়৷ পূৰ্ব্ব-পক্ষকে তর্কে আক্রমণ আরম্ভ করিল। আক্রমণের সময় ঠিক পূৰ্ব্ববং যুদ্ধের অল্পকরণে পদক্ষেপ, বাণক্ষেপ ইত্যাদি চলিল। এইরূপ তর্কের মধ্যে নাট্যাভিনয় কোথা হইতে আসিল জিজ্ঞাস করায় এক বন্ধু বলিলেন, “ইহা নালন্দা বিক্রমশিলা হইতে আসিয়াছে, সুতরাং ইহার জন্য দায়ী তোমর।” আমি মানিতে রাজী হইলাম না, কেনন, ইহা সত্য হইলে ভারডে কাশী ও মিথিলার পণ্ডিতমণ্ডলীর মধ্যে এইরূপ প্রথার কোনরূপ চিহ্নাবশেষ নিশ্চয়ই পাওয়া ধাইত । ১২ই মার্চ লাসার পঞ্চক্রোণী আরম্ভ হইলে আমিও গেলাম। এই পঞ্চক্রোণীতে নগরের অতিরিক্ত পোতল