পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশীৰত বস্তুকে নিত্য ও শাশ্বত বলিয়া মনে করেন (মজঝিম ১৩২৭-৩২৮ ; সংযুক্ত ১১৪২ ইত্যাদি ) । একমাত্র মুক্ত পুরুষই অবিদ্যাকে অতিক্রম করিয়াছেন। পুরুষ কে ? তাহা হইলে মুক্ত পুরুষও আছেন, অবিদ্যাগ্রস্ত পুরুষও আছে। বদ্ধ পুরুষও পুরুষ এবং মুক্ত পুরুষও পুরুষ । এখানে প্রশ্ন তবে পুরুষ কে ? বুদ্ধের সমসাময়িক ধৰ্ম্মাচাৰ্য্যগণ বলিতেন আত্মাই পুরুষ। এবিষয়ে বহু মতভেদ ছিল ৷ দেহ, বেদনা, সংজ্ঞ, সংস্কার প্রভৃতিকে বন্থ আচার্ধ্য আত্ম বলিয়া নির্দেশ করিয়া গিয়াছেন। গোতম দেহাদিকে আত্মা বলিয়া গ্রহণ করেন নাই । সংকায়-দৃষ্টি সে-সময়ের একটি প্রচলিত মতকে গৌতম “সক্কায় ট্িিঠ” (-সংকায়-দৃষ্টি) নাম দিয়াছেন। সঙ্কায় =সংকায় 'সং অর্থে অস্তিত্ববান। ‘সন্ধায় অর্থাৎ দেহাদি সং । বৌদ্ধধৰ্ম্মে কায় বলিতে সাধারণতঃ রূপ ( অর্থাৎ দেহ ), বেদন (ঐন্দ্ৰিয়ক উপরাগ, মুখ দুঃখ বেদন, Sensation), সংজ্ঞা, সংস্কার ও বিজ্ঞান এই কয়েকটি বুঝায়। দেহ বিষয়ে সংকায়-দৃষ্টি এই—(১) দেহই আত্ম, (২) আত্ম৷ দেহবান, (৩) আত্মাতে দেহ এবং (৪) দেহে আত্মা ৷ দেহ বিষয়ে এই চারি প্রকার দৃষ্টি। বেদন, সংজ্ঞ, সংস্কার ও বিজ্ঞান এই চারিটির প্রত্যেকটির বিষয়েই ঐপ্রকার দৃষ্টি, যথা (১) বিজ্ঞানই আত্ম, (২) আত্মা বিজ্ঞানবান, (৩) আত্মাতে বিজ্ঞান এবং (৪) বিজ্ঞান আত্মা । রূপাদি পঞ্চ স্কন্ধ ; প্রত্যেকটিতে চারি প্রকার দৃষ্টি । স্বতরাং বিংশতি প্রকার সংকায়-দৃষ্টি হইতে পারে (পটিসম্ভিদ মগগ, ১১৪৩-১৪১)। গোতম এই মতকে সম্পূর্ণ ভাবে পরিত্যাগ করিয়াছেন (মজঝিম ৩১৭ ১৮ ; সংযুক্ত ১৫৮-১৫৯, ইত্যাদি ) । তাহার মতে দেহাদির সহিত আত্মার মৌলিক কোন সম্বন্ধ নাই । আত্মা কি নহে বুদ্ধত্ব লাভ করিবার পরই গোতম পাঁচ জন ভিক্ষুকে এবিষয়ে যে উপদেশ দিয়াছিলেন তাহা এই – প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৪৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড "হে ভিক্ষুগণ ! দেহ আত্ম নহে। দেহ যদি আত্ম। হইত, তাহা হইলে দেহ ব্যাধিগ্রস্ত হইত না । (ক) এবং তাহা হইলে দেহ বিষয়ে বলিতে পারিতাম ‘আমার দেহ এই প্রকার হউক, আমার দেহ এপ্রকার না হউক। (খ) যেহেতু দেহ আত্মা নহে, সেইজন্য দেহ ব্যাধিগ্রস্ত হয় এবং সেইজন্য দেহ বিষয়ে বলিতে পারি না যে ‘দেহ এই প্রকার হউক, বা এই প্রকার না হউক ।” ইহার পরে গৌতম বেদন (= স্থখ দুঃখাদি বেদনা ), সংজ্ঞ, সংস্কার ও বিজ্ঞান বিষয়ে উক্ত প্রকার ভাষা ব্যবহার করিয়া, উক্ত যুক্তি প্রয়োগ করিয়া উক্ত প্রকার সিদ্ধান্তই করিয়াছিলেন । ইহার পরে তিনি বলিলেন, “হে ভিক্ষুগণ! তোমরা কি মনে কর-দেহ নিত্য না অনিত্য ?” “হে ভদন্ত । অনিত্য ।” “যাহা অনিত্য, তাহা সুখ না দুঃখ ?” “হে ভদস্ত ! দুঃখ ।” “যাহা অনিত্য, দুঃখ, বিপরিণামধৰ্ম্ম, তাহার বিষয়ে কি এই প্রকার বলা যায় যে, ইহা আমার', 'আমি ইহা", ইহা আমার আত্মা ?” (গ)। “হে ভদস্ত ? না ।” ইহার পরে বেদন, সংজ্ঞা সংস্কার এবং বিজ্ঞান-বিষয়েও উক্ত যুক্তি অবলম্বন করিয়া উক্ত ভাষাতেই সিদ্ধাস্ত করা হইয়াছিল যে, এ সমুদায় আমার নহে, এ সমুদায় আমি নহি এবং এ সমুদায় আমার আত্মা নহে। ইহার পরে তিনি আরও বলিলেন—এ সমুদায় অতীতই হউক বা অনাগতই হউক বা বৰ্ত্তমানই হউক, অধ্যাত্মই (অর্থাৎ অস্তঃস্থ) হউক বা বহিঃস্থই হউক, বৃহৎই হউক বা ক্ষুদ্রই হউক, হীনই হউক বা শ্রেষ্টই হউক, দুরন্থই হউক বা নিকটস্থই হউক—এসমুদ্ৰায়ের কোনটির বিষয়েই বলিতে পারি না-ইহা অামার’, ‘ইহা আমি", ইহা আমার আত্মা’ । বিনয়পিটক, মহাবগগ ১৬৩৮–৪৫ ; সংযুক্তনিকায় ७७१, ७v ऐं९ ग९) । গোতম এস্থলে বলিলেন, দেহাদি পঞ্চস্কন্ধ আত্মা मएई.।