পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা । প্রচেষ্টার স্বচ্ছন্দ গতি প্রতিহত হইল তাহাদেরই দ্বারা, যাহাদের শুভার্থে এই সুদূর পল্লীগ্রামে অত অল্প বেতনে অত অধিক বিষয়ে শিক্ষাদানে আমি স্বীকৃত হইয়াছিলাম । বিদ্রোহী-বুন্দের প্রায় সকলেরই নাম ক্রমে স্মৃতির পিচ্ছিল পথ হইতে অপস্থত হইয়াছে, বাকি আছে মাত্র বিশেষ কয়েকটির । এই কয়েকটির মধ্যে আজ সকলের চেয়ে মনে পড়ে ছুটিকে—"নোলক-পাচু” ও “গোদাবরী’ । বৎসরের পর বৎসর নবকুমার ক্রোড়ে ধারণ করিয়াও কোনটিকে দীর্ঘকাল বক্ষে ধারণ করিতে অসমর্থ হইয় মৃতবৎস! জননী ‘পচু ঠাকুরের তৃপ্তিসাধন-মানসে তাহার নবজাত শিশুর নাম রাখিয়াছিলেন ‘পঞ্চানন, এবং যমকে ভুলাইয়া নিবৃত্ত করিবার চেষ্টায় তাহার কচি নাকে নোলক দুলাইয়৷ দিয়াছিলেন। মাতৃ দত্ত নাম ‘পঞ্চাননে'র সহজ অপভ্রংশ পাচু’র সহিত র্তাহারই উপহৃত নোলকটিকেও চিরস্মরণীয় করিয়া ছাত্রসংসদে তাহার নূতন নামকরণ হইয়াছিল— নোলক-পাচু । দ্বিতীয় বালকটির অভিনব নামকরণের ইতিহাস সঠিক মনে নাই, তবে ‘গোদাবরী নামটি পৈতৃক মহে, স্বেfপার্জিত বা সতীর্থ-প্রদত্ত , শরীরের অপর অঙ্গের সহিত পদযুগলের অসামঞ্জস্তেই হয়ত সেটির উৎপত্তি । নামকরণের ইতিহাস যাহাই হউক, এই 'গোদাবরীই ছিল পালের গোদ। প্রতি শ্রেণীতেই বৎসরাধিক অবস্থানের ফুলে বিন্য।-বুদ্ধির বৃদ্ধি তাহার যতই হউক, অসম্ভব বুদ্ধি পাইয়াছিল তাহার বয়স এবং দুঃসাহস । এছুটির কল্যাণে দুবিনীতদের দলপতি সে সহজেই হইaাছিল । সকল প্রকার অশিষ্ট আচরণের মূলে ছিল এই 'গোদাবরী ও তাহার স্বপটু শিষ্য নোলক পাচু'। আমার কৰ্ম্মলাভের কয়েক দিনের মধ্যেই ইহার নানা উৎপাত করিয়া আমাকে নিজেদের অস্তিত্ব সম্বন্ধে সচেতন করিয়া তুলিল এবং স্বম্পষ্ট বুঝাইয়া দিল যে, বিনাযুদ্ধে আমার বগুড স্বীকার করিতে তাহার একান্ত অনিচ্ছুক। তাহার। দুজনেই তখন ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্ৰ । অভদ্র উপগ্রব করিয়। অধ্যাপনার বিঘ্ন ঘটাইয় প্রত্যহ ত{গর শাস্তি ভঙ্গের চেষ্টা পাইত। একদিন ডাহাদের শ্রেণী:স্ত বাঙ্গল হইতে ইংরেজীর তর্জমা শিখাইতেছিলাম; “নোলক-প চুকে জিজ্ঞাসা করিলাম,—সে খায় سيا مجسدية جة শাসন ఫిసి কি এর ইংরেজী কি ? ”সে কোনও উত্তর দিবার পূৰ্ব্বেই ‘গোদাবরী’ তাহাকে শিখাইয়া দিল, “এই বলু না, সে খায় ঘাস ।” ছাত্র-শিক্ষকের “এই সপ্তাহব্যাপী অশোভন দ্বন্দ্বের একটা চরম নিষ্পত্তি করিতে সেদিন পূর্বাহ্লেই স্থির করিয়াছিলাম। সুতরাং দলপতিকে দলিত করিবার মানসে পচুর পরিবর্ভে তাহাকেই বলিলাম, “বেশ তুমিই বল " সে বলিল, “ওকেত জিজ্ঞেস করেছেন, ও বলুক।” আমি বলিলাম, “এতক্ষণ ওকে জিজ্ঞাসা করছিলাম, কিন্তু এখন তোমাকে বলতে বলছি, তুমিই বল ।” তাছাতে সে বীরদপে বলিল, “সে কে এবং খায় কি তা আমি জানব কি করে ? হয়ত ঘাস খায় ”—তাহার এই উত্তর সমাপ্তির পূৰ্ব্বেই তার পৃষ্ঠে মস্তকে এবং সৰ্ব্বাঙ্গেই সরবে ও সবলে মুষ্টি প্রয়োগ আরম্ভ হইল । কোনও ছাত্রকে শারীরিক শাস্তি দিবার নিষেধবিধি বা তাহা ভঙ্গের কুফল তখন আদে স্মরণ ছিল না । বাস্তবিকই কয়েক দিবসের বিরক্তি ও সেদিনের উত্তেজনায় আমি প্রায় জ্ঞানশূন্ত হইয়: সকল কথাই বিশ্বত হইয়াছিলাম ; মনে ছিল কেবল মাত্র ‘গোদাবরী’কে এবং সেই প্রাচীন •ạfs sĩ#I “Spare thc rod” #<Itf# ! s# #f#** উপদেশবাণীর বিরাম-বিহীন অনুসরণ কতক্ষণ ব্যাপী হইয়াছিল মনে নাই, কেবল মনে পড়ে আমি সচেতন হইয়াছিলাম ‘গোদাবরী’র সকরুণ আৰ্ত্তনাদে । এই রূপে অতর্কিতে আক্রান্ত হইয়া এবং কমা-ফুলষ্টপ হীন অনর্গল মুষ্টি-বৃষ্টিতে চাপ পড়িয়া প্রথমতঃ সে হতভম্ব প্রায় হইয়া গিয়াছিল। পরে নিজের অবস্থা ভাল করিয়া বুঝিয়া বিকৃত স্বরে গোঙাইতে লাগিল, “আর কখ খনো করবো ন। সার, এবারট। মাপ করুন।” তাহার এই কাত্তর সন্ধিপ্রার্থনায় নিবৃত্ত হইয়া দেখিলাম, অন্যাস্ত ছাত্রের, মায় "নোলক পাচু পৰ্যন্ত আতঙ্কে ড্রস্ত হইয়া উঠিয়াছে। তাহাদের ভয়-মলিন মুখ ও স্পন্দন-বিমুগ্ধ শরীর দেখিয়। ‘প্ৰহারেণ ধনঞ্জয়’ এর তাৎপৰ্য্য ও সার্থকতা হৃদয়ঙ্গম করিতে আমার কিছুমাত্র বিলম্ব হইল না। সেই দিন হইতে শাস্তিভঙ্গের কোনও চেষ্টা আর লক্ষিত হয় নাই এবং স্বয়ং ‘গোদাবরী’ বলিয়াছিল, “এটা ক্ষ্যাপা মাষ্টার, বকুনির ধার ধারে না, কোন দিন সত্যিই মেরে ফেলবে, ধে গোয়ার ৱে